গত বছরের তুলনায় দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা, আগামী চার সপ্তাহ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিল সরকার
গত বছরের তুলনায় দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা, আগামী চার সপ্তাহ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিল সরকার
দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভের সংক্রমণের তীব্রতা এতটাই যে তা গত বছরের বাইরাসের তুলনায় দ্রুত ছড়াবে এবং আগামী ৪ সপ্তাহের পরিস্থিতি গুরুতর বলেই মঙ্গলবার জানিয়েছে কেন্দ্র। এছাড়াও এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জনগণের যোগাদানের ওপরও জোর দিয়েছে কেন্দ্র।
করোনা বিধি মানতে হবে
সাংবাদিক সম্মেলনে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডাঃ ভিকে পল জানিয়েছেন যে করোনা ভাইরাসের তীব্র বৃদ্ধির সঙ্গে দেশে মহামারির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে এবং জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনও এই ভাইরাসে সংক্রমিত। তবে মহামারির সঙ্গে লড়াই করার উপাদানগুলি একই রয়েছে। কোভিড-যথাযথ আচরণবিধি, কনটেইনমেন্ট ব্যবস্থা, করোনা টেস্টকে আরও দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে, মেডিক্যাল পরিকাঠামো পরিবর্তন এবং তীব্রভাবে টিকাকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ডাঃ পল দেশের মানুষকে স্মরণ করিয়ে জানিয়েছেন যে মাস্ক পরা, ভিড় থেকে দূরে থাকা এবং সরকারের নির্দেশানুসারে চলা এ ধরনের কোভিড আচরণবিধি মানতে হবে।
দেশে করোনার ঊর্ধ্বগতি
ভিকে পল বলেন, 'মহামারির তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা গত বছরের তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কিছু কিছু রাজ্যে পরিস্থিতি খুবই খারাপ অন্য রাজ্যের তুলনায় তবে করোনা কেসের ঊর্ধ্বগতি গোটা দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।' তিনি আরও বলেন, 'দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের যোগদান গুরুত্বপূর্ণ। আগামী চার সপ্তাহ খুব কঠিন হতে চলেছে। গোটা দেশকে একত্রিত হতে হবে এবং এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।'
মৃতের সংখ্যা অনেক কম
নীতি আয়োগের সদস্য জানান যে করোনা ভাইরাসের কেসগুলি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। তিনি এও বলেন, 'তবে এখনও বলা যায় যে জনসংখ্যার আকার অনুযায়ী প্রতি দশ লক্ষে মৃতের সংখ্যা অনেক কম রয়েছে এবং আমরা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করছি।' দেশে সম্প্রতি করোনা কেস বৃদ্ধির কারণ হল সরকার টেস্টিং, ট্র্যাকিং ও সনাক্ত করার কাজ কমিয়ে দিয়েছে এবং কোভিড-যথাযথ আচরণবিধি মেনে চলছে না দেশবাসী এবং বড় বড় জমায়েতের কারণেই দেশ এ বছরও করোনার কবল থেকে বেরোতে পারেনি।
উদ্বেগ বাড়িয়েছে তিন রাজ্য
ভারতের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছিলেন যে উচ্চ করোনা কেসগুলির ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষে থাকা ১০টি জেলার মধ্যে ছত্তিশগড়ের দুর্গ, মহারাষ্ট্রের ৭টি জেলা ও কর্নাটকের একটি জেলা রয়েছে। তিনি এও জানিয়েছেন যে তালিকায় নাম রয়েছে দিল্লিরও, যাকে জেলা হিসাবেই গণ্য করা হয়েছে। দশটি উচ্চ নতুন করোনা কেস অধ্যুষিত জেলাগুলি হল পুনে, মুম্বই, থানে, নাগপুর, নাসিক, বেঙ্গালুরু শহর, ঔরঙ্গাবাদ, আহমেদনগর, দিল্লি ও দুর্গ। ভূষণ এও জানিয়েছেন যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়।
প্রতি দশ লক্ষে ভারতের করোনা কেস
সোমবারই দেশে দৈনিক নতুন করোনা কেস এক লক্ষের বেশি সনাক্ত হয়, যা আমেরিকাকে অতিক্রম করেছে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন যে দেশের কোভিড-১৯ কেস প্রতি দশ লক্ষে ভারত এখনও অনেক নীচে রয়েছে। প্রতি দশ লক্ষে ভারতে ৯,১৯২টি কেস ধরা পড়ে, যেখানে আমেরিকায় প্রতি দশ লক্ষে কেস সংখ্যা ৯১,৭৫৭, ফ্রান্সে ৭১,৭১৮ ও ব্রিটেনে ৬৪,২১৬-তে দাঁড়িয়ে রয়েছে।