মোদীকে প্রধানমন্ত্রী সমতুল্য নিরাপত্তার দেওয়ার দাবী খারিজ করল কেন্দ্র
আগেও বহুবার দেখা গিয়েছে জঙ্গি আশঙ্কার কথা বলে বহু নেতা নিরাপত্তা বাড়ানোর আর্জি জানান। যেমন এবারটা জানিয়েছিল বিজেপি। ২৭ অক্টোবর পাটনায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণে মূল 'টার্গেট' যে মোদীই ছিলেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন মুজাহিদিনি জঙ্গিরাও। তার পরেই দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবী জানায় বিজেপি। তাদের দাবী প্রধানমন্ত্রীর মতোই এসপিজি নিরাপত্তা দেওয়া হোক মোদীকে। কিন্তু বিজেপির এই দাবী সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে, মোদীর সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রর। তবে তাই বলে মোদীকে এসপিজি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।
রাজীব গান্ধীর নিরাপত্তার জন্য একজন সাব ইন্সপেক্টরও দেওয়া হয়নি : কংগ্রেস
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কার উপর কতখানি হামলার আশঙ্কা তার উপর নিরাপত্তার বিষয়টা সুনিশ্চিত করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্দে জানিয়েছেন, মোদী এমনিতেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের জেড প্লাস সুরক্ষা পান। এনএসজির ব্ল্যাক ক্যাট কম্যান্ডোরাও তাঁর নিরাপত্তায় রয়েছে। মোদীর প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকায় সেই নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে একইসঙ্গে তিনি একথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়, তা আইন-বিরুদ্ধ।
মোদী ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার মধ্যে সবচেয়ে বড় তফাত হল প্রধানমন্ত্রীর নিরপত্তার দায়িত্বে এসপিজি ও মোদীর নিরাপত্তায় রয়েছে এনএসজি। ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর এই এসপিজি তৈরি হয়েছিল। প্রথমে শুধু প্রধানমন্ত্রীর জন্যই এসপিজি-র নিরাপত্তা থাকত। রাজীব গান্ধীর হত্যার পরে আইন বদলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকেও এসপিজি দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, অটল বিহারি বাজপেয়ী এসপিজি সুরক্ষা পান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অনেকটাই ফারাক রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে।
মোদীর নিরাপত্তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ক্রমেই চরমে পৌছচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান একের পর পর ইস্যু তৈরি করে ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতে চাইছে বিজেপি। পাটনা বিস্ফোরণকে সামনে রেখে এখন মোদীর নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিকেই হাতিয়ার করছে তারা। এবিষয়ে অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষা করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও । কংগ্রেসের বক্তব্য, পাটনা বিস্ফোরণে মোদী টার্গেট হলেও প্রাণ গিয়েছে সাধারণ মানুষের। বিজেপি যদি বলত মোদীর জনসভায় যারা যাচ্ছেন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টা সুনিশ্চিত করা হোক, সঙ্গে মোদীর নিরাপত্তাও জোরদার করা হোক তবে বিজেপির জনদরদী দিকটা সামনে আসত। কিন্তু তা না বলে শুধু মোদীর সর্বোচ্চ জেড প্লাস নিরাপত্তা বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী সমতুল্য নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য চিৎকার করছে বিজেপি। এতেই বোঝা যায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে বিজেপির কোনও মাথা ব্যাথা নেই। বিজেপি স্বার্থপেরর মতো চিন্তা করছে। এ বিষয়ে নিরাপত্তার অভাবে রাজীব গান্ধীর হত্যাকান্ডেরর প্রসঙ্গ টেনে এনে বিজেপির বক্তব্যকে আবেগ দিয়ে কাটতে পিছু হঠছে না কংগ্রেসও।