বিজেপি বিরোধিতা ছেড়ে একে অপরের বিরুদ্ধে কেন সুর চড়াচ্ছে প্রিয়াঙ্কা-মায়াবতী? তৈরি কোন নয়া সমীকরণ!
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই বছর। সাধারণত এরকম পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে বিরোধী দলগুলো একসঙ্গে এসে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে জোট বাধা নিয়ে রূপরেখা তৈরি করবে। তবে উত্তরপ্রদেশে এখন অন্য চিত্র। সেখানে এখন একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও বিএসপি প্রধান মায়াবতী।
একে অপরকে আক্রমণ করছে কংগ্রেস-বিএসপি
তবে যে সময় কেন্দ্র এবং রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা বিজেপির বিরুদ্ধে এক সঙ্গে সুর চড়ানোর কথা কংগ্রেস-বিএসপি-র, সেই সময় একে অপরকে আক্রমণ করছে এই দল। এই লড়াইয়ের নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল স্তরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। যাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক সমীকরণের উপর ভর করা বিএসপি-র এখন অস্তিত্বের লড়াই।
বিএসপি-র সমীকরণ
ঐতিহাসিক ভাবে বিএসপি-র উত্থান হয়েছিল দলিত রাজনীতি থেকে। তবে সময়ের বিবর্তনে, বিএসপি হয়ে ওঠে দলিত, মুসলিম ও উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণদের দলে। এই বিবর্তণের প্রমাণ, ২০০৭ সালের নির্বাচনে বিএসপির স্লোগান - 'হাতি নেহি, গণেশ হ্যা, ব্রহ্ম-বিষ্ণু-মহেশ হ্যা।' আর এই সমীকরণেই উত্তরপ্রদেশ মসনদ দখল করতে সমর্থ হয়েছিলেন মায়াবতী।
দলিত, মুসলিম, ব্রাহ্মণদের সমীকরণ কার?
তবে আদতে এই দলিত, মুসলিম, ব্রাহ্মণদের সমীকরণটি কংগ্রেসের। স্বাধীনতার পর থেকে এই সমীকরণের দৌলতেই কংগ্রেস এত বছর রাজত্ব করেছে। তবে তা বদলে যায় ১৯৮০ ালের মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট পেশের পর। দলিতরা বিএসপি-র দিকে ঝুঁকে পড়ে। ব্রাহ্মণরা চলে যায় বিজেপির দিকে। আর মুসলিমরা সমাজবাদী পার্টি ও বিএসপি-র মধ্যে বিভাজিত হয়ে যায়।
বিজেপিতে মাত দিতে চাইছে কংগ্রেস
তবে কংগ্রেস তাদের সেই পুরোনো সমীকরণকে কাজে লাগিয়ে ফের মাত দিতে চাইছে বিজেপিকে। আর এই কাজের দায়িত্বে আছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এর এতেই ভীত বিএসপি। কারণ প্রিয়াঙ্কা নিজের কাজে সফল হলে বিএসপি-র বিশাল বড় ক্ষতি হবে। শুধু তাই নয় অস্তিত্বের সংকট দেখা দেবে এই দলের।
বিএসপির বাজে হাল
জাতীয় দল হলেও উত্তরপ্রদেশের বাইরে দলিতদের নিজেদের দিকে টানতে খুব একটা সফল হয়নি ৩৫ বছর বয়সী বিএসপি। অপরদিকে কংগ্রেস কিন্তু রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশএ নিজেদের দলিত ভোটব্যাঙ্ক বজায় রেখেছে। এদিকে মুসলিমরাও বিএসপির উপরে ভরসা হারাচ্ছে।
রাজনৈতিক টানাপোড়েন
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৯৮টি মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করিয়ে আদতে বিএসপি, বিজেপির লাভ করে দিয়েছিল। আর এর জেরে, ধর্মীয় মেরকরণের বাজিতে বিজেপি মাত দিয়ে বেরিয়ে যায় বাকি সব দলকে। আরও একটি কারণে মুসলিমরা বিএসপিকে ভরসা করতে পারে না, তা হল ১৯৯৫ থেকে ২০০০ পর্যন্ত তিনবার বিজেপির সঙ্গে সরকার গঠন করেন মায়াবতী। আর কংগ্রেস যাতে এর ফায়দা না তুলতে পারে, তাই উঠে পড়ে লেগেছেন মায়াবতী।
'বন্ধু' চিনের সঙ্গে গোপন সন্ধি পাকিস্তানের? লাদাখ দখল করতে নয়া ব্লুপ্রিন্ট বেজিংয়ের!