সুপ্রিমকোর্টে গড়াতে চলেছে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক নাটক! সিন্ধিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
যাবতীয় জল্পনার অবসান করে বুধবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছে পদ্মশিবিরে যোগ দেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আর এরপরেই আরও বেকাদায় পড়ে মধ্যপ্রদেশের কমলানের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। এবার সরকার বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠা কংগ্রেস সুপ্রিমকোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিল। জানা গিয়েছে বেঙ্গালুরুতে যে কংগ্রেস বিধায়করা আছেন, তাঁদের শিবিরে ফেরাতেই এই হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেস।

২২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে দেন
বিজেপির পথে যে তিনি পা বাড়িয়ে দিয়েছেন তা স্পষ্ট হয়ে যায় হোলির দিন সকালেই। মঙ্গলবার সকাল সকাল প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যান প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্যা। সিন্ধিয়া যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মোদীর বাসভবনে ঢোকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। জল্পনা ছিল আগেই। তবে এই ছবি সামনে আসতেই আর সব সন্দেহ চলে যায়। এর পরপরই কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ ১৯ জন বিধায়ক। পরে ইস্তফা দেন আরও বেশ কয়েকজন। মোট ২২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে দেন।

বিধায়কদের নিয়ে পাল্টা দাবি কংগ্রেসের
এদিকে মধ্যপ্রদেশে নাটকে নয়া মোড়। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের পদত্যাগী ২২ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যেতে চান না। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আমরা মহারাজের সঙ্গে এসেছি, কিন্তু আমরা বিজেপিতে যেতে চাই না। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ অঙ্ক বদলাচ্ছে। জানা যায়, এই ১২ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন।

আটকে রাখা হয়েছে বিধায়কদের?
এদিকে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ইস্তফা দেওয়া বিধআয়কদের তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করতে হবে। তবেই তাঁদের ইস্তফা পত্র বিবেচিত হবে। এরপরই কংগ্রেস অভইযোগ করে, কংগ্রেস বিধআয়কদের জোর করে আটকে রাখা হয়েছে কর্নাটকে। তাঁদের ছাড়তে হবে, নয়ত কংগ্রেস সুপ্রিমকোর্টে যাবে।

কী করবেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া?
কংগ্রেসের সঙ্গে ১৮ বছরের সম্পর্ক ছেদের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন মঙ্গলবারই। এরপর বুধবারই পদ্মশিবিরে নাম লেখান কংগ্রেসের হয়ে ৪ বারের সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আর দলবদলে শিলমোহর পড়তেই এবার নিজ রাজ্যে ঘুঁটি সাজাতে ফেরার কথা ছিল সিন্ধিয়ার। যেই কমলনাথের সঙ্গে মনমালিন্যর জেরে দলবদল করলেন, এবার সেই সরকারকে ফেলতে নিজের অনুগতদের সঙ্গে পরামর্শ করতেই রাজ্যে ফেরার কথা ছিল সিন্ধিয়ার। পাশাপাশি এক বিশাল সমাবেশ হওয়ার কথাও ছিল। তবে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন কিছুই হয়নি।

ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে বিজেপি
এদিকে কংগ্রেসের এই দাবিতে দমছে না বিজেপি। তারা নিজেদের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছিল আগেই। তবে সূত্রের খবর, সরকার ফেলা ও নতুন সরকার গঠনের যেই বৈঠক হয়েছিল, তাতে বিজেপির অন্দরেই দেখা যায় কলহ। জানা গিয়েছে সেই বৈঠকেই বচসায় জড়ান বিজেপি বিধায়ক নরোত্তম মিশ্রের সমর্থক ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সমর্থকরা। মনে করা হচ্ছে বিজেপি সরকার গঠন করলে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই টানাপোড়েনের জেরেই এই কলহ শুরু হয়।

কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক নাটকও গড়িয়েছিল সুপ্রিমকোর্টে
প্রসঙ্গত, এর আগে কর্নাটকে বিধায়কদের ইস্তফার বিষয়টি গড়িয়েছিল সুপ্রিমকোর্টে। এছাড়া মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের বিষয়টিও সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছিল।