দেশের মানুষের জন্য করোনা মহামারীর থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি করতে চলেছে কয়লা
দেশের মানুষের জন্য করোনা মহামারীর থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি করতে চলেছে কয়লা
কোভিডের পর এবার চিন্তা বাড়াচ্ছে কয়লার অভাব। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে এয়ার কন্ডিশনার কিংবা স্মার্টফোন চার্জ করতেও বেগ পেতে হবে সাধারণ মানুষকে। কারণ? প্রায় সমস্ত রাজ্যের কয়লা ভাণ্ডারই ফুরিয়ে যেতে বসেছে। বহু রাজ্যে তো আবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনাও দেখা দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল বলেন, ' রাজ্যজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে আমাদের আধিকারিকরা রাতদিন পরিশ্রম করছেন।' পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চিরঞ্জিত সিংয়ের গলাতেও শোনা গিয়েছে একই সুর। তিনিও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের কয়লা সরবরাহ বাড়াতে আবেদন করেছেন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, রাজ্যের থার্মাল প্ল্যান্টগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
পঞ্জাবের বিদ্যুৎ কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, গোটা দেশজুড়ে কয়লার অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে নিজেদের গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ সংরক্ষণের আবেদনও করেছে তারা। গ্রাহকদের লাইট অফ রাখা, দরকার না হলে এসি সহ সমস্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ রাখতে বলার মতো পদক্ষেপও নিয়েছে তারা৷
ব্যতিক্রম নয় রাজধানী দিল্লিও। দিল্লির বিদ্যুৎ মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন শনিবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করেন। এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন৷ তিনি জানিয়েছিলেন, কয়লার অভাবের জন্য ইতিমধ্যেই দেশের পূর্ব এবং উত্তরের কিছু রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবায় প্রভাব পড়েছে৷ টাটা পাওয়ার দিল্লি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের সিইও গনেশ শ্রীনিবাসনও শনিবার বলেন, সারাদেশে কয়লার অভাবের জন্য রাজধানীতে লোডশেডিং হতে পারে।একই হাল রাজস্থানেরও৷ কংগ্রেস শাসিত সেই রাজ্যে প্রতিদিনই গড়ে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকের মতো রাজ্যেও একই হাল। সেই দুই রাজ্যে মাত্র ১-২ দিনের কয়লার যোগান আছে৷
তৃণমূলে পা বাড়িয়ে রাখা রাজীব বিজেপির কর্মসমিতিতে, তথাগতের নিশানায় সেই কেডিএসএ
পরিবেশবিদরা বলছেন এ হওয়ারই ছিল৷ বারবার করে সবাইকে সতর্ক করার পর মানুষের অনিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ ব্যয়ের মাশুল মানুষকেই গুনতে হবে৷ এই সমস্যা থেকে বেশি কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা তো দূর বরং নিকট ভবিষ্যতে দেশ ও বিশ্বের মোট সঞ্চিত কয়লার পরিমান শেষ হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন পরিবেশবিদরা! তাহলে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা কয়লাহীন পরিবেশে বাঁচার উপায়? বহু বছর আগে থেকেই সৌর, বায়ু, জৈব্য গ্যাসের মতো পুনঃব্যবহার যোগ্য অপ্রচলিত শক্তির উপর জোর দেওয়ার কথা বলে আসছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে সারা দেশে কয়লার অপ্রতুলতা যে এবার ক্রমশ সেই দিকেই এগোতে বাধ্য করবে সমাজ ও দেশকে৷ তবে এতে আখেরে পরিবেশ ও দেশের উন্নতিই বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা৷