তৃণমূল নজর দিতেই ত্রিপুরা নিয়ে হঠাৎ তৎপর কংগ্রেস, বঙ্গের মতোই নিশ্চিহ্ন হওয়ার ভয় দেখছে হাইকমান্ড
তৃণমূল নজর দিতেই ত্রিপুরা নিয়ে হঠাৎ তৎপর কংগ্রেস, বঙ্গের মতোই নিশ্চিহ্ন হওয়ার ভয় দেখছে হাইকমান্ড
ত্রিপুরা নিয়ে বেশি তৎপর হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাতেই ঘুমছুটেছে কংগ্রেসের। বঙ্গের মতো ত্রিপুরাতেও বিজেপি আর তৃণমূলের লড়াইয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না তো কংগ্রেস। সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাইকমান্ড। তড়িঘড়ি তাই ত্রিপুরায় পৌঁছে গিয়েছে দিল্লির প্রতিনিধিদল। সেখানে কংগ্রেসের সাংগঠনিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দিল্লির নেতারা। তৃণমূল আর বিজেপিকে ঠেকাতে কোন রণকৌশলে হাঁটবে কংগ্রেস শিবির সেটা ঠিক করতেই মূলত আলোচনা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গুরুত্ব বাড়ছে তৃণমূলের
পশ্চিমবঙ্গের পর আর কোনও রাজ্যে যদি তৃণমূল শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে সেটা ত্রিপুরা তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রাথমিক ভাবে বাংলার বাইরে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ত্রিপুরার দিকে নজর দিয়েছে। ত্রিপুরায় বাম সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। সেই গেরুয়া ঝড়কে থামাতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। পূর্বের রাজ্যগুলির দিকেই বিশেষ নজর দিতে শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই অসমের এক বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছে তৃণমূল। যদিও অসমে ভোট হয়ে গিয়েছে। বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফিরেছে। আর ত্রিপুরায় ভোট আসন্ন। হাতে ৩ বছর সময় রয়েছে। এই তিন বছরকে পরোদমে কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতি মধ্যেই দফায় দফায় বঙ্গের তৃণমূল নেতারা ত্রিপুরা সফর করতে শুরু করে দিয়েছেন।
আগরতলায় অভিষেক
আগরতলায় অভিষেক পৌঁছতেই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিজেপি শিবিরে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে আগে থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল ত্রিপুরায়। তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা ফ্লেক্স ব্যানার ছিড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই ফ্লেক্স ব্যানার টাঙাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় যুবনেতা দেবাংশু এবং জয়া দত্তকে। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়েও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। অভিষেকের গাড়িতে বাঁশ দিেয় বাড়ি মারা হয়েছে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিিডয়ায় শেয়ারও করেছিলেন অভিেষক। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে অভিষেককে লক্ষ্য করে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। এমনকী বহিরাগত বলেও স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। পাল্টা খেলা হবে স্লোগান দেয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বঙ্গে একুশের ভোটের আগে দিল্লির বিজেপি নেতাদের এই বহিরাগত স্লোগানেই বিদ্ধ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
অভিষেকের চ্যালেঞ্জ
আগরতলায় তাঁর কনভয়ে হামলার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুঙ্কার দিয়েছেন ৩ বছর পর ত্রিপুরা দখল করে দেখাবে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে আগরতলায় রোড শো করবে অভিষেক। সেই রোড শোতে তেমন লোক না হলে ময়দানে নামবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেপ্টেম্বর মাসেই আগরতলায় তিনি জনসভা করতে পারেন মমতা। তার আগে দফায় দফায় ত্রিপুরা সফরে যাবেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মন্ত্রী সাংসদরা। ইতিমধ্যেই তার রোস্টার তৈরি হয়ে গিয়েছে। গতকাল ত্রিপুরায় গিয়ে বিক্ষোভ পথ অবরোধ করেছেন কুণাল ঘোষ। অভিষেকের কনভয়ে হামলার প্রতিবাদে ত্রিপুরার রাস্তায় ঝড় তুলেছিলেন তিনি। ত্রিপুরাকে নিয়ে একেবারে সুকৌশলী পথে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা রয়েছে। কয়েকদিন আগে ত্রিপুরায় আটক করা হয়েছিল প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের ২৩ জন কর্মীকে।
কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল
হঠাৎ করে ত্রিপুরা নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে কংগ্রেস।দিল্লি থেকে দুই কংগ্রেস নেতা উড়ে গিয়েছেন ত্রিপুরায়।কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ পাণ্ডে ও ছত্তিসগড়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি এস সিংহ দেও সেখানে বৈঠক করেছেন দলের ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে কোনও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কিনা সেটা বুঝতেই এই বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরায় তৎপর হতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাইকমান্ড। পশ্চিমবঙ্গের মতো একাধিক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।তাই আগে থেকেই নিজেদের ঘর রক্ষা করতে ময়দানে নেমেছে কংগ্রেস। ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত মানিক্যকে নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। সূত্রের খবর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রসঙ্গও উঠেছিল সেই বৈঠকে। কয়েকদিন আগে ত্রিপুরার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযূষ বিশ্বাসকে ফোন করেছিলেন সোনিয়া ঘনিষ্ঠ নেতা কে সি বেনুগোপাল। এগিেক সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস। কয়েকদিন আগেই দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে ২০২৪-কে টার্গেট করে বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।