সংগঠন ঠুনকো কিন্তু ভোট বড় বালাই; তাই সিধু সরাসরিই চেয়ে বসলেন সংখ্যালঘু ভোট
নভজোত সিং সিধুকে এক খ্যাতনামা ক্রিকেট সাংবাদিক একসময়ে কটাক্ষ করে বলেছিলেন "স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার"। কারণ, ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম টেস্ট সিরিজে তাঁর খারাপ প্রদর্শন।
নভজোত সিং সিধুকে এক খ্যাতনামা ক্রিকেট সাংবাদিক একসময়ে কটাক্ষ করে বলেছিলেন "স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার"। কারণ, ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম টেস্ট সিরিজে তাঁর খারাপ প্রদর্শন। সেই সাংবাদিক আজ আর বেঁচে নেই, থাকলে রাজনীতিক সিধুর কান্ডকারখানা দেখে কী বলতেন তা সত্যিই আগ্রহের বিষয়।
সাম্প্রতিককালে, পাকিস্তানে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়া বা সেখানকার সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন করা বা পুলওয়ামায় "সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে পাকিস্তানের সব মানুষ খারাপ নয়" জাতীয় মন্তব্য করে প্রবল জনরোষে পড়েন প্রাক্তনএই ক্রিকেটার এবং বর্তমানে পাঞ্জাব সরকারের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। এমনকী, তাঁর পাকিস্তানে যাওয়ার ঘটনায় এবং পুলওয়ামা নিয়ে মন্তব্যে রুষ্ট হন তাঁর নিজের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং স্বয়ং।
মুসলমানদের সংঘবদ্ধ হয়ে ভোট দিতে বললেন সিধু
এবারে লোকসভা নির্বাচনে সিধু জন্ম দিলেন আরও একটি বিতর্কের। বিহারের কাটিহারে, যেখানে বেশ বড় সংখ্যক মুসলমানের বাস, সেখানে প্রচারে গিয়ে সমস্ত মুসলমানকে একজোট হয়ে ভোট দিতে আর্জি জানালেন এবং বললেন তা সম্ভব করে দেখাতে পারলে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত। বিজেপির প্রাক্তন এই সাংসদের মুখে এমন মন্তব্য শুনে রে-রে করে উঠেছে বিরোধীরা। ক'দিন আগেই বিএসপি নেত্রী মায়াবতী মুসলমান ভোট চাইতে গিয়ে ওই একই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের রোষানলে পড়েছেন। বিরোধীরা উৎসুক জানতে যে এবারে সিধুর কপালে কী রয়েছে।
সংখ্যাগুরু ভোট চলে গিয়েছে বিজেপিতে, আঞ্চলিক দলগুলি থাবা মেরেছে সংখ্যালঘু ভোটে
মুসলমানদের কাছে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ভোট চাওয়াটা আপত্তিজনক হলেও বিজেপি-বিরোধী দলগুলি জানে যে নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে ওই সম্প্রদায়ের ভোটটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একদিকে যখন সংখ্যাগুরু ভোটটি একত্রে বিজেপির বাক্সে ঢুকছে এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলিও মুসলমান ও অন্যান্য বিভিন্ন জাতের ভোটব্যাঙ্কগুলি দখল করতে চাইছে, তখন কংগ্রেস তার দুর্বল সংগঠন নিয়েও মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে অন্তত কিছু সংখ্যালঘু ভোট যাতে পাওয়া যায়। কিন্তু, শুধুমাত্র মুখে এই ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করে কংগ্রেসের নেতাদের কমিশনের ভর্ৎসিত হয়ে সম্ভাবনাই বেশি কারণ ভোটের বাক্সে চমকপ্রদ ফল করতে গেলে বাস্তবে দৃঢ় সংগঠন থাকা জরুরি আর সেটা এই মুহূর্তে কংগ্রেসের নেই। মুসলমানদের সংঘবদ্ধ হয়ে ভোট দেওয়া নতুন ঘটনা নয় কিন্তু কংগ্রেসের ভয় বিরোধীরা প্রায় সবাই তাদের পালের হাওয়া কেড়ে নেবে।
[আরও পড়ুন: ফিরদৌসকে ভোটের প্রচারে নামানো তৃণমূল কংগ্রেসের সেমসাইড গোল ]
রাজনীতিক সিধু ততটা 'স্ট্রোকলেস' নন
সিধু অবশ্য আছেন সিধুতেই। খেলোয়াড়ি জীবনের প্রথম দিকে "স্ট্রোকলেস ওয়ান্ডার" হলেও পরে তাঁকেই বলা হাত "সিক্সার সিধু"। রাজনীতিকের জীবনে অবশ্য ততটা স্ট্রোকলেস সিধু নন একথা তাঁর সবচেয়ে বড় শত্রুও মানবে।