বিহারে পরিযায়ী শ্রমিকদের পা পড়তেই বাড়তে শুরু করে দিয়েছে করোনা সংক্রমণ
বেশ কিছুদিন ধরেই বিহারে নোভেল করোনা ভাইরাসের কেস বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার এ রাজ্যে ৩৮০টি কেস ধরা পড়েছে, যা রাজ্যের পুরো করোনা কেসের ২৫ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত বিহারে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ২০০০টি, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ধরা পড়েছে এই একসপ্তাহের মধ্যে। বিহার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে।
বিহারে মোট কেসের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক
এই মাসের শুরুতে বিহারে ৪৫০টিরও কম কেস ছিল। কিন্তু লকডাউন শিথিল হতেই ৪ মে থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভিন্ন রাজ্য থেকে এ রাজ্যে আসতে শুরু করে, তারপর থেকেই বিহারে করোনা সংক্রমণ বাড়া শুরু হয়। কাজের জায়গা থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি নতুন করোনা কেস সনাক্ত হয়। এমনকী বিহারের মোট কেসের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরাই অর্ধেকের বেশি সংক্রমিত।
পরিযায়ী শ্রমিকদের কারণে বিহারে করোনা কেস দ্বিগুণ
অবাক বিষয় হল, ২০ এপ্রিল বিহারে করোনার হার ১০০ ছুঁয়েছিল। কিন্তু সেটা নিম্নগামী করোনা কেসের কারণে এবং পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে প্রবেশের আগে করোনা কেস নিচের দিকে নামছিল। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিহারে করোনা প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩.৭৫ শতাংশ যা ১৯ দিনের চেয়ে দ্বিগুণ। কিন্তু রাজ্যে করোনা কেসের সংখ্যা বাড়তে থাকে তখনই, যখন পরিযায়ী শ্রমিকরা একের পর এক করোনা পজিটিভ ধরা পড়তে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত বিহারে গড় সাতদিনের হার ১০.৩২ শতাংশ এবং সাতদিনের কম সময়ে তা দ্বিগুণ হয়েছে। দেশে এখন কেস দ্বিগুণ হওয়ার সময় ১৩.৪৫ দিন।
একদিনে মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুতেও করোনা কেস বৃদ্ধি পেয়েছে
বৃহস্পতিবার এই প্রথমবার মাত্র একদিনের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ভারতে এখন করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৬ লক্ষ। মহারাষ্ট্রে প্রায় প্রতিদিনই ২০০০ করে নতুন করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল সেখানে বৃহস্পতিবার ২,৩৪৫টি নতুন কেস ধরা পড়েছে। এ রাজ্যে এখন মোট করোনা নিশ্চিত কেসের সংখ্যা ৪১,৬৪২টি। দেশের মোট এক-তৃতীয়াংশ এ রাজ্য থেকেই বলে জানা গিয়েছে। যদিও মহারাষ্ট্রে ১১,৭০০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুতেও ৭৭৬টি নতুন কেস সনাক্ত করা গিয়েছে, যা মোট করোনা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩,১৯১টি।
১৫ মে–এর পর করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য হয়
৪ মে দেশে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকেই বড় সংখ্যার মানুষ এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে প্রবেশের ফলে করোনা সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। যদিও তার প্রভাব ১৫ মে পর্যন্ত দৃশ্যমান ছিল না। কিন্তু গত একসপ্তাহে অর্থাৎ ১৫ মে-এর পর থেকে ভারতে ৩০ হাজারেরও বেশি কেস সনাক্ত হয়। চতুর্থ মেয়াদের লকডাইন যা ১৮ মে থেকে শুরু হয়েছে তা আরও ক্রিয়াকলাপ সহজ করে দেওয়া হবে, বিশেষজ্ঞদের মতে এতে করোনা সংক্রমণ বাড়বে বই কমবে না।