শেষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক, বিদ্রোহের আগুনে জল ঢেলে কংগ্রেসের চাবিচাঠি সেই সনিয়া গান্ধীর হাতেই!
দিনভর দীর্ঘ নাটকের পর শেষ হল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। এবং বৈঠক শেষে সেই গান্ধী পরিবারের হাতেই থাকল কংগ্রেসের চাবিকাঠি। অন্তরবর্তিকালীন সভানেত্রী হিসাবে রয়ে গেলেন সনিয়া গান্ধী। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বৈঠক শেষ হতেই কংগ্রেসের তরফে এই ঘোষণাই করা হল।
বৈঠকের শুরুতেই পদত্যাগের প্রস্তাব
সূত্রের খবর, আজ বৈঠকের শুরুতেই তাঁর পরিবর্ত খুঁজতে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের বলেন সনিয়া গান্ধী। কিন্তু, তাঁরই এই পদে থাকা উচিত বলে পরামর্শ দেন মনমোহন সিং। পদ না ছাড়ার জন্য আবেদন করেন এ কে অ্যান্টনিও। অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর পদে থাকতে চান না বলে আগেই জানিয়েছিলেন। আর আজ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের শুরুতেই তিনি ফের এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।
২৩ জন কংগ্রেস নেতার লেখা একটি চিঠি
এই পরিস্থিতির নেপথ্যে ছিল ২৩ জন কংগ্রেস নেতার একটি চিঠি। সনিয়া গান্ধী দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর কাটতে না কাটতেই আবারও দলের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের দাবি জানায় শীর্ষ নেতৃত্ব। ২৩ জন শীর্ষনেতা এই মর্মে সনিয়া গান্ধীকে চিঠিও লিখেছিলেন। পাশাপাশি তাঁরা ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের জন্যও আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের চিঠির উত্তরে সনিয়া গান্ধী জানিয়েছিলেন, বৈঠক হবে। সকলে মিলে নতুন সভাপতির খোঁজ করা হবে।
সভাপতি পদে নতুন মুখের দাবি
এরপরই সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে, এবিষয়ে এদিন মুখ খোলেন রাহুল গান্ধীও। যদিও তিনি নিজে সভাপতি পদে নতুন মুখের দাবি করে এসেছেন, তাও এই চিঠি দেওয়ার সময় নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। রাহুলের দাবি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে যেভাবে দল সংকটে পড়েছিল, এবং এই একই সময় সনিয়ার যেভাবে শারীরিক অবস্থার অবনতী হয়; এরকম পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই চিঠি তখন দেওয়া উচিত হয়নি। শুধু তাই নয়, যে কংগ্রেস নেতারা এই চিঠি লিখেছেন, তাঁরা বিজেপিকে মদত করছেন বলেও অভিযোগ করেন রাহুল।
রাহুলকে পাল্টা তোব গুলাম-কপিলরা
রাহুলের এই আক্রমণের পর গুলাম নবি আজাদ বলেন যে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি তবে তিনি বিজেপিকে সাহায্য করার লক্ষ্যে কোনও কিছুই করেননি। একই সুরে কপিল বলেন, 'বিগত ৩০ বছরে আমি একবারও বিজেপির পক্ষে মুখ খুলিনি। রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার বাঁচানোর পাশাপাশি মণিপুরেও দলের হয়ে লড়ছি। সেখানে বিজেপি সরকারের পতনের জন্যে চেষ্টা চালাচ্ছি। আর আপনি বলছেন আমরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছি?'
গুলাম নবিকে তোপ প্রিয়াঙ্কার
এরপরই গুলাম নবি আজাদকে পাল্টা আক্রমণ করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিন তিনি গুলাম নবিকে আক্রমণ করে বলেন, 'আপনি এই বৈঠকে যা বলছেন, আর আপনার চিঠিতে যা লেখা ছিল, তা সম্পূর্ণ আলাদা।' পরে অবশ্য ভুল বোভুবুঝির অজুহাত দেখিয়ে বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন আজাদ। এদিকে গুলামকে আক্রমণ করলেও সিব্বলের রাগ ভাঙাতে ময়দানে নামানো হয় রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা।
শান্ত করা হয় কপিল সিব্বলকে
এদিন সুরজেওয়ালা টুইট করে লেখেন, 'রাহুল গান্ধী এরম কোনও কথাই বলেননি বা এরম কোনও কথা বোঝাতেও চাননি। দয়া করে মিডিয়ার ভুল খবরে বিশ্বাস করবেন না। হ্যাঁ আমাদের সকলকেই একত্রিত হয়ে মোদী সরকারের বিরোধিতা করতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে লড়াই করা উচিত না তাতে কংগ্রেসের ক্ষতি।' এদিকে সুরজেওয়ালার এই টুইটের পরেই নিজের টুইটটি ডিলিট করে দেন কপিল সিব্বল। কপিল বলেন, রাহুল গান্ধী নাকি নিজে তাঁকে এই বিষয়ে বোঝান। এবং দিনভর এই নাটকের পর শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের গদিতে থাকছেন সেই সনিয়া গান্ধীই।
জল্পনা নয়, সত্যি মারা গিয়েছেন কিম জং উন! উত্তর কোরিয়ার গদিতে ইয়ো জং