মিলছে না হিসেব, কোভিডে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি বেঙ্গালুরুতে
কোভিডে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি বেঙ্গালুরুতে
১ মার্চ থেকে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে বেঙ্গালুরুতে কোভিড–সংক্রান্ত মৃত্যু হয়েছে ১,৪২২টি, জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে অন্য কথা বলছে বেঙ্গালুরুর শ্মশানগুলি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম শহরের ১২টি শ্মশান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে যে ওই একই সময়ের মধ্যে কোভিড বিধি মেনে ৩,১০৪টি দেহ দাহ করা হয়েছে। এর অর্থ সরকারের দেওয়া তথ্যের চেয়েও দ্বিগুণ দেহ শ্মশানে এসেছে।
কুম্ভের কারণেই বাঁধ ভাঙা করোনা সংক্রমণ, উত্তরাখণ্ডে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বাড়ল ১৮০০ শতাংশ
অধিকাংশ কোভিড দেহ
এই সংখ্যাটা শুধুমাত্র বড় বড় শ্মশানগুলি থেকে প্রাপ্ত। বিবিএমপির আওতায় থাকা ছোট ছোট শ্মশান, খ্রীষ্টান ও মুসলিমদের কবরস্থান থেকে এখনই কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে কবরস্থানের কর্মীরা এটা জানিয়েছেন যে অধিকাংশ কোভিড-১৯ আক্রান্তদের দেহ নিয়ে আসা হয়েছে কারণ সংক্রমিত দেহগুলিকে গভীর গর্ত করে সমাধিস্থ করা বাধ্যতামূলক। এইজন্য, কোভিড-সন্দেহে মৃতদেহের ১০-১২ শতাংশ (৩১০-৪৬৫) পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা করলেও, রিপোর্ট এবং বাস্তবিক সংখ্যার মধ্যে ১০০ শতাংশের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবেশী জেলার দেহ দাহ হচ্ছে
বিবিএমপি প্রধান গৌরব গুপ্তা বলেন, 'আমার কাছে সঠিক পার্থক্যের সংখ্যাটা নেই ঠিকই, তবে আমরা জানি তফাৎ রয়েছে। এই বিষয়টি এতটাই সংবেদশীল যে প্রতিবেশী জেলা থেকে আসা দেহগুলিকে আমরা এখানকার শ্মশানের দেহের সঙ্গে যোগ করতে পারি না।' শহরের শ্মশানগুলি অন্য জেলার দেহগুলিরও শেষকৃত্য করছে।
শ্মশানের ও সরকারের সংখ্যার মধ্যে অন্তর
বিবিএমপির যুগ্ম কমিশনার সরফরাজ খান এ প্রসঙ্গে বলেন, 'মৃতদের রেজিস্ট্রার খতিয়ে দেখেছি এবং রেজিস্ট্রারে থাকা সংখ্যার সঙ্গে শ্মশানে আসা মৃতদেহের সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যদিও শ্মশানগুলি অন্য প্রতিবেশী জেলা থেকে আসা দেহগুলির দাহকাজ করছে। শুধু তাই নয়, অনেকেরই কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে, কিন্তু সিটি স্ক্যানে কোভিডের মতো উপসর্গ রয়েছে। তাঁদের এই রেজিস্ট্রারে যুক্ত করা হয়নি। আর তার জন্যই এই তফাৎ দেখা গিয়েছে।'
জানা গিয়েছে, শহরের সবচেয়ে বড় শ্মশান সুমনহালি শ্মশানে সবচেয়ে বেশি দাহকার্য হয়ে থাকে। এখানে ৫৭১টি দেহ পোড়ানো হয়েছে। এরপরই রয়েছে কেঙ্গেরি (৫০২)। অন্যদিকে তিনটে প্রতিবেশী জেলায় কোভিড মৃত্যু বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে কোলার (২৮), চিক্কাবল্লাপুর (১৪) এবং বেঙ্গালুরু গ্রামীণ (৫২)-এ অধিকাংশ মারা গিয়েছে। মোট ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই তিন জেলায় গত ৫৭দিনে। এই সংখ্যাগুলিকে যোগ করলেও রিপোর্ট না হওয়া মৃতের সংখ্যা প্রচুর।
আরটি–পিসিআর ও সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট পৃথক
আম্বেদকর দলিত সংঘর্ষ সমিতির রাজ্য সম্পাদক এ সুরেশ, যিনি শ্মশানের কর্মীদের প্রতিনিধি, তিনি বলেন, 'আমরা মার্চের শেষের দিকে এই সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম কিন্তু অতিরিক্ত কোনও বন্দোবস্ত করা হয়নি। এখন বিবিএমপি তা করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে কিন্তু এখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে।' বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম সমিতির সভাপতি ডাঃ এইচএম প্রসন্ন বলেন, 'দু'সপ্তাহ যাবৎ প্রায় ৩০ শতাংশের আরটি-পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও, সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ছে কোভিডের মতো অবনতি ফুসফুসে। সরকার এই সব রোগীদের কোভিড সংরক্ষণে ভর্তি করার অনুমতি দিচ্ছে না।'