দলের অন্দরেই বিবাদে জর্জরিত কংগ্রেস, ২০২৪- ভোটের আগে কি মিটবে সেই দ্বন্দ্ব?
দলের অন্দরেই বিবাদে জর্জরিত কংগ্রেস, ২০২৪- ভোটের আগে কি মিটবে সেই দ্বন্দ্ব?
একদিকে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। সেটা শেষ হলেই আবার শুরু হয়ে যাবে ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনের তোরজোর। পর পর ভোট সামাল দিতে কতটা প্রস্তুত কংগ্রেস। এই নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈিতক মহলে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারন ২০২১ সালে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে একেবারেই ভাল ফল করেনি কংগ্রেস। তারপরে আবার একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের অন্দরে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। তার আগে ২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শোচনীয় ফলাফলেই তার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তারপরে একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস সরকারের পতন। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকারের পতন, কর্নাটকে জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকারের পতন। তারপরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দল বদল। শচীন পাইলটের বিদ্রোহে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্যরাজনীতি। এদিকে আবার পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অমরিন্দর সিধুর সংঘাত বাড়ছে। একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের অন্দরেই বিদ্রোহ মাথাচারা দিয়েছে।
বড় নেতাদের বিদ্রোহ
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকেই কংগ্রেসের অন্দরে বিদ্রোহ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। হঠাৎ করে সভাপতি পদ থেকে রাহুল গান্ধীর সরে দাঁড়ানোয় তারই ইঙ্গিত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেসে আদি ও নব্যের দ্বন্দ্ব প্রবল হয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে। সেকারণেই যাঁদের নিরলস পরিশ্রমে লোকসভা ভোটের পরেই মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক এবং রাজস্থানে ভাল ফল করেছিল কংগ্রেস তাঁদের শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে মুখ্যমন্ত্রী না করে কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করায় বিদ্রোহ চরমে উঠেছিল। যার শেষ পরিণতি হয় সিন্ধিয়ার দল বদল এবং মধ্য প্রদেশে কংগ্রেস সরকারের পতন। অন্যদিকে একই ভাবে আদি এবং নব্যের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে রাজস্থানে। গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রী করায় বিদ্রোহী হয়েছিলেন শচিন পাইলট। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস গড় রক্ষা করতে পারলেও অসন্তোষ এখনও ছাইচাপা আগুনের মত জ্বলছে। একই অবস্থা কর্নাটকেও। জোট সরকারের পতনের মূলে কংগ্রেসের বিরোধ বলে প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছিলেন কুমারস্বামী।
উত্তর প্রদেশে ভোট
সামনেই উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। এবারে উত্তর প্রদেশের ভোটে বিজেপির মূল মন্ত্র অযোধ্যার রামমন্দির। এদিকে আজই ডবল ইঞ্জিন সরকারের ফায়দা নিয়ে সরব হয়েছেন মোদী। উত্তর প্রদেশে ইতিমধ্যেই ৪০ জনের প্রার্থী তালিকা তৈরি করে ফেলেছে কংগ্রেস। তাতে সংখ্যালঘু ভোটকে টার্গেট করা হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে উত্তর প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে এবার প্রিয়াঙ্কাকে উত্তর প্রদেশের মানুষ কতটা কাছে টেনে নেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পরিকল্পনা কংগ্রেস করে উঠতে পারেনি। আবার সপা এবং বিএসপির সঙ্গেও জোটে যেতে নারাজ তারা।
পাঞ্জাবে বিরোধ
এদিকে আবার পাঞ্জাব কংগ্রেসেও প্রবল মত বিরোধ তৈরি হয়েছে। পাঞ্জাবে অমরিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অন্দরেই বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অমরিন্দরকে সরিয়ে অন্য মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি উঠেছে।যদিওহাইকমান্ড অনড় রয়েছে সিদ্ধান্তে। অমরিন্দরের নেতৃত্বেই ভোট হবে বলে জানিয়েছেন হাইকমান্ড। অন্যদিকে আবার ছত্তিশগড়েও কংগ্রেস সরকারের অন্দরে বিদ্রোহ দানা বেঁধেছে। ভূপেশ বাঘেলকে সরানোর দাবি উঠেছে। একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের অন্দরে বিরোধ তৈরি হয়েছে। সেই বিরোধ সামসে ২০২৪-র বিধানসভা নির্বাচনে কতটা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে কংগ্রেস তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তারপরে আবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে কে থাকবেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কপিল সিব্বলরা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে গান্ধী পরিবারের একছত্র আধিপত্য নিয়ে।