কাটতে চলেছে ট্রায়াল জট, দুই ডোজের বিধি মেনেই হবে কোভিশিল্ডের প্রয়োগ! স্পষ্ট করল সিরাম
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের ট্রায়াল ঘিরে গত সপ্তাহ থেকেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এমতাবস্থা চেন্নাইয়ের 'অসুস্থ’ স্বেচ্ছাসেবকের করা মামলার জবাব দেওয়ার পাশাপাশি ট্রায়ালের ডোজ নিয়েও মুখ খুলল পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই)। এসআইআইয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুই ডোজের থেকে অর্ধেক বা সম্পূর্ণ ডোজের সাফল্য অধিক হলেও ট্রায়ালে লাগাতার দু'ডোজের নিয়ম মেনেই চলবে গবেষকরা।

অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিনের সফলতা ঘিরে প্রশ্ন
সাম্প্রতিক ট্রায়ালের রিপোর্টের ভিত্তিতে অ্যাস্ট্রোজেনেকার গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রথমে অর্ধেক ও তারপর সম্পূর্ণ ডোজ দিলেই কোভিড নিরাময়ের হার পৌছাচ্ছে প্রায় ৯০%-এ। যদিও বিশেষজ্ঞমহলের মতে, ব্রিটেনে মাত্র কয়েকশো মানুষের উপর করা ওই ট্রায়ালের ফলাফল নির্ভরযোগ্য নয়। এসআইআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালন কর্তা ডঃ সুরেশ যাদব জানিয়েছেন, "পরস্পর দুইবার সম্পূর্ণ ডোজ দিলে সাফল্যের হার হয়তো কমে ৬২% হয়, তবুও আমরা এই কৌশলেই ট্রায়াল চালাব।"

ডোজে রদবদল করলে গবেষণায় বিলম্ব
ডোজ বদলের প্রসঙ্গে এসআইআইয়ের ডঃ যাদবের আশঙ্কা, "এতদিন পরে ট্রায়ালের নিয়ম বদলে গবেষণায় দেরি হতে পারে। গত চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দুইটি ভিন্ন ডোজ ব্যবহার করলে তা অসংলগ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষার ক্ষেত্রে গলদ ডেকে আনবে।" অন্যদিকে এসআইআইয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যেই জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্রের আবেদন করতে চলেছে কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি।

ভ্যাকসিন প্রস্তুতির আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে সিরাম
এইমুহূর্তে বিশ্বের সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিনগুলির আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে পুনের এসআইআই। সূত্রের খবর, মার্কিন সংস্থা কোডাজেনিক্স, প্রতিযোগী নোভাভ্যাক্স ও অস্ট্রিয়ার থেমিস সংস্থার ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাবে এসআইআই। যদিও সফলতার হার কম হলেও করোনা প্রতিষেধকের দৌড়ে প্রথম সারিতেই রয়েছে কোভিশিল্ড। মার্কিন সংস্থা মডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রায় ৯৫% সফল হলেও পরিবহন ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কম ব্যয়বহুল কোভিশিল্ড, ফলে অধিকাংশ দেশ ঝুঁকছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার দিকেই।

ডজনখানেক দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের দায়িত্বও সিরামের
অন্যদিকে সিরামের তরফে ডাঃ যাদব জানিয়েছেন, "অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশে ভ্যাকসিন পাঠাবে এসআইআই।" হু-এর কোভ্যাক্স ব্যবস্থার আওতায় থাকা বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যেই কোভিশিল্ড ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। সিরাম সিইও আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, "সুলভ মূল্যে সহজে পরিবহনযোগ্য ভ্যাকসিন চাইছে প্রত্যেকটি দেশ। এখন কোনো ভ্যাকসিনের সফলতা যদি ১১০% হয় অথচ তাকে প্রেরণ করা সম্ভবপর নয়, তাহলে এমন প্রতিষেধক প্ৰস্তুত করা অর্থহীন।"

করোনা টীকার স্বেচ্ছাসেবক হতে চান রাজ্যপাল, 'কিন্তু...' কী জানাল নাইসেড