মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ নেতারা দিল্লিতে পা রাখতেই ফের কংগ্রেস-কোন্দল ঘিরে জল্পনা! এবার ছত্তিশগড় ঘিরে চড়ছে পারদ
পাঞ্জাব ইস্যুতে রীতিমতো তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। ক্যাপ্টেন অমরিন্দরকে পাঞ্জাবের তখত থেকে সরিয়ে দিতেই দিল্লিতে বিজেপির অমিত শাহের বাড়িতে গত সন্ধ্যেয়ে কংগ্রেসের অমরিন্দরের কনভয় প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে।
পাঞ্জাব ইস্যুতে রীতিমতো তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। ক্যাপ্টেন অমরিন্দরকে পাঞ্জাবের তখত থেকে সরিয়ে দিতেই দিল্লিতে বিজেপির অমিত শাহের বাড়িতে গত সন্ধ্যেয়ে কংগ্রেসের অমরিন্দরের কনভয় প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। ফলে পাঞ্জাব কংগ্রেস নিয়ে রাহুল গান্ধি শিবিরের সিদ্ধান্ত কতটা ঠিক বা ভুল তা নিয়ে আপাতত জাতীয় রাজনীতিতে বিস্তর আলোচনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের ঘনিষ্ঠরা দিল্লির বুকে পা রাখতেই সরগরম দিল্লির রাজনীতি। এদিকে, পাঞ্জাবে মসনদ ঘিরে যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে, তার সমাধান হতে না হতেই ছত্তিশগড়ের বিধায়করা দিল্লি পৌঁছতেই কংগ্রেসের মাথাব্যথা আরও বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
কী ঘটেছে ছত্তিশগড়ে?
উল্লেখ্য, ছত্তিশগড় কংগ্রেসেও দলের মধ্যে ব্যাপক সংঘাতের আবহ দেখা যাচ্ছে। দলের নেতৃত্বে বদল নিয়ে পাঞ্জাবের মতো ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস বিধায়করাও দরবার করছেন দিল্লিতে। তবে পাঞ্জাব কংগ্রেসের থেকে এই ছত্তিশগড় কংগ্রেসের অন্দরে সংঘাতের ঘরানা আলাদা। ছত্তিশগড়ে একটা সময় পর পর কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পদে রদবদলের একটি বিষয় আগে স্থির হয়েছিল বলে খবর। সেই জায়গা থেকে, কংগ্রেসের ভূপেশ বাঘেল কয়েক বছর মসনদে থাকার পর সেই মসনদে অন্য এক কংগ্রেস নেতা বসতে পারেন বলে একটা আলোচনা বহুদিন আগে চলছিল। এদিকে, এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের নেতা তথা ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রী টি এস সিংদেও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিকে পাখির চোখ করে রেখেছেন বলে বাঘেল-পন্থীদের দাবি। আর তা নিয়েই সংঘাত।
ছত্তিশগড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বাঘেল-বার্তা
এদিকে, ছত্তিশগড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ডের মধ্যে অসন্তোষ জারি রয়েছে। এদিকে, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী তাঁর ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন ছত্তিশগড়ের প্রশাসনের ব্যাটন ধরার। যেদিন সোনিয়া বলবেন, তিনি সেদিনই ইস্তফা দিতে রাজি। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর পদে 'রোটেশন' আসলে তা রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে বলে মত পোষণ করেছিলেন ভূপেশ বাঘেল। সেই জায়গা থেকে রীতিমতো চড়ছে রাজনৈতিক পারদ।
মুখ খুলে বিধায়করা কী বলছেন?
এদিকে রাহুল গান্ধিকে ছত্তিশগড়ে সফর করার আবেদন জানিয়ে বাঘেল ঘনিষ্ঠরা দিল্লিতে গিয়েছেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান পি এল পুনিয়ার মাধ্যমে তাঁরা কেবল রাহুল গান্ধিকে ছত্তিশগড়ে সফর করার জন্য আমন্ত্রণ দিতেই দিল্লি এসেছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে, পাঞ্জাবের পর আরও সতর্ক কংগ্রেস হাইকমান্ড। পাঞ্জাবে মূলত, অমরিন্দরকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে সেখানে সিধু ঘনিষ্ঠ চান্নিকে বসিয়েছে রাহুল শিবির। এরপর দেখা যায়, কংগ্রেসের রাজ্য প্রধান পদ থেকে সিধু নিজেই ইস্তফা দেন। এই জায়গা থেকেই খেলা ঘুরতে থাকে বলে মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতির মাঝে অমরিন্দর ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন পরোক্ষে। এদিকে, বর্ষীয়ান অমরিন্দরকে নিয়ে যখন এমন অবস্থা চলছে, তখন দিল্লিতে কপিল সিবার সরব হয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ফলে গোটা পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে যেতে থাকে বলে অনেকে মনে করছেন।
কংগ্রেস বিধায়কদের দাবি
ছত্তিশগড়ের এক বাঘেল ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন যে, পাঞ্জাবের পরিস্থিতি ছত্তিশগড়ে নেই। ফলে পরিস্থিতি এক নয়। মোট ৯০ জন বিধায়কের মধ্যে ৬০ জন বিধায়ক রাজ্যের কংগ্রেস প্রধানকে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। ফলে হাইকমান্ডের সমর্থন ও বিধায়কদের পাশে নিয়ে বর্তমানে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল পরিস্থিতি ভালোই সামলাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।