দেশের বৃহত্তম আয়কর হানা! বিএমডব্লু খুলতেই বেরল ১৬৩ কোটির নগদ, ১০০ কেজির সোনা
সোমবার তামিলনাড়ুর একটি সড়ক নির্মাণ সংস্থার বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৬০ কোটি টাকার নগদ এবং প্রায় ১০০ কেজি সোনার বাঁট বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর বিভাগ।
পার্কিং লটে রাখা গাড়ি খুলতেই বেরল কোটি কোটি নগদ টাকা এবং সোনার বাঁট। এভাবে তামিলনাড়ুর এসপিকে ও কো এক্সপ্রেসওয়ে প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার এমডি-র কাছ থেকে মোট ১৬৩ কোটি টাকা এবং ১০০ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে আয়কর বিভাগ। এর আগে কো এক্সপ্রেসওয়ে মুখ্যমন্ত্রী পলানিস্বামীর বেনামী সংস্থা বলে অভিযোগ করেছিল ডিএমকে।
এই বিপুল পরিমাণ হিসাব বহির্ভূত অর্থ ও সোনাদানা লুকিয়ে রাখার জন্য এক অভিনব কায়দা বের করেছিলেন এসপিকে ও কো এক্সপ্রেসওয়ে প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার এমডি নাগারাজন সেয়াদুরাই। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে। সোমবার সেই অভিযোগের তদন্তেই তাঁর বাড়ি ও আরও কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায় আয়কর বিভাগ।
তাঁর বাড়ি থেকে কিন্তু মাত্র ২৪ লক্ষ টাকাই মিলেছিল। এরপর আয়কর বিভাগের কর্তারা জানতে পারেন নাগারাজন সম্প্রতি তাঁর বাড়ির গ্যারাজে কাজ চলছে এই ছুতোয় বেশ কয়েকটি গাড়ি সংস্থার বিভিন্ন কর্মী ও তাঁর পরিচিতদের বাড়িতে রেখেছেন। এই তথ্য পাওয়ার পরই সেইসব বাড়িতে হানা দেয় আয়কর বিভাগের তদন্তকারীরা।
এরকমই এক ব্যাক্তির সালেমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর বাড়ির গ্যারাজে নাগরাজনের একটি বিএমডব্লু গাড়ি রাখা আছে। কিন্তু ওই ব্যক্তির কাছে সেই গাড়ির চাবি ছিল না। ডেকে আনা হয় গাড়ির চালককে। চালক গাড়িটি খুলতেই তার ভেতর থেকে পাওয়া যায় একটি বিশাল ব্যাগ। তার মধ্যে ছিল ২০ কোটি নগদ টাকা।
সেই টাকা উদ্ধারের পরই বাকি নাগরাজনের বাকি গাড়িগুলিতেও তল্লাশি চালানো হয়। এক এক করে বের হয় বিপুল নগদ ও সোনার বাঁট। আয়কর বিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, 'মোট ১০ টি ঝায়গায় হানা দিয়ে মোচ ১৬৩ কোটি টাকার নগদ ও ১০০ কেজির সোনার বাঁট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া বিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি দলিলপত্র, ডায়েরি, নথি এবং হার্ড ডিস্ক আটক করা হয়।'
Gold biscuits weighing around 100 kg and Rs 163 crore in cash that is suspected to be unaccounted, seized by the Income Tax department from 20 locations of SPK company in Madurai, Aruppukkottai, Vellore and Chennai. Raids started y'day, still underway at few locations. #TamilNadu pic.twitter.com/LY5fgyS9TM
— ANI (@ANI) July 17, 2018
তবে এখানেই ওই রোড কন্ট্রাক্টরের হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তির শেষ নয় বলে মনে করছে আয়কর বিভাগ। আরও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার লক্ষে আগামী কয়েকদিন তল্লাশি চলবে বলে জানা গিয়েছে। আয়কর কর্তারা আশা করছেন তাতে আরও এরকম সম্পত্তি মিলবে।
ভারতে এর আগে আর কখনও এত বেশি পরিমাণে কালো টাকা হিসেবের বাইরে থাকা সোনাদানা বাজেয়াপ্ত হয়েছে কিনা মনে করতে পারছে না আয়কর বিভাগ। বিভাগের কর্তাদের মনে পড়ছে ২০১৬ সালে নোট বাতিলের পর চেন্নাইয়ের এক খনি মালিকের কাছ থেকে মিলেছিল ১১০ কোটির কালো টাকা। সেটিই এতদিন সর্বোচ্ছ ছিল। নোট বাতিলের সময় সরকারের দাবি ছিল এতে করে কালো টাকার কারবার বন্ধ হবে। এদিনের আয়কর হানায় কিন্তু সেই দাবি ভুল প্রমাণিত হল।
তবে ভেতরের খবর এই ঘটনায় কেঁপে গিয়েছে এআইএডিএমকে। নাগরাজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে অনেক এআইএডিএমকে নেতারই। বিএমডব্লু গাড়িটিও মিলেছে এই দলেরই নেতার আত্মীয়ের বাড়ি থেকেই। ঘটনার লাভের গুড় ঘরে তুলতে অবশ্য আসরে নেমে পড়েছে বিরোধী ডিএমকে। নাগরাজনের কেঁচো খুড়তে গিয়ে কেউটে বেড়িয়ে আসবে, আশা তাদের।