৫০ দিনের বেশি শরীরে টিকতে পারছে না কোভিড অ্যান্টিবডি! গবেষণায় মিলছে উদ্বেগজনক তথ্য
৫০ দিনের বেশি শরীরে টিকতে পারছে না কোভিড অ্যান্টিবডি! গবেষণায় মিলছে উদ্বেগজনক তথ্য
করোনা ভ্যাকসিনের খোঁজে যখন দিশেহারা গোটা বিশ্ব তখন কোভিড অ্যান্টিবডির উপর নির্ভরশীল প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে সঙ্কটমোচনের পথ খুঁজছিলেন গবেষকরা। অন্যদিকে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালের কোভিড আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর একই গবেষণায় জানা যাচ্ছে করোনা অ্যান্টিবডির আয়ু মাত্র ২ মাসের কাছাকাছি।
৮০১ জনের উপর চালানো হয় সমীক্ষা
সমীক্ষা ও গবেষণার প্রধান পরিচালনকর্তা ডঃ নিশান্ত কুমার জানিয়েছেন, "৮০১ জনকে নিয়ে গবেষণা করা হয় যাঁদের মধ্যে ২৮ জন আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের শুরুর দিকে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছিল। জুন মাসে করা সেরো সার্ভেতে তাঁদের কারোর মধ্যেই কোভিড অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি।"
সেরো সার্ভেই দিল নতুন তথ্য
ডঃ নিশান্ত আরও জানিয়েছেন, "সেরো সমীক্ষার অন্তর্গত আরও ৩৪ জন চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে আমাদের। প্রায় পাঁচ সপ্তাহ পূর্বে যাঁদের করোনা ধরা পড়েছে, তাঁদের মাত্র ৩৮.৫%-এর রক্তে অ্যান্টিবডি দেখা গেছে। অন্যদিকে তিন সপ্তাহ পূর্বে যাঁদের কোভিড ধরা পড়ে, তাঁদের প্রায় ৯০%-এর শরীরেই করোনার অ্যান্টিবডি ধরা পড়েছে।" বর্তমানে হংকংয়ে করোনার পুনরাগমনের কারণে চিন্তিত চিকিৎসকরা। ফলত অ্যান্টিবডি নিয়ে বাড়ছে গবেষণা। এদিকে প্রতিষেধক তৈরিতে অ্যান্টিবডির ভূমিকা বরাবরই অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হয়।
অ্যান্টিবডির আয়ু নিয়ে তর্জা
জেজে হাসপাতালের এই সমীক্ষা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেক স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞর মতেই, অ্যান্টিবডির আয়ু নির্ভর করে রোগী উপসর্গহীন না উপসর্গযুক্ত, তার উপর। মহামারী বিশেষজ্ঞ ডঃ গিরিধর আর বাবু জানিয়েছেন, "আমরা এখনও অবধি জানিনা যে ওই ২৮জন রোগী উপসর্গবিহীন ছিলেন কি না। এর আগে বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বহুদিন ধরে উপসর্গযুক্ত কোভিডে ভোগা রোগীদের শরীরে প্রায় ৩-৪ মাস পর্যন্ত অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব রয়েছে। ফলে এই নতুন সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে ধন্দে আমরা।"
আইজিজি অ্যান্টিবডি নিয়ে ধন্দে চিকিৎসকরা
চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, "এখনও পর্যন্ত করা গবেষণা অনুযায়ী কোনও থেরাপি ছাড়া সাধারণ করোনা আক্রান্তদের এই অ্যান্টিবডি ইমিউনোগ্লোবিউলিন জি (আইজিজি) নয়, বরং কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে টি-সেল। শরীরে আইজিজির হেরফেরে তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় কোভিড আক্রান্তের, কিন্তু টি-সেল করোনা রোগীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।" ফলত পরস্পরবিরোধী ফলাফলের জেরে এখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেজে হাসপাতালের এই সমীক্ষা ঘিরে।
কোভিশিল্ডে আংশিক জয়, প্রথম ডোজ নিয়ে সুস্থ রয়েছেন পুনের দুই স্বেচ্ছাসেবী