তৃতীয় স্রোতের আশঙ্কার মাঝে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, শেষ ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যান একনজরে
শেষ ২৪ ঘণ্টায় ফের একবার আতঙ্কের পরিসংখ্যান সামনে আনল ভারতের করোনাগ্রাফ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের রমরমার মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪২,৯৮২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪১,৭২৬ জন। এদিকে, গতকালের মতোই মৃতের সংখ্যা ফের ৫০০ এর অঙ্ক ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একনজরে দেখা যাক দেশের করোনা পরিস্থিতি।
৪২ হাজারের বেশি আক্রান্ত
গতকালের মতো এদিনও ৪২ হাজারের বেশি ছাড়ল করোনা আক্রান্তের দৈনিক সংখ্যা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ৯৮২ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়ষ এদিকে গতকাের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে শেষ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২,৬২৫ জন। বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গিয়েছেন ৫৬২জন বলে জানানো হয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্টে। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে পর পর দু দিন ৪২ হাজারের ঘরে রয়েছে করোনার দৈনিক আক্রান্ত। এর আগে মঙ্গলবার খানিকটা নেমেছিল করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। প্রসঙ্গত, গোটা জুলাই মাস জুড়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় মাঝে মাঝে কমতি দেখা গেলেও অগাস্টের শুরু থেকেই কার্যত করোনা উদ্বেগ মাথা চাড়া দিচ্ছে দেশের কয়েকচটি রাজ্যকে ঘিরে। এরই মাঝে তৃতীয় স্রোতের আতঙ্ক পরিস্থিতিকে আরও উৎকণ্ঠাময় করে তুলেছে।
সুস্থতার পরিসংখ্যান
এদিনের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে করোনার জেরে সুস্থতার থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ৪২ হাজারের ঘরে যেখানে সুস্থতার সংখ্যা, সেখানে করোনার জেরে এদিন ৪১ হাজার ৭২৬ জন সুস্থ হয়েছেন। গতকালদেশের সুস্থতার সংখ্যা ৩৬ হাজারের কিছু বেশি ছিল। ৪ অগাস্ট ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২,৬২৫ ছিল। সেখানে সুস্থার সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজারের বেশি। যদিও সপস্থতার হার ৯৭ শতাংশ বলে গতকালই জানানো হয়। এদিকে, পরিস্থিতি এমন দিকে এগিয়ে যাওয়ায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দেখা গিয়েছে বিশ্বের ১৩ শতাংশ এমন ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যাঁরা করোনা টিকা নেওয়া র পরও নতুন করে করোনার শিকার হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রয়েছে বিস্তর জল্পনা। তারই মাঝে সরকারি তথ্যে জানানো হয়েছে করোনার আর ভ্যালু দেশের ৮ টি রাজ্যে হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। ফলে আর ভ্যালু ঘিরেও রয়েছে উদ্বেগ। মূলত করোনার আর ভ্যালু থেকেই বোঝা যায় যে করোনা ছড়িয়ে পড়ার গড় হার দেশে কত হতে পারে।
আসছে উৎসবের মরশুম৪,১১,০৭৬ জন।
প্রসঙ্গত, ১৫ অগাস্টের পর থেকেই কার্যত দেশ জুড়ে উৎসবের মরশুম রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। সেই পরিস্থিতিতে কেরলের ওনম, এরপর বাংলার দুর্গাপজো, স্বাধীনতা দিবস সহ একাধিক উৎসব ঘিরে রীতিমতো সতর্কতা অবলম্বনের জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। গত ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে করোনার অতিমারী কার্যত হু হু করে বেড়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,১৮,১২,১১৪ জন। অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে ৪,১১০৭৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩,০৯,৭৪৭৪৮ জন। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৪,২৬,২৯০ জন।
ভ্যাকসিনেশন ইস্যু
ভ্যাকসিনেশন নিয়ে দেশ জুড়ে প্রবল গতিতে এগোচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্মসূচি। দিনে দিনে ভ্যাকসিনের জন্য লাইন বাড়ছে। এদিকে, দেশে এপর্যন্ত মোট ভ্যাকসিনেশন হয়েছে ৪৮,৯৩,৪২,২৯৫ জনের। প্রসঙ্গত, এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিয়েও অনেকের দেহেই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে বলে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানান ঘটনায় দেখা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন ইস্যুতে একাধিক গবেষণার ফলাফলও সামনে আসছে। এক সাম্প্রতিক গবেষণার রিপোর্ট বলছে, যে কোভিশিল্ডের মতো ভ্যাকসিন করোনা দমনে সহায়তা করছে। মূলত, ডেল্টা ভাইরাসের আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে মূল কারণ। সেই জায়গা থেকে ডেল্টা দমনের পথও খোঁজা হচ্ছে। গবেষণা বলছে যে, যাঁদের করোনা হয়ে গিয়েছে একবার, অর্খাৎ করোনা জয়ী ও কোভিশিল্ড যাঁরা ভ্যাকসিন হিসাবে নিয়েছেন, তাঁরাই ডেল্টা দমনে কার্যকরীতা দেখাচ্ছে।
কেরল পরিস্থিতি
এদিকে, কেরলের পরিস্থিতি বারবার উদ্বেগে রাখছে দেশকে। পরিসংখ্যান বলছে প্রতি মিলিনয়নে করোনার জেরে কেরলে যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা চড়চড়িয়ে বাড়ছে তাতে প্রতি সপ্তাহের হিসাবে দেশ সবচেয়ে বেশি। জিকার সংক্রমণের মাঝেই কেরলে হু হু করে বাড়ছে করোনার উপদ্রবও। যা গোটা দেশের সামনে প্রশ্ন তুলছে ধরছে বহু। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কেরলই দেশের করোনা পরিস্থিতিতে তৃতীয় স্রোতের এপিসেন্টার হচ্ছে কি না? যার উত্তর তোলা সময়ের হাতে।