সচেতনতার অভাবে দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ আদালত এড়িয়ে চলেন, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির
সমাজের একটা ছোট অংশ আদালতে যায়। অপরাধ বা অব্যবস্থার শিকারও হলেও সমাজের বেশিরভাগ মানুষ আদালতকে এড়িয়ে যান। এর নেপথ্যে দেশের সাধারণ মানুষের ভয় ও সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমন। শনিবার অল ইন্ডিয়া ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথোরিটিসের তরফে প্রথমবারের জন্য একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানেই এই বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
শনিবারের অনুষ্ঠানে এনভি রমনা বিচার ব্যবস্থার একাধিক দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তি আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। সেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বিচারব্যবস্থার গতি আনতে হবে। তিনি বলেন, ন্যায় বিচারকে সামাজিক মুক্তির হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থা দেশের প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায় বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু দেশের নাগরিকদের একটা ক্ষুদ্র অংশ আদালতকে এড়িয়ে চলেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার হাতিয়ারও ন্যায়বিচার। দেশের বেশিরভাগ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন জানার পরে চুপ থাকেন। এক্ষেত্রে তাঁদের সচেতনতার অভাব। দেশে বৈষম্য দূর করতে ন্যায় বিচারের সংস্পর্শে আসতে হবে।'
ভারতে সব থেকে বড় সমস্যা ধীর বিচার ব্যবস্থা। মামলার গুরুত্ব হিসেবে কিছু মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটে। কিন্তু সাধারণ মামলাগুলোর গতি অত্যন্ত ধীর হয়। যার ফলে অনেক অভিযু্ক্তকে দিনের পর দিন জেলে থাকতে। অনেক সময়ই অভিযুক্তদের মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তি থাকেন। ওই বন্দিদের দ্রুত বিচারব্যবস্থার অধীনে নিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে বিচারাধীন বন্দি দশা থেকে মুক্ত করা কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী। রমনার গলাতেও একই সুর শুনতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়া তরান্বিত করে বিচারাধীন বন্দিদের মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন এই বিষয়টিতে ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। যার ফলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও তিনি মনে করেন।
ভারত বিপুল জনসংখ্যার দেশ। বিশ্বে জনবহুল দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারতে গড় বয়স ২৯। ফলে ভারতে কর্মীর অভাব নেই। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে। দেশে মোট কর্মীশক্তির মাত্র তিন শতাংশ দক্ষ কর্মী রয়েছেন। যার ফলে ভারতে দক্ষ কর্মীর অভাব দেখা দিতে পারে। এতদিন পশ্চিমি দেশগুলোতে দক্ষকর্মীর অভাব দেখা দিয়েছে। সেই পরিস্থিতি ভারতে দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি ভয়ানক হওয়ার আগেই ভারতকে কর্মী দক্ষতার ওপর জোর দিতে হবে।