কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা প্রভাব পড়বে ভারতীয় রাজনীতিতে! দলকে আদৌ জুড়তে পারবেন রাহুল গান্ধী
কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা প্রভাব পড়বে ভারতীয় রাজনীতিতে! দলকে আদৌ জুড়তে পারবেন রাহুল গান্ধী
৭ সেপ্টেম্বর তামিল নাড়ু থেকে ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হয়। সাংসদ রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে এই ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হয়েছে। জানুয়ারিতে কাশ্মীরে পৌঁছে এই যাত্রা শেষ হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করচে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এই যাত্রা কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করবে। রাহুল গান্ধীর প্রতিচ্ছবি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে উঠে আসবে বলে মনে করছেন। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের একাংশ মে করছেন, ভারত জোড়ো যাত্রা কোনও একটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে করলে আরও ভালো সাড়া পাওয়া যেত।
জানুয়ারিতে কাশ্মীরে শেষ হবে যাত্রা
ভারত জোড়ো যাত্রা ৩,৫৭০ কিলোমিটারের পদযাত্রা। ২০ নভেম্বর রাহুল গান্ধীর মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুর জেলায় প্রবেশ করবে। তার সঙ্গে সঙ্গে রাহুল গান্ধীর এই পদযাত্রার অর্ধেক পথ অতিক্রম হবে। ৭ নভেম্বর কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা মহারাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। মূলত কর্মীসংগঠনকে লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যেই এই ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু কংগ্রেস তরফে দাবি করা হয়েছে, আরএসএস ও বিজেপি দেশের ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। হিংসা, দ্বেষের জেরে দেশ বিভক্ত হতে বসেছে। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যেই কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা। ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হওয়ার সময় রাহুল গান্ধী এই মন্তব্য করেছিলেন। সেই সুরে সুর মেলালেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ।
ভারত জোড়ো যাত্রার রাজনৈতিক প্রভাব বৃহত্তর
সংবাদ সংস্থাকে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসলাম শের খান বলেন, এই ভারত জোড়ো যাত্রাটি ভারতীয় রাজনীতির ওপর বৃহত্তর প্রভাব ফেলবে। আরএসএস ও বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে রাহুল গান্ধীকে একজন হালকা রাজনীতিবিদ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হয়েছে, যাঁকে আদৌ ভরসা করা যায় না। আসলাম শের খান বলেন, এই ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমে রাহুল গান্ধী ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর প্রসাঙ্গিতা দেশবাসীকে বোঝাতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, বার বার বিজেপি ও আরএসএস কংগ্রেসকে পরিবারবাদী দল বলে ব্যঙ্গ করেছে। কিন্তু রাহুল গান্ধী বা গান্ধী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এমনকী রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের কোনও বড় পদে নেই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত জোড়ো যাত্রা। এই সমস্ত পদক্ষেপ ইঙ্গিত করে, রাহুল গান্ধী ভারতীয় রাজনীতিতে লম্বা সময়ের জন্য এসেছেন।
প্রত্যাশিত সাড়া জাগাতে পারেনি এই পদযাত্রা
কংগ্রেস যদিও বার বার প্রচার করছেন, ভারত জোড়ো যাত্রাতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ কংগ্রেসের সেই দাবি নস্যাৎ করেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এই ভারত জোড়ো যাত্রা ১৫০ দিনের। ৩,৫৭০ কিলোমিটারের পদযাত্রা। যে ধরনের সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছিল, সেই ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের যাত্রা একটা প্রভাব ফেলবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে একাধিক বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব লোকসভা ভোটে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারত জোড়ো যাত্রার মধ্যেই হিমাচল ও গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচন ও তার ফলাফল প্রকাশ পাবে। এই দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ভারতো জোড়ো যাত্রার ওপর পড়বে বলে মনে করছে।
নির্দিষ্ট ইস্যুতে যাত্রা
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, কংগ্রেস একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে যাত্রা করলে, এর প্রভাব অনেকটা বেশি পড়ত। বিজেপি ও আরএসএসের বিরুদ্ধে দেশকে বিভাজনের অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতেই এই যাত্রা বলে কংগ্রেসের তরফে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে। কিন্তু রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় একাধিক বিষয় উঠে এসেছে। যেখানে সম্প্রীতির বার্তা চাপা পড়ে যাচ্ছে। বিজেপিতে লালকৃষ্ণ আডবানীর নেতৃত্বে রথযাত্রা করা হয়েছিল নয়ের দশকে। মূলত রাম মন্দির নির্মাণে গণসংহিকে কেন্দ্রকে করে এই যাত্রা হয়েছিল। এই যাত্রায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। সেই ধরনের সাড়া পেতে এই যাত্রাকে একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারত।
তৃণমূল কংগ্রেসের 'বাচাল নেতা’ কুণাল ঘোষ, কুরুচিকর নিশানা বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের