তেলেঙ্গানায় টিকলেও সীমান্ধ্রে কংগ্রেস সাফ পুরভোটে, ফায়দা তেলুগু দেশমের
দ্বিতীয় আশ্চর্য, কার্যত ভস্ম থেকে তেলুগু দেশম পার্টির উত্থান।
তৃতীয় আশ্চর্য, তেলেঙ্গানায় টিআরএসের আশানুরূপ ফল না হওয়া।
সংক্ষেপে এই হল অন্ধ্রপ্রদেশের পুরভোটের ফলাফল।
গত ৩০ মার্চ অন্ধ্রপ্রদেশের ১৪৫টি পুরসভায় ভোট হয়েছিল। লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের কারণে ফল ঘোষণা করতে দেরি হয়। ১৪৫টি পুরসভার মধ্যে ৯২টি হল সীমান্ধ্রে এবং ৫৩টি হল তেলেঙ্গানায়।
সীমান্ধ্রে ৬২টি পুরসভার দখল নিয়েছে চন্দ্রবাবুর নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি। ১৮টি পেয়েছে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস। বাকি ১২টি পুরসভায় কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কংগ্রেস কোথাও-ই সুবিধা করতে পারেনি। কংগ্রেসের ফলাফল প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগ করায় মুখ্য ভূমিকা পালন করায় সীমান্ধ্রে এখন কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়া প্রবল। অবস্থা এমনই, কংগ্রেসের পার্টি অফিস খোলার লোক পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভালো ফল করার কথা ছিল। রাজ্য বিভাজনের বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে ও ভিতরে যে আন্দোলন হয়েছিল, তার নেতৃত্ব দিয়েছিল ওয়াইএসআর কংগ্রেস। সীমান্ধ্রে যেখানেই জগন রেড্ডি জনসভা করেছেন, পিলপিলিয়ে লোক এসেছে। পুরসভা নির্বাচনে তারা খারাপ ফল করায় ব্যাপারটা আশ্চর্যজনক বৈকি! যদিও এ নিয়ে চিন্তিত নয় ওয়াইএসআর কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, তারা পাখির চোখ করেছিল বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনকে। পুরসভা জিততে ঝাঁপায়নি। এটা তাই প্রত্যাশিতই ছিল।
এদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিতে যারা অপাংক্তেয় হয়ে পড়েছিল, সেই তেলুগু দেশম পার্টি ফিরল বিপুল শক্তি নিয়ে। গত দশ বছর ধরে চন্দ্রবাবু নাইডু সাংগঠনিক কাজে বিস্তর মন দিয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, এটা তারই ফসল। পুরসভায় মোদী-হাওয়া কাজ করেনি, কারণ এই স্তরে টিডিপি এবং বিজেপি-র জোট হয়নি। সীমান্ধ্রে কোথাও এককভাবে পুরসভায় জেতেনি বিজেপি। অনুমান, রাজ্য বিধানসভা ভোট এবং লোকসভা ভোটে বিপুল শক্তি নিয়ে ফিরবে টিডিপি। অথচ অন্ধ্রপ্রদেশ বিভাজনের বিরোধিতা করে কখনওই জগনের মতো সক্রিয় আন্দোলন করেননি চন্দ্রবাবু নাইডু। ফলে দুর্নীতির ঘটনায় জগন রেড্ডির জড়িয়ে যাওয়া ভোটাররা ভালোভাবে নেননি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, তেলেঙ্গানায় ৫৩টি পুরসভার মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ২৩টি, টিআরএস ৯টি, টিডিপি ৭টি এবং বিজেপি ২টি। একটি করে পুরসভা পেয়েছে সিপিএম এবং এমআইএম। বাকি ১০টি পুরসভায় কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বরাবর তেলেঙ্গানা আন্দোলনে পুরোভাগে থেকেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস। অথচ তারা ফলাফলের নিরিখে পিছিয়ে পড়ল কংগ্রেসের থেকে। একে অবশ্য খারাপ ফল বলতে নারাজ টিআরএস। তাদের মতে, কংগ্রেসের হাতে আগে ৩০টি পুরসভা ছিল। এখন কমে দাঁড়াল ২৩টি। আর টিএরএসের হাতে একটি পুরসভা ছিল না। এখন ৯টি পুরসভার দখল এল। আখেরে ক্ষতি হয়েছে কংগ্রেসেরই।
পুরভোটের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর সবার নজর এখন ১৬ মে-তে। ওইদিন রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের পাশাপাশি ২৯৪টি বিধানসভা আসনের ফলও ঘোষিত হবে।