
ব়্যাগিংয়ের নামে ইন্দোরের মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার, অভিযোগ দায়ের
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজের নবাগত পড়ুয়াদের ব়্যাগিংয়ের নামে অশালীন কাজ কর্ম করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির কলেজের সিনিয়র পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ক্লাস শেষের পর কলেজের প্রথমবর্ষের পড়ুয়াদের সিনিয়রা তাঁদের ফ্ল্যাটে ডেকে পাঠান। সেখানেই তাঁদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করা হয়। প্রথমবর্ষের পড়ুয়ারা ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে অভিযুক্ত কোনও পড়ুয়ার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

প্রথমবর্ষের পড়ুয়াদের অভিযোগ
ইন্দোরের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন, ব়্যাগিংয়ের নামে তাঁদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ক্লাস শেষের পর সিনিয়রদের ফ্ল্যাটে যেতে হবে। যাঁরা দেরিতে সিনিয়রদের ফ্ল্যাটে পৌছেছিলেন, তাঁদের কান ধরে ওঠ-বোস করানো হয়। অভিযোগে প্রথমবর্ষের পড়ুয়ারা জানান, এরপরেই তাঁদের ওপর অত্যাচারের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। তাঁদের মহিলা সহপাঠীদের উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করতে বাধ্য করা হয়। সহপাঠীদের একে অপরকে থাপ্পর মারতে বলা হয়। জানানো হয়, যতক্ষণ না সিনিয়রদের মন ভরছে, থাপ্পর মেরে যেতে হবে। বালিশের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক তৈরি করতে জোর করা হয়। প্রথমবর্ষের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, শুধু ফ্ল্যাটের মধ্যেই ব়্যাগিং সীমাবদ্ধ ছিল না। লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, যেখানে সিনিয়রদের সঙ্গে দেখা হতো, সেখানেই তাঁরা ব়্যাগিংয়ের নামে অত্যাচার করতেন।

সিনিয়রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
প্রথমে পড়ুয়ারা তাঁদের সিনিয়রদের বিরুদ্ধে কয়েকজন অধ্যাপকের কাছে অভিযোগ জানান। তবে সেই অধ্যাপকরা অভিযোগে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি। অধ্যাপকরা সেই সময় জানিয়েছিলেন, মানসিক বিকাশের জন্য ব়্যাগিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। এরপরেই তাঁরা ইউজিসি অ্যান্টি ব়্যাগিং হেল্পলাইনে অভিযোগ করেন। সেখানে তাঁরা সিনিয়রদের বিরুদ্ধে অপ্রাকৃতিক যৌনতা সহ অশ্লীল কাজে বাধ্য করার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। জানা যায় অভিযোগে প্রথমবর্ষের পড়ুয়ারা বেশ কিছু অডিও এবং ছবি যুক্ত করেছে। ইউজিসি অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মেডিক্যাল কলেজের ডিনকে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়। ইন্দোরের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজের ডিন স্থানীয় স্থানীয় অজ্ঞাত সিনিয়র পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ডিন সঞ্জয় দীক্ষিতের বক্তব্য
ইন্দোরের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজের ডিন সঞ্জয় দীক্ষিত বলেন, ইউজিসির কাছ থেকে মেল পাওয়ার পরেই কলেজের অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয়। তারপরে স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংযোজিত থানার পুলিশ আধিকারিক তেহজিব কাজি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, দীক্ষিত জানিয়েছেন, হোস্টেল থেকে বিতাড়িত ছাত্রদের তালিকা পুলিশ চেয়েছে। বুধবার পুলিশের কাছে সেই তালিকা তুলে দেওয়া হবে।