সনিয়া গান্ধীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দিল্লির কংগ্রেস কর্মীদের! নির্বাচনের আগে বেকায়দায় হাত শিবির
দিল্লি নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও টিকিট পাওয়া নিয়ে অশন্তোষ কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে। এই অশন্তোষ প্রকাশ্যে আসে যখন পাটেল নগর ও কারাওয়াল নগর বিধআনসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস কর্মীরা নিজেদের অশন্তোষ প্রকাশ করতে সনিয়া গান্ধীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এখনও তালিকা প্রকাশ করেনি কংগ্রেস
শনিবার সকালে কংগ্রেস কর্মীরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে এই কেন্দ্রগুলিতে টিকিট দেওয়ার দাবি নিয়ে কংগ্রেসের অন্তরবর্তীকালীন সভাপতি সনিয়া গান্ধীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। প্রসঙ্গত, নির্বাচন এগিয়ে এলেও এখনও পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি কংগ্রেস। তাদের অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আম আদমি পার্টি ও বিজেপি (৫৭টি আসনে) ইতিমধ্যেই তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে।
৪ দিন আগেি শুরু হয়েছে মনোনয়ন পত্র জমার প্রক্রিয়া
১৪ জানুয়ারি থেকে থেকে শুরু হয়েছে দিল্লি নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমার প্রক্রিয়া। ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৭০ আসন বিশিষ্ট দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। তার পর ১১ তারিখ হবে ফল প্রকাশ। এর আগে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ১৪ জানুয়ারি নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ জানুয়ারি। মনোনয়ন পরীক্ষা করে দেখা হবে ২২ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৪ জানুয়ারি।
কংগ্রেস কি অপ্রাসঙ্গিক?
খাতায় কলমে তিনমুখী লড়াই হলেও দিল্লির নির্বাচন এখন মূলত আম আদমি পার্টি বনাম বিজেপি। মাঝে আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোট বাধতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় পিছনে হটে কংগ্রেস। ২০১৫ সালে ৭০টির মধ্যে ৬৭টি আসনই জিতেছিল আম আদমি পার্টি। এদিকে দিল্লির তিনটি মিউনিসিপাল ক্রপোরেশন রয়েছে বিজেপির দখলে। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির ৭টির মধ্যে ৭টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি। সেই অর্থে কংগ্রেস ভোট কাটলেও ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তিন দলের ক্রমতালিকায় কোন স্থানে কংগ্রেস?
১৫ বছর দিল্লি শাসন করলেও গত নির্বাচনে কংগ্রেসের ঝুলিতে একটিও আসন আসেনি। সেখানে ভোট শতাংশের দিকেও বিজেপি থেকে অনেকটাই পিছিয়ে কংগ্রেস। তবে গত লোকসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে কংগ্রেস। এর আগে ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দিল্লিতে ৪৬.৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। আম আদমি পার্টি সেখানে পেয়েছিল ৩৩ শতাংশ। কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ১৫.২ শতাংশ। ছবিটা বদলে যায় ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। আম আদমি পার্টি সেখানে পেয়েছিল ৫৪.৩ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৩৩.২ শতাংশ ভোট। কংগ্রেসের ভাড়ার আরও ফাঁকা হয়। তারা পায় মাত্র ৯.৭ শতাংশ ভোট। দিল্লির তিন পৌরনিগমের নির্বাচনে অবশ্য লড়াইটা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়। বিজেপি সেখানে পায় ৩৬.১ শতাংশ। আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস পায় যথাক্রমে ২৬.২ ও ২১.১ শতাংশ। গতবছর সম্পন্ন হওয়া লোকসভা নির্বাচনে আবার পাল্লা ভারী হয় বিজেপির। তারা পায় ৫৬.৫ শতাংশ ভোট। আম আদমি পার্টি সেখানে কংগ্রেসেরও নিচে নেমে যায়। তাদের ঝুলিতে আসে ১৮.১ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পায় ২২.৫ শতাংশ ভোট।
হেভিওয়েট প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা
এদিকে লোকসভায় আম আদমি পার্টিকে পিছনে ফেলতে পারায় কিছুটা আশাবাদী কংগ্রেস নিজেও। এই কারণে হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়ে বাজিমাত করার পরিকল্পনা করছে তারা। সূত্রের খবর, অরভিন্দর লাভলি, অজয় মাকেন, সুভআষ চোপড়া, আপ থেকে কংগ্রেসে আসা আল্কা লাম্বারা থাকতে পারেন কংগ্রেসের তালিকায়।