কোড নেম 'বাঁদর', বালাকোট স্ট্রাইকের পর ডোভালকে কী বার্তা দিয়েছিলেন বায়ুসেনা প্রধান
২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি। ভোর ৩টে ৪৫ মিনিট। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে ফোন করেছিলেন এয়ার চিফ মার্শাল বিএস ধানোয়া। বিশেষ আরএএক্স নম্বরে সেই ফোনটি গিয়েছিল ডোভালের কাছে। সেই ফোনে ধানোয়া ডোভালকে বার্তা দেন, বাঁদর মারা গিয়েছে। বার্তাটির অর্থ ছিল, জইশ জঙ্গিরা খতম হয়েছে।
পাকিস্তানের বালাকোটে অবস্থিত জইশ জঙ্গি ঘাঁটিতে হানা দেয় ভারত
এই একই ধরনের বার্তা দিতে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং প্রতিরক্ষা সচিবকে (র) ফোন করেছিলেন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া। এই অভিযানের সাফল্য়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। উল্লেখ্য, এই অভিযান চালানো হয়েছিল পাকিস্তানের বালাকোটে অবস্থিত জইশ জঙ্গি ঘাঁটিতে।
যেভাবে পাকিস্তানি বায়ুসেনাকে বোকা বানায় ভারত
এই অভিযানের আগে পাকিস্তানি বায়ুসেনাকে বোকা বানাতে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান রাজস্থানে স্ক্র্যাম্বেল করা হয়েছিল। এর জেরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং সিন্ধ প্রদেশে বশি তৎপর ছিল পাক বায়ুসেনা। সেই সুযোগেই বালাকোটে ভারত এই অভিযান চালায়। যেই সময় এই অভিযান চালানো হয়, সেই সময় পাকিস্তানের নিকটতম যুদ্ধবিমান অন্তত ১৫০ কিলোমিটার দূরে ছিল।
ইচ্ছে করেই ২৬ ফেব্রুয়ারি চালানো হয়েছিল অভিযান
ভারতীয় বায়ুসেনা ইচ্ছে করেই ২৬ তারিখে এই অভিযান চালিয়েছিল। কারণ সেই রাতটি অমাবস্যা ছিল। এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি পীর পাঞ্জাল পর্বতমালার নিচ দিয়ে যায় গিয়েছিল। এর ফলে পাকিস্তানের রেডারে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ধরাও পড়েনি। সেদিন ভারতীয় সময়ে ভোর রাত ৩টে ৩০ মিনিটে ৯০ কিলো ওজনের ওয়ারহেড 'হোম'-এ হানা দেয়।
পুলওয়ামা হামলা
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিস্ফোরক-বোঝাই গাড়ি চালিয়ে আসা এক আত্মঘাতী জঙ্গি কাশ্মীরের কাছে পুলওয়ামায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের একটি কনভয়ের উপর আক্রমণ চালায়, এই ঘটনায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়। এই হামলার পাল্টা জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ু সেনা বালাকোটের জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি শিবিরে আঘাত হানে।
পাকিস্তানি বায়ু সেনা পাল্টা হামলা চালিয়েছিল
বালাকোট পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অবস্থিত এবং ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের মাটিতে বিমান হানা চালায় ভারত। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় পরিস্থিতি এতটাই অশান্ত হয়ে উঠেছিল যে মনে হয়েছিল দ্বৈরথ অবশ্যম্ভাবী। পরের দিন, পাকিস্তানি বায়ু সেনা পাল্টা অভিযান চালায় কিন্তু তা কোনও আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়।
পিছু হটতে বাধ্য হয় পাকিস্তান
যদিও সেই বিমানযুদ্ধে একদিকে যেমন ভারত পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ বিমানকে গুলি করে নামিয়েছিল, অন্যদিকে ভারতও তাদের একটি মিগ-২১ বিমান হারায় এবং পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান থেকে বেরোতে বাধ্য হওয়া সেই বিমানের চালককে পাকিস্তানী সেনা আটক করে৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের চাপের জেরে ভারত, পাকিস্তান দুইপক্ষই সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে এবং আটক বিমানচালককে ভারতের হাতে ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান।