করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন: ভারতের উপহার দেয়া কোভিশিল্ড-এর চালান এসে পৌঁছালো ঢাকায়
ভারতের উপহার দেয়া কোভিশিল্ড নামের ভ্যাকসিন ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের টিকা আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আগেই ভারত জানিয়েছিল, কুড়ি লাখ ডোজ টিকা বিনামূল্যে বাংলাদেশকে উপহার দেবে তারা।
সকালেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানযোগে মুম্বাই থেকে ঢাকার বিমানবন্দরে এসে নামে টিকার এই চালান।
ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এগুলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কৃত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন, যা তৈরি করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট।
দুপুরে অনুষ্ঠান করে ভারতীয় হাই কমিশন এই উপহার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবে বলে কথা রয়েছে।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাকা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকর্মীরা জানান, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ৯ জন কর্মকর্তা টিকা গ্রহণের জন্য উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলছেন, বেলা সাড়ে এগারো টার দিকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান অবতরণ করতে দেখেছেন তারা। পরে সেই বিমান থেকে কার্টনে করে টিকা নামিয়ে বিশেষায়িত পরিবহনে তোলা হয়।
ঢাকা কাস্টমসের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদদাতারা বলছেন, মোট ১৬৭টি কার্টনে এই টিকা নিয়ে আসা হয়েছে।
বিমানবন্দর থেকে টিকাগুলো তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইপিআই-এর গুদামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং প্রাথমিকভাবে সেখানেই সংরক্ষণ করা হবে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় টিকাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবেন ভারতের হাইকমিশনার।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ জানায় যে, বুধবার (২০শে জানুয়ারি) ভারত থেকে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে।
- দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের ভ্যাক্সিন কূটনীতি শুরু, বাদ শুধু পাকিস্তান
- ভারতে ভ্যাকসিন মিলবে হাজার রুপিতে, বাংলাদেশে কত দাম হবে?
- ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হবে
এই টিকা কোন বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের অংশ হিসেবে নয়, বরং এটি মূলত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের জন্য উপহার বলে বিবিসি বাংলাকে এর আগে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
অধ্যাপক আলম বলেন, এই উপহার কীভাবে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা করে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে টিকা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ঔষধ প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে সরকার জানিয়েছে, বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে বাণিজ্যিকভাবে আরো ৩ কোটি ডোজ টিকা আমদানি করার কথা রয়েছে।
কবে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচী?
বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে যে ভ্যাকসিন কেনা হচ্ছে তার প্রথম চালান ২৫শে জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।
টিকা আসার পর দুই দিন তা বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে থাকবে।
টঙ্গিতে বেক্সিমকোর দুইটি ওয়্যারহাউজ রয়েছে।
সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
প্রথমে যে ৫০ লক্ষ টিকা আসবে তার পুরোটাই দিয়ে দেয়া হবে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় চালান আসলে সেই ৫০ লক্ষও পুরো দিয়ে দেয়া হবে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে টিকা প্রদান।
এজন্য ২৬শে জানুয়ারি থেকে শুরু হবে টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের রেজিস্ট্রেশন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেছেন "ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে। আগে ২৫ লক্ষের কথা বলা হলেও এখন ৫০ লক্ষ মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হবে।"