ভায়াল খোলার ৪ ঘন্টার মধ্যেই সারতে হবে টিকাকরণ! চিন্তায় ঘুম উড়েছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের
ভায়াল খোলার ৪ ঘন্টার মধ্যেই সারতে হবে টিকাকরণ! চিন্তায় ঘুম উড়েছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের
এতদিন ভ্যাকসিনের অভাবে ধুঁকতে থাকা দেশগুলিতে অবশেষে চালু হয়েছে টিকাকরণ। সর্বশেষ ট্রায়াল শেষ হতেই টিকাকরণের পথে এগোচ্ছে নানা দেশ, ব্যতিক্রম নয় ভারতও। ভারত বায়োটেকের ট্রায়াল নিয়ে নানা ধোঁয়াশা ও তর্জার মধ্যেই আগামী ১৬ই জানুয়ারি দেশ জুড়ে প্রথমবারের জন্য চালু হবে করোনা টিকাকরণ। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকসিনের ১০টি ডোজ সম্বলিত একটি ভায়াল খোলার ৪ ঘন্টার মধ্যেই তা ব্যবহার করে ফেলতে হবে, নাহলেই বিপদ! অন্যান্য পিছিয়ে পড়া দেশের মত ভারতও যে ভুগছে সঠিক প্রযুক্তির অভাবে, তা স্পষ্ট সাম্প্রতিক এই ঘটনাতেই। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি।
ভিভিএম-এর অভাবে সমস্যায় ভারত
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক টিকাকরণ প্রকল্প (ইউআইপি)-এর ক্ষেত্রে ভায়াল খোলার পরও প্রায় ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত টিকাকরণ সম্ভব, কিন্তু ভ্যাকসিন ভায়াল মনিটর (ভিভিএম)-এর অভাবে ভ্যাকসিনের তথ্যাবলী দেখা সম্ভব হচ্ছে না। আর এর ফলেই ভারতে ক্ষণস্থায়ী হয়ে দাঁড়িয়েছে ভায়ালের আয়ু। কোভ্যাক্সিন-এর ক্ষেত্রে যে চলবে না 'ওপেন ভায়াল পলিসি', তাও স্পষ্ট করেছে কেন্দ্র।
রাজ্যগুলিকে নয়া গাইডলাইন কেন্দ্রের
'ওপেন ভায়াল পলিসি' না থাকার কারণে যেমনভাবে হিমঘরগুলি গুরুত্বপূর্ণ, সেভাবেই ভ্যাকসিন অফিসারদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে খোলার চারঘন্টার মধ্যেই ডোজ ব্যবহার হয়, সম্প্রতি রাজ্যগুলিকে এমনই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিধি অনুযায়ী, ভায়াল খোলার সাথে সাথে ভ্যাকসিন অফিসারদের সময় লিখে রাখতে হবে এবং প্রত্যেক টিকাকরণ সাইটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে প্রতিষেধক ভায়ালগুলির উষ্ণতা সঠিক থাকে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ?
এসআইআই সৃষ্ট ভ্যাকসিনের মতো এই ভ্যাকসিনও তাৎক্ষণিক প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে, ফলে সঠিক সময়ের ভিতর ব্যবহার না করলে ভায়াল দূষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, টিকাকরণের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এমনটাই জানালেন জীবাণুবিদ টি জ্যাকব জন। জন আরও জানিয়েছেন, "টিকাকরণের জন্য 'ওপেন ভায়াল পলিসি' একেবারেই সঠিক নীতি নয়। তবুও ভিভিএমের অভাবে তেমনটা করতে হলে টিকার তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হওয়ার আগেই ব্যবহার করা আবশ্যিক।"
চিন্তায় ঘুম উড়েছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের
টিকাকরণ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটানোর জন্য প্রত্যেক প্রতিষেধকের বিষয়ে আলাদা আলাদা গাইডলাইন রাজ্যগুলিকে পাঠাবে কেন্দ্র, জানা গেছে এমনটাই। যদিও বিশেষজ্ঞদের মাথাব্যথার কারণ অন্য। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিধিনিষেধ অনুযায়ী, প্রতি সাইটে দিনে ১০০ -এর বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব নয় এবং পাশাপাশি খোলার ৪ ঘন্টার মধ্যে ভায়াল শেষ করা বাধ্যতামূলক। ফলে গবেষকদের মতে, বিপুল পরিমাণে ভ্যাকসিন ডোজ নষ্টের ইঙ্গিত মিলছে। ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতার মাঝে ডোজ নষ্টের দুর্ভাবনায় রাতের ঘুম উড়েছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের।
কারা পাচ্ছেন অগ্রাধিকার? কীভাবে লেখাবেন নাম? একনজরে করোনা টিকাকরণের খুঁটিনাটি