করোনার জের, ৩ হাজার পয়েন্ট পতনের জেরে ১১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের!
করোনার জের, ৩ হাজার পয়েন্ট পতনের জেরে ১১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের!
করোনা ভাইরাসের কারণেই বিশ্ব বাজারে কেনাবেচা প্রায় বন্ধ। বিশ্লেষকরা বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপের উপর ওই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণেই বিশ্ব বাণিজ্যে আরও উদ্বেগের সঞ্চার হয়। এদিকে এই মন্দার জের এসে পড়েছে দেশের শেয়ার বাজারের উপর। আজ শেয়ার বাজারের সূচক হুহু করে নামতে থাকে লেনদেন শুরু হতেই। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩০০০ পয়েন্ট পতনের পর সেনসেক্স দাঁড়ায় ৩২,৭৭৮-এ। গত ৩৩ মাসে সূচক সব থেকে নেচে পড়ে গেল এর জেরে।
নিফটিতেও বড় পতন!
এদিকে সেনসেক্সের পাশাপাশি আজ নিফটিতেও পতন দেখা যায়। নিফটি বাস্কেটের ৫০ টি শেয়ারের প্রায় সবকটিই নিম্নমুখী ছিল। ইয়েস ব্যাংক, টাটা মোটরস, আদানি পোর্টস, টাটা স্টিল, বেদান্ত, ওএনজিসি, জেএসডব্লিউ স্টিল এবং এসবিআই-র শেয়ার শতাংশের হিসাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলির লোকসান হয়েছে প্রায় ৭.৬৩ শতাংশ থেকে ১১.৯৮ শতাংশ।
লেনদেন শুরু হতেই ১৮০০ পয়েন্ট পতন
বৃহস্পতিবার বাজারে লেনদেন শুরু হতেই ১৮০০ পয়েন্ট পতন হয় সেনসেক্সে। সূচকের পতনের জেরে নিফটি চলে যায় ১০ হাজারের নিচে। নিফটি পড়ে ৪৭০ পয়েন্ট। নিফটি গিয়ে দাঁড়ায় ৯৯৮৮.০৫-এ। ১৮২১ পয়েন্ট পতনের জেরে সেনসেক্স দাঁড়ায় ৩৩৮৭৬.১৩ পয়েন্টে। তারপরও জারি ছিল পতন। শেষ পর্যন্ত তা গিয়ে ঠেকে ৩২,৭৭৮ পয়েন্টে।
৯০০ টি শেয়ারে পতন
এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনা সংকটের জেরে বিএসসিতে ৯০০ টি শেয়ার ৫২ সপ্তাহের সর্বনিম্নে পৌছেছে বলেও জানা যাচ্ছে। এদিন বাজার খোলার সময় সেনসেক্স ১৮২১ পয়েন্টে অথবা ৫.২১ শতাংশ কমে পৌছয় ৩৩,৮৭৬.১৩ পয়েন্টে ৷ অন্যদিকে নিফটিও ৫০ নেমে গিয়েছে ২০ শতাংশে। তাছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শেয়ার বাজারের পাশাপাশি ভারতীয় টাকার বিনিময় মূল্য পড়ে যেতে দেখা যায়। এর জেরে বিনিয়োগকারীদের এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বিশ্ব বাজারে
করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকদের উপর শুক্রবার থেকে আগামী ৩০ দিনের জন্যে অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এরপরেই বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে পড়ে বড়সড় প্রভাব, শেয়ার কেনাবেচা সাময়িকভাবে প্রায় স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়ল ভারতের শেয়ার বাজারেও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য বলেছিলেন যে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাণিজ্য প্রভাবিত হবে না।
এশিয়া-প্যাসিফিক শেয়ারে বাজারে পতন
এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্যাসিফিক শেয়ারের ব্রডকাস্ট ইন্ডেক্স অনুযায়ী জাপানের বাইরের দেশগুলিতে ২০১৯ সালের প্রথম দিকের থেকে খারাপ অবস্থায় চলে গেছে শেয়ার সূচক, সর্বনিম্ন পর্যায় ৪.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বাজার এবং জাপানের নিকিকের শেয়ার ৫.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বেঞ্চমার্ক ৭.৪ শতাংশ নেমে গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পিআই ৪.৬ শতাংশ কমে গিয়ে সাড়ে চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।
ঝুঁকির মুখে অর্থনীতি
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে পড়েছে করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ায়৷ পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এই ভাইরাসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিনের আমদানি রফতানিও। এর জেরে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিস্তর। যদি আগামী কয়েক সপ্তাহে চিনের উহান শহরে এই মহামারী তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের৷