কেন্দ্রের মাথা হেঁট করে থাকা উচিত, নবি-বিতর্ক নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত রাহুলের
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বরখাস্ত হওয়া বিজেপি নেতাকে মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে নবী মহম্মদ সম্পর্কে তার মন্তব্যের জন্য তিরস্কার করার পরে, বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মোদী সরকারকে নতুন করে এই বিষয়ে আক্রমণ করা শুরু করেছিলেন। কংগ্রেস কেন্দ্রকে আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়ে বলে, " কেন্দ্রে যে দল ক্ষমতায় আছে সেই দলের লজ্জায় মাথা হেঁট করে ফেলা উচিত"।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তার লোকসভা কেন্দ্র ওয়ানাডে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এই কথা বলেন, "দেশের শাসক দলের শাসন ভয়ের আবহ তৈরি করেছে। যে ব্যক্তি ওই মন্তব্য করেছেন শুধু তিনিই নয়, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি এবং আরএসএস একসঙ্গে মিলে এই রাগ, ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করেছে। সত্যি বলতে দেশে এই পরিবেশ একটি দেশবিরোধী কাজ। এটা ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে, এটা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ। এমন সব কাজ দেশকে একদম খাদের কিনারে নিয়ে ফেলে দিচ্ছে।"
রাহুল গান্ধী ওয়ানাডে তিন দিনের সফরে রয়েছেন। তিনি যোগ করেছেন যে "কংগ্রেস দল হিসাবে মানুষের মধ্যে সেতু সেতু তৈরি করে। আমরা এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের সেতু তৈরি করি। আমরা মানুষকে এক সূত্রে বাঁধি। আমরা দেশে দেখছি আরএসএস এবং বিজেপি মানুষের মধ্যে ঘৃণা তৈরী করছে। আমাদের দর্শনের সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা ঘৃণা ও রাগ দিয়ে সমস্যার সমাধানে বিশ্বাস করি না।"
নুপুর শর্মাকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে তা নিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ইনচার্জ কমিউনিকেশন জয়রাম রমেশ বলেছেন, "আদালত খুব সঠিকভাবে বিজেপির মুখপাত্রকে 'এককভাবে দায়ী' করেছে। দেশজুড়ে আবেগের আগুন জ্বলছে'। মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের যা বলেছে এরপর ক্ষমতায় থাকা দলের লজ্জায় মাথা হেঁট করে থাকা উচিত।" জয়রাম রমেশ বলেন যে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে আয়নার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে এবং দেখিয়ে দিয়েছে তাঁরা কতটা ভুল করছে।
কংগ্রেস নেতা আরও বলেছেন যে "এটা কোন নতুন ব্যপার নয় যে বিজেপি সাম্প্রদায়িক আবেগ উস্কে দিয়ে লাভবান হতে চায়। এটাই ওঁদের কাজ। সুপ্রিম কোর্টের কথা আমাদের ভাবনাকে আমাদের লড়াইকে আরও দৃঢ় করেছে। আমরা এই ধ্বংসাত্মক বিভাজনমূলক মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করছি,"
একাধিক টুইট বার্তায়, সিপিআই(এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ক্ষমতাসীন বিজেপিকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে এবং আইন অনুসারে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাতে হবে। "দেশকে বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে , তাদের বিজেপিরই ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত যে ভারতবিরোধী, দেশপ্রেমিক এবং বিভাজনকারী আরও কর্মে লিপ্ত হবে না। আমরা আশা করি নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।"
ইয়েচুরি উল্লেখ করেছেন যে শুধু শর্মা নয়, অন্যান্য বিজেপি মুখপাত্রদেরও টিভিতে নানা জায়গায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে দায়ী করা উচিত। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব হিন্দিতে টুইট করেছেন, "শুধু মুখপাত্রকে নয়, অব নেতাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং দেশে অশান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য শাস্তি হওয়া উচিত।"