'কিঞ্চিৎ কাশ্মীরিয়ত আমার মধ্যেও আছে' , মোদী-শাহকে নিশানা করে ভূস্বর্গ নিয়ে কী দাবি করলেন রাহুল
'কিঞ্চিৎ কাশ্মীরিয়ত আমার মধ্যেও আছে' , মোদী-শাহকে নিশানা করে ভূস্বর্গ নিয়ে কী দাবি করলেন রাহুল
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবার সরব হলেন কাশ্মীর ইস্যুতে। কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন তিনি। কেন্দ্র শাসিত কাশ্মীরে প্রথম সফরেই মোদী-শাহকে নিশানা করেছেন রাহুল। মোদী সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন সংসদে তাঁকে কাশ্মীর ইস্যুতে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এখানে নির্বাচন করাতে হবে বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা।
কাশ্মীরের অধিকার ফেরানোর দাবি
পেগাসাস ইস্যুর পর এবার কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি অভিযোগ করেছেন সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। গুলাম নবি আজাদ তাঁকে সংসদে কাশ্মীরের ইস্যুিট উত্থাপন করতে বলেছিলেন। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বারবার তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে তাঁকে বলার অনুমতি দেয়নি মোদী সরকার। এমনই অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শ্রীনগরে পা রেখেই কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা। ২০১৯ সালে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর এই প্রথম ভূস্বর্গে পা রাখলেন তিনি। দিল্লিতে থাকলেও তাঁর মধ্যে যে কিঞ্চিৎ কাশ্মীরিয়ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা। রাহুল বলেছেন কাশ্মীরের সঙ্গে আমি নিজেকে একাত্ম বোধ করি। কারণ আমার পরিবার দিল্লিতে থাকার আগে এলাহাবাদে থাকতেন। আর এলাহাবাদে থাকার আগে থাকতেন এই কাশ্মীরে। তাই আপনাদের কষ্ট এবং অনুভুতি গুলো আমি ভাল করে বুঝতে পারি। কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গে আমার একটা আত্মিক যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কর্মিসভা থেকে হুঙ্কার রাহুলের
শ্রীনগরে নতুন পার্টি অফিস খুলেছে কংগ্রেস। সেই উপলক্ষ্যেই রাহুলের শ্রীনগর সফর। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে দিয়ে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করে রাহুল গান্ধী বলেন, 'আমি আপনাদেরই একজন। এই নতুন অফিস নতুন সূচনা করবে। আমি আপনাদের জন্য সেই ভালবাসা এবং সম্মান সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।' রাহুল অভিযোগ করেছেন তিনি আগেও কাশ্মীরে আসার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বিমানবন্দরে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছিল। রাহুল বলেেছন,'আজ যখন আসতে পেরেছি তখন আবারও দ্রুত আসব।' শ্রীনগরের জনপ্রিয় হজরত বল দরগাতেও গিয়েছিলেন রাহুল। ইনস্টাগ্রামে সেই ছবিও শেয়ার করেছেন কংগ্রেস নেতা। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরেই সেখানে যেতে চেয়েছিলেন রাহুল। ২ বছর আগে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছিল শ্রীনগর বিমানবন্দরেই। কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখানে জরুরি অবস্থা চলছে বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
৩৭০ ধারা বাতিল
২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পরেই কাশ্মীর নিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন মোদী সরকার। ৫ অগাস্ট কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করার কথা ঘোষণা করে মোদী সরকার। কাশ্মীর এবং লাদাখকে দুটি পৃথক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীরে জরুরি অবস্থা জাির করা হয়েছিল। সেখানকার সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়। দীর্ঘ এক বছর ধরে গৃহবন্দি ছিলেন ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের আগে পর্যন্ত মুফতির দল পিিডপির সঙ্গে জোট করেই কাশ্মীরে সরকারে ছিল বিজেপি। কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পর সেই সম্পর্কে চিড়ধরতে শুরু করেছিল। তারপরেই জোট ভেঙে দেয় বিজেপি।
কাশ্মীরে ডিলিমিটেশন
কয়েকদিন আগেই দিল্লিতে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কাশ্মীরে ভোটের জন্য হয়েছিল সেই বৈঠক। তাতে যোগ দিয়েছেন কাশ্মীরের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই। ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, গুলাম নবি আদাজ, মেহবুবা মুফতি সহ ১৪ জন। সেই বৈঠকে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলিকে ডিলিমিটেশনের কাজে সহযোগিতা করার আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। সেই বৈঠক থেকে ফেরার পর পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি রীতিমতো মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি কিছুতেই এই কাজে কেন্দ্রকে সহযোগিতা করবেন না। যতক্ষণ না কাশ্মীর তার পূর্ণ রাজ্যের অধিকার ফিরে পাচ্ছে। এমনকী তিনি কোনও ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন।