মার্চ থেকে লাগাতার রেল ধর্মঘট? উত্তর পাওয়া যাবে ১৭ই
স্বাধীনতার পর ভারতীয় রেলে প্রথম লাগাতার ধর্মঘট হয়েছিল ১৯৭৪ সালের মে মাসে। একগুচ্ছ দাবিদাওয়া আদায়ে ধর্মঘট ডেকেছিলেন রেলের ১৭ লক্ষ কর্মী। তখন মসনদে ইন্দিরা গান্ধী। তিন সপ্তাহ ধর্মঘট চলার পর পুলিশ দমনপীড়ন চালিয়ে তাতে দাঁড়ি টেনে দেয়। তার পর আর এমনতর ধর্মঘট হয়নি রেলে। এবার প্রায় ৪০ বছর পর আবার ধর্মঘটের আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।
৩৮ দফা দাবি রেলকর্মীদের
রেলকর্মীদের দাবিদাওয়ার তালিকা দীর্ঘ। যেমন, সব শূন্যপদ পূরণ, আয়করে ছাড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে রেলকর্মীদের সন্তানদের কোটার সুবিধা দেওয়া, রেলওয়ে হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন ইত্যাদি। রেলকর্মীদের আরও অভিযোগ, বছরের পর বছর ট্রেন বেড়েছে, অথচ সৃষ্টি হয়নি নতুন পদ। এর ফলে যাত্রীদের ঠিকঠাক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীদের সঙ্গে কর্তব্যরত রেলকর্মীদের আকছার বাদানুবাদ হচ্ছে। মোট ৩৮টি অনুরূপ দাবি লিপিবদ্ধ করে এর আগে পেশ করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে। তাতে সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজস্থানের কোটাতে বসছে অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেন্স ফেডারেশনের বৈঠক। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ধর্মঘটের ব্যাপারে।
ভারতীয় রেলে এখন ১৩ লক্ষ ২০ হাজার কর্মচারী রয়েছেন। সংগঠনের নেতাদের দাবি, সিংহভাগ কর্মচারী ধর্মঘটের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফলে ধর্মঘট ডাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ১৭ তারিখ ধর্মঘটের পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়, তা হলে নিয়ম মোতাবেক ১৫ দিনের নোটিশ দিতে হবে রেলওয়ে বোর্ডকে। তার পর শুরু হবে ধর্মঘট। সেক্ষেত্রে মার্চের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গোটা দেশে থমকে যাবে ট্রেনের ঝমাঝম!
এই ধর্মঘট মোকাবিলায় সরকার দমনপীড়ন চালাবে কি না, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। কারণ লোকসভা ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। এই অবস্থায় দমনপীড়ন চালালে ইভিএমে তার প্রতিফলন ঘটতে পারে। কংগ্রেস তথা ইউপিএ সরকারের পক্ষে তা আদৌ সুখকর হবে না।