করোনায় কাল যখন উৎসব! আশঙ্কা বাড়াচ্ছে বাংলা, ১৫ দিনেই আমেরিকাকে টপকে শীর্ষে ভারত
করোনায় কাল যখন উৎসব! আশঙ্কা বাড়াচ্ছে বাংলা, ১৫ দিনেই আমেরিকাকে টপকে শীর্ষে ভারত
বর্তমান করোনা মানচিত্রে আমেরিকার থেকে মাত্র ১ লক্ষ আক্রান্তের ব্যবধানে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। তবে উৎসবের আবহে ইতিমধ্যেই যে ভাবে রাস্তা-ঘাট বাজারে ভীড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ তাতে খুব শীর্ঘই যে ভারত করোনা তালিতায় শীর্ষস্থানে উঠে যাবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে ১০ দিনের 'ওনাম' উৎসবের কেরলে প্রায় ৫ গুণ পর্যন্ত সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা গেছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গেও দুর্গাপুজোকে ঘিরে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই যেভাবে মানুষ বেরোচ্ছে রাস্তায়, তাতে শঙ্কিত চিকিৎসকরা।
করোনার থেকেও পেটের জ্বালাকে ভয় পাচ্ছে মানুষ
এদিকে করোনার আঘাতে বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে একাধিক বিধিনিষেধ লঘু করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এদিকে প্রতিবছর দুর্গাপূজা এবং দীপাবলিকে কেন্দ্র করে বিপুল বিক্রিবাটা হয় রাজ্য তথা সারা দেশ জুড়েই। তাই এবছরেও অক্টোবর নভেম্বরে ফের চাঙ্গা হচ্ছে খুচরো ও পাইকিরি বাজার। মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি মতে, "উৎসবের সময়েই গ্রাম থেকে মানুষরা আসেন দু'পয়সা রোজগারের উদ্দেশ্য নিয়ে। এখন ওদের বাধা দিলে ওরা তো না খেতে পেয়েই মারা যাবে!" যদিও বর্তমানে করোনার অন্যতম আঁতুরঘর পশ্চিমবঙ্গে এই ছাড় কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
স্বাস্থ্যের চেয়েও ধর্মীয় ভাবাবেগের উপর জোর সরকারের ?
কাজের আশায় শহরে এসে জীবন বিপন্ন হলেও পেটের তাগিদে যে কাজ করতেই হবে, তা স্পষ্ট ভাবেই বলছেন গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষেরা। অন্যদিকে, ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলা বিজেপিকে আগামী ভোটে হারানোর হাতিয়ার হিসেবে দুর্গাপূজাকেই হাতিয়ার করছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিকে চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারিকে অগ্রাহ্য করে যেভাবে কলকাতার পূজা আয়োজকদের তহবিল দ্বিগুণ করেছে রাজ্য সরকার, তাতেও চটেছে অনেকেই। যদিও বর্তমানে একরকম প্রশাসনিক মদতেই জোরকদমে চলছে মন্ডপসজ্জার কাজ, সঙ্গে বাড়ছে প্রবল সংক্রমণের আশঙ্কাও। যদিও এই বিষয়ে আগেই কেন্দ্রের তরফে সতর্কও করা হয়েছিল রাজ্যকে। এমনকী করোনা আবহে দুর্গাপুজো নিয়ে রাজ্যকে বিশেষ বার্তা দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
শীতকালেও চলতে পারে করোনার ঝোড়ো ব্যাটিং
ভারতে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩.৭২ লক্ষের কাছাকাছি, মৃত প্রায় ১.১২ লক্ষ। চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন আগামী শীত নিয়ে। আবহাওয়ার গড় তাপমাত্রা নিচের দিকে নামতে থাকলে ক্রমশ বাড়তে পারে কোভিড ভাইরাসের সক্রিয়তা। গবেষকরা এও জানাচ্ছেন যে, এইভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকল আগামী মাসের মধ্যেই মার্কিন মুলুককে ছাপিয়ে যেতে পারে ভারত। মহামারী বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় কিছুটা হলেও ভাটা দেখা গেলেও উৎসবের মরশুমে মানুষ করোনা বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাইরে বেরোলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
কেরলকে দেখে শিক্ষা নিক বাংলা
ভারতের অন্যতম শিক্ষিত ও সুগঠিত রাজ্য কেরলে প্রথম ৫,০০০ জন করোনা আক্রান্ত হন পাঁচমাসে, কিন্তু পরবর্তী ৩ মাসে সংখ্যাটি ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। সম্প্রতি 'ওনাম' উপলক্ষ্যে অত্যধিক ভিড়ের কারণে রেকর্ড সংক্রমণের দিকে এগিয়েছে কেরল। কিন্তু ভারতের অন্যতম প্রধান ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ কি আদৌ এমন করোনা ঢেউ সামলাতে প্ৰস্তুত? তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য-আধিকারিকরাই আক্ষেপের সুরে বলছেন, যেভাবে শিক্ষিত মানুষরা বিধিনিষেধ মানছেন না, তাতে রাজ্যে সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা মুশকিল। ফলে দায়টা কার, প্রশাসন নাকি জনসাধারণ, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
গ্যাস সিলিন্ডারের হোম ডেলিভারির পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন ১ নভেম্বর থেকে