বিজেপি জিতলেই যেন স্বস্তি কংগ্রেসের! কপালে চিন্তার ভাঁজ সিদ্দারামাইয়া-কুমারস্বামীদের
মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের পরই লড়াই গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট উভয় পক্ষকেই নির্দেশ দিয়েছিল তাঁদের পক্ষে কত বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তা হলফনামা আকারে জমা দিতে।
বিজেপি জিতলেই যে তাঁদের স্বস্তি! কারণ উপনির্বাচনের মুখে কর্ণাটকে কংগ্রেস ও জেডিএস ভয়ে কাঁপছে। তাঁদের ভয়, কখন বিজেপি ফের থাবা বসায়। ভেঙে তছনছ করে দেয় পার্টিকে। একেবারে জবুথবু অবস্থা বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া ও কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর।
উপনির্বাচনের আগে ও পরে
আগামী ৫ ডিসেম্বের কর্ণাটকে উপনির্বাচন বিতর্কিত ১৫টি কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের জেতা-হারার উপর নির্ভর করছে কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ভবিষ্যৎ। বিজেপি যদি সাতটার বেশি আসন পায় বিজেপির সরকার পড়ার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। আর যদি সাতটার কম আসনে জেতে বিজেপি, তখনই বিপাকে পড়বে ইয়েদুরাপ্পা সরকার।
কংগ্রেস ও জেডিএস সঙ্ঘবদ্ধ থাকলে
সেক্ষেত্রে কংগ্রেস ও জেডিএস সঙ্ঘবদ্ধ থাকলে পড়ে যেতে পারে বিজেপির সরকার। কিন্তু কংগ্রেস বা জেডিএস ভয় পাচ্ছে সেই সঙ্ঘবদ্ধ থাকা বা রাখাকেই। কেননা কংগ্রেস-জেডিএস ভেঙেই বিজেপি সরকার গড়েছে। এখন বিজেপি সাতটির কম আসনে জেতলে ফের কংগ্রেস ও জেডিএসের উপর থাবা বসাবে। ভাঙিয়ে নেবে তাদের বিধায়কদের।
ভাঙন চিন্তাই কুরে কুরে খাচ্ছে কংগ্রেস-জেডিএসকে
এখন এই ভাঙন চিন্তাই উপনির্বাচনের আগে কুরে কুরে খাচ্ছে কংগ্রেস ও জেডিএসকে। সম্প্রতি এক বহিষ্কৃত বিধায়ক হুঙ্কার ছেড়েছেন কংগ্রেসের ৩৫ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ওই বহিষ্কৃত বিধায়ক রমেশ জারখিওলিই একা ১৭ বিধায়ককে ভাঙিয়ে কুমারস্বামী সরকারের কোমর ভেভে দিয়েছিলেন।
ভোটে জিতলেও স্বস্তিতে থাকবে না কংগ্রেস-জেডিএস
আবার যেহেতু তিনিই হুঙ্কার ছেড়েছেন, তা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার নয়। তাই ভোটে জিতলেও স্বস্তিতে থাকবে না কংগ্রেস ও জেডিএস। কংগ্রেস ও জেডিএসের কাছে এখন ভোটে জেতার থেকেও মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ দলের বিধায়কদের ধরে রাখা। তারপর তো ভোটে জিতলে বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে পারবে।
বিধায়ক ভেঙে বিজেপিকে সমর্থন
তা না হলে একদিকে ভোটে জিতে, অন্যদিক দিয়ে বিধায়ক ভেঙে বিজেপিকে সমর্থন করলে আর কী লাভ! উল্লেখ্য কুমারস্বামী সরকারকে উৎখাত করে ইয়েদুরাপ্পা সরকার গড়েছিল কর্ণাটকে। দলত্যাগ বিরোধী আইন না মানায় ১৫ জন বিধায়ককে বরখাস্ত করেছিলেন স্পিকার, তারপর ইয়েদুরাপ্পা সরকার আস্থা ভোটে জিতে সরকার গড়ে।
বিধায়কদের সামনে টাকার হাতছানি
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমানে বিরোধী দলনেতা একা হাতে সব দিক সামলাচ্ছেন। তিনিও সন্দিগ্ধ দলের ভাঙন রোখা নিয়ে। কারণ বিধায়কদের সামনে টাকার হাতছানি। সেই হাতছানি কতদিন ঠেকিয়ে রাখবেন তিনি! তারপর বহিষ্কৃত বিধায়ক যখন কংগ্রেসকে বিধানসভা খালি করে দেওয়ার হুঙ্কার ছাড়েন ভীতি বাড়াই স্বাভাবিক।
বিজেপি প্রস্তুত হয়েই আছে বিরোধীদের ভাঙতে
কংগ্রেস মনে করছে, উপনির্বাচনে ভালো ফল করলে তাঁদের জলে এবং জেডিএসেও ভাঙন সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যাবে। বিজেপি প্রস্তুত হয়েই আছে বিরোধীদের ভাঙতে। বরং বিজেপি ভালো ফল করলে ভাঙ সম্ভাবনা কম হবে কংগ্রেস বা জেডিএসে। তাই ভোটে জেতার থেকে দলকে অটুট রাখাই তাঁদের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে।