কাশ্মীর কংগ্রেসে চিড়? আবদুল্লা-মেহবুবাদের গুপকর জেটে নাম লিখিয়ে শঙ্কায় 'হাত' শিবির
জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে গুকর জোট। রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির মোকাবিলা করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর এই লড়াইতে মেহবুবা মুফতি, ফারুক এবং ওমর আবদুল্লাদের সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেসও। আর এই নিয়ে বিজেপিও তোপ দেগেছে কংগ্রেসকে। তবে ৩৭০ ধারা নিয়ে সরাসরি মুখ খুলে বাকি দেশে ভোটে হারার ভয় ক্রমেই জাঁকিয়ে বসেছে কংগ্রেসের মনে।

জম্মু ও কাশ্মীরের আসন্ন নির্বাচন
জম্মু ও কাশ্মীরে জেলা উন্নয়ন পরিষদ ও পঞ্চায়েতের ভোটের জন্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে গুপকর জোট। সম্প্রতি ফারুক আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স, মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি-সহ উপত্যকার দশটি দল বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে সরব হয়। এ নিয়ে একটি ঘোষণাপত্রও সামনে এনেছে ওই জোট। আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই জোটের নাম দেওয়া হয়েছে 'পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশন'।

গুপকর জোট নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস
এদিকে গুপকর জোট নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। গুপকর জোটের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সরব হন পি চিদাম্বরম। এরপরই বিজেপির তরফ থেকে আক্রমণ শানানো হয় কংগ্রেসকে। এই পরিস্থিতিতে গুপকর জোটকে সমর্থন জানিয়ে বাকি দেশে নিজেদের জনপ্রিয়তা আরও তলানিতে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে কুপোকাত কংগ্রেস।

ধীরে চলার নীতি গ্রহণ করেছে কংগ্রেস
দলের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখতেই তাই এবার কিছুটা হলেও ধীরে চলার নীতি গ্রহণ করেছে কংগ্রেস। গুপকর জোটে থেকে ভোটে লড়ার বিষয়ে তাই কংগ্রেস প্রদেশ সভাপতি গুলাম আহমেদ মীর বলেন, 'আমরা আপাতত আসন ভাগাভাগির পর্যায়ে গুপকর জোটে রয়েছি। নীতিগত বিষয়ে এখনও সেভাবে অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়নি।'

এর আগে গুপকর জোটের বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস
এর আগে গুপকর জোটের বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর তারা নিজেদের প্রার্থীদের নামও আলাদা ভাবে ঘোষণা করেছিল। তবে কংগ্রেসের প্রার্থীদের নামের উপর এবার শিলমোহর বসান গুপকর জোটের প্রধআন ফারুক আবদুল্লা। এরপরই গুপকর জোটের সঙ্গে কংগ্রেসের হাত মেলানোর বিষয় আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। যাতে অস্বস্তিতে পড়েছে তারা।

ক্ষুব্ধ জম্মুর কংগ্রেস নেতৃত্ব
সূত্রের খবর, জম্মুতে নিজেদের ভোট বেস বাঁচিয়ে রাখতে গুপকর অ্যালায়েন্সের সঙ্গে প্রাক নির্বাচনী জোটে যেতে ইচ্ছুক ছিল না স্থানীয় নেতৃত্ব। কাশ্মীরের উপর ফোকাস করতে জম্মুকে অবহেলার বিষয়টা নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল কংগ্রেসের স্থানীত নেতৃত্ব। এদিকে জম্মুতে বর্তমানে একচেটিয়া ভাবে আদিপত্য বিস্তাক করে বসে আছে বিজেপি।

দেশের অন্যত্র এই জোটের প্রভাব পড়বে
তবে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত ফারুক আবদুল্লার সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি গুলাম আহমেদ মীর। তবে এখনও গুপকর জোটের সঙ্গে একই পাতায় নিজেদের রাখতে অস্বীকার করছে কংগ্রেস। তবে ফারুক আবদুল্লা জোটের তরফে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতেই কংগ্রেস আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়ে। জম্মু তো বটেই, দেশের অন্যত্র এই জোটের প্রভাব বলে আশঙ্কা দলের একাংশের।

জম্মু ভিত্তিক কংগ্রেস নেতাদের ক্ষোভ
এদিকে জম্মু ভিত্তিক কংগ্রেস নেতাদের ক্ষোভ, ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবি জানানো এই জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস কাশ্মীরে আসন পেতে পারে। তবে জম্মু থেকে ক্রমেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে দল। এর জেরে বহু স্থানীয় নেতৃত্ব ভোটে হারা নিশ্চিত জেনে নির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিয়ে নিয়েছেন।

বিজেপির হাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হাতিয়ার
এদিকে গুপকর জোটকে ইতিমধ্যেই দেশদ্রোহী তকমা দিয়েছে বিজেপি। উল্লেখ্য, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা ফেরাতে চিনের সাহায্য চেয়ে বক্তব্য পেশ করেছিলেন ফআরুক আবদুল্লা। অন্যদিকে ৩৭০ ধারা না ফেরানো পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে না বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মেহবুবা মুফতিও। এবার কংগ্রেস সেই জোটের সঙ্গে সরাসরি হাত মেলানোয় বিজেপির হাতে তা এক বড় হাতিয়ার হিসাবে চলে এসেছে।
