করোনা ভাইরাসের প্রভাব, বিদেশ ভ্রমণ করতে অনিহা, বুকিং বাতিল পর্যটকদের
করোনা ভাইরাসের প্রভাব, বিদেশ ভ্রমণ করতে অনিহা, বুকিং বাতিল পর্যটকদের
সামনেই লম্বা গরমের ছুটি। আর এই ছুটিতে অনেক ভারতীয়দেরই পছন্দ বিদেশের কোনও জায়গা। কিন্তু করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে এবার তা আর হচ্ছে না। অধিকাংশ ট্রাভেল সাইট জানিয়েছে যে আগে থেকে বুকিং করে রাখার প্রবণতা ২০–২৫ শতাংশ কমে গিয়েছে।
করোনার প্রভাব প্রাক বুকিংয়ের ওপর
যাত্রা ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাবিনা চোপড়া জানিয়েছেন যে এত তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে কোনও পূর্বাভাস দেওয়া না গেলেও, সংস্থা আঁচ করে নিয়েছে যে ভবিষ্যত বুকিং ২০-২৫ শতাংশ কম হবে। যাত্রা ডট কমের পাশাপাশি ইজ মাই ট্রিপ ও মেক মাই ট্রিপও জানিয়েছে যে করোনা ভাইরাস প্রকোপ যে দেশগুলিতে রয়েছে তার প্রভাব পড়েছে এবং অনেকেই পুরো ট্রিপ বাতিল করে দিয়েছেন। চিন এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে। সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিপ বাতিল হচ্ছে, অনেকেই করোনা ভাইরাসের জেরে এই সব জায়গায় যেতে চাইছেন না। এফসিএম ট্রাভেল সলুউশন জানিয়েছেন যে পর্যটকরা তাঁদের সফরের পরিকল্পনা গ্রীষ্মের প্রথমদিকে করার জন্য স্থগিত করে রেখেছে। সাধারণত এই মরশুমেই প্রাক বুকিং শুরু হয়ে যায়। এফসিএম ট্রাভেল সলুউশনের ব্র্যান্ড লিডার আনন্দ মেনন বলেন, ‘ভারত থেকে চিনে যাওয়ার জন্য অবসর সময়ের পর্যটকদের ক্ষেত্রে ১২-১৩ শতাংশ ও কর্পোরেট পর্যটকদের ক্ষেত্রে ১০-১১ শতাংশ বুকিং কমে গিয়েছে।' বাণিজ্য ক্ষেত্রে পর্যটনের ওপর প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছে মেক মাই ট্রিপ।
৬.৫৭ শতাংশ সফর বাতিল করেছে বা করবে
এরই মধ্যে ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এক নতুন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে করোনা ভাইরাসের পর্যটনের ওপর কি প্রভাব ফেলছে তা দেখার জন্য দশ হাজার জন মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়। দেখা গিয়েছে যে ৬.৫৭ শতাংশ মানুষ তাদের সফরের পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছে বা বাতিল করবে। ইজ মাই ট্রিপ জানিয়েছে যে বিমানের টিকিট বাতিলের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে এ ক'দিনে। ভ্রমণকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলিতে নতুন করে বুকিং করার বিষয়ে সতর্ক হয়ে গিয়েছে এবং এই গন্তব্যগুলির বিমান ভাড়াও ২০-৩০ শতাংশ কমেছে। ভ্রমণ ও হোটেল সফটওয়্যার সংস্থা রেটগিরি জানিয়েছে যে করোনা ভাইরাসের প্রফাব পড়েছে হোটেল বুকিংয়েও। প্রতিদিন ২১ শতাংশ করে কমছে হোটেল বুকিং।
আগ্রহ বাড়ছে দেশীয় ভ্রমণে
তবে এর অন্য পিঠও রয়েছে। একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি দেশীয় ভ্রমণের বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে যেতে ইচ্ছুক পর্যটকরা। ট্রাভেল সাইটে প্রায়ই ভ্রমণ পিপাসুরা আন্দামান ও নিকোবর, গোয়া, উজ্জ্বয়ন ও উত্তর-পূর্ব ভারত সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে। থমাস কুকের পক্ষ থেকে রাজীব কালে বলেন, ‘সম্প্রতি যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ভারতের বিভিন্ন জায়গার ওপর মনোনিবেশ করতে শুরু করেছে পর্যটকরা। দেশীয় পর্যটনের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ প্রাক বুকিংয়ের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।' ইজ মাই ট্রিপের মতে দেশীয় গন্তব্য বিশেষ করে অফবিট পাহাড়ি জায়গায় যেতে চাইছেন পর্যটকরা। যে কারণে হোটেল ও বাস বুকিং বেড়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে, ভ্রমণকারীরা স্বল্প-দূরত্বের গন্তব্যগুলির দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন যা বর্তমান পরিস্থিতি দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত নয়।
মেক মাই ট্রিপ, ইজ মাই ট্রিপ, যাত্রা ও এসওটিসি ট্রাভেল জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক গ্রীষ্মকালীন সফরের জন্য পর্যটকদের প্রথম পছন্দ শ্রীলঙ্কা, ব্রিটেন ও ভুটান। বিকল্প আন্তর্জাতির গন্তব্য হিসাবে এ বছর পর্যটকরা পছন্দ করছেন ওমান, মালদ্বীপ, মরিশাস। এর পাশাপাশি কেনিয়া, ইজিপ্ট, জর্ডন, আজেরবাইজান, কাজাখাস্তান, উজবেকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিটেনের চাহিদাও ২২ শতাংশ বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে 'নমস্কার' করার পরামর্শ বিজেপি নেতার! নেপথ্যে কোন যুক্তি