বিহারে চিরাগ কাঁটার নেপথ্যে পিকে-র রিমোট কন্ট্রোল, বিজেপি-জেডিইউর কপালে চিন্তার ভাঁজ
বিহারে বিজেপির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন এলজেপি প্রধান তথা সাংসদ চিরাগ পাসোয়ান। তবে এই বিদ্রোহের পিছনে জেডিইউ-র একাংশ বিজেপির হাত দেখছে। তা আরও দৃঢ় হয়েছে রামবিলাসের মৃত্যুর পর। সিনিয়র পাসোয়ানের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যপাদ জানান চিরাগ। তবে নীতীশকে কিছুই বলেননি তিনি। এদিকে রাজ্যের জোট থেকে বেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রে এখনও এনডিএর অংশ এলজেপি, যা নিয়ে অস্বস্তিতে জেডিইউ।
ক্ষুব্ধ হয়েছে জেডিইউ
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি যেভাবে জনসমক্ষে চিরাগের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ব্যর্থ হয়েছে, তাতেও ক্ষুব্ধ হয়েছে জেডিইউ। আর এই সব কৌসলগত ভাবে দ্বন্দ্বের মাঝেই পিকে ফর্মুলা দেখছে জেডিইউ। যেভাবে চিরাগ শিবির থেকে জোটের অন্তর্দ্বন্দ্ব বেরিয়ে আসে, তাতে এই সন্দেহ আরও সুদৃঢ় হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রশান্ত কিশোর নিজে বিহারে ছিলেন না সেই ফেব্রুয়ারি থেকে। তবে বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে এই সব কিছুর পিছনেই পিকের রিমোট কন্ট্রোল রয়েছে।
পিকে-কে ডেপুটি বানিয়েছিলেন নীতীশ
প্রসঙ্গত, এই প্রশান্ত কিশোরকেই জেডিইউ ২০১৮ সালে নিজের ডেপুটি বানিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। তবে পরবর্তীতে বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ হাত মেলানোয় নীতীশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এরপর মনে হয়েছিল যে পিকে নিজেই একটি রাজনৈতিক দল খুলবেন। তবে সেটি আর হয়নি। তবে এনডিএ থেকে চিরাগের বিদায় বিহারে নয়া সমীকরণ তৈরি হয়েছে।
চিরাগের একলা চলো নীতি
এবারের বিধানসভা ভোটে বিজেপি ও জেডিইউ আসন সমঝোতায় এলেও একলা চলো নীতি নিয়েছেন চিরাগ পাসোয়ান। সম্প্রতি বিজেপি ও জেডিইউ চিরাগের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনাও করেছে। এই পরিস্থিতিতে রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুতে বড় ধাক্কা খেল বিহারের রাজনীতি। এবং পাসোয়ানের এহেন একলা চলা নীতির পিছনে পিকে-র ছায়া খুঁজে বেরাচ্ছে এনডিএ।
চিরাগের তালিকায় পিকে-র ছায়া
প্রথম দফায় ৪২টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছেন এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান। আর এই তালিকাতেও দলত্যাগী বিজেপি প্রার্থীদের উপর ভরসা রেখেছেন চিরাগ। নাম রয়েছে প্রাক্তন জেডিইউ নেতারও। এছাড়া প্রার্থী তালিকায় ৯ জন মহিলা প্রার্থী রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরকম ভাবে স্ট্র্যাটেজিক ঘুঁটি সাজানোর পিছনে বিজেপিও দেখছে পিকের ছাপ।
নীতীশ বিরোধী মঞ্চ
আদতে চিরাগ নীতীশের বিরোধী। বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার কথা একবারও বলেননি চিরাগ। আগেই জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রে বিজেপির হাত ছাড়ার প্রশ্নই নেই। উল্টে বার্তা দেন, বিহার ভোটের পর বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গড়বে এলজেপি। সেজন্য কর্মীদের প্রস্তুত হতে বলেন। এবং এই নীতীশ বিরোধিতাই চিরাগ-পিকেকে এক সঙ্গে এনেছে বলে সন্দেহ বিজেপি-জেডিইউর।
এনডিএ ভাঙাচ্ছেন প্রশান্ত
এলজেপির সঙ্গে জোট বেধে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪০টির মধ্য়ে ৩৯টি আসন জিতেছিল তবে এবার এলজেপি বিজেপি-জেডিইউ ভোট ব্যাঙ্কে চিড় ধরাতে চাইছে। বিহারের ৪২টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন চিরাগ পাসোয়ান। বেশ কয়েকটি আশনেই বিজেপি এবং জেডিইউর বিক্ষুব্ধদের আসন দিয়েছেন চিরাগ পাসোয়ান। বিজেপি থেকে অন্তত পাঁচজন বিদ্রোহী চিরাগের শরণাপন্ন হয়েছেন। বিরোধী দল থেকে এই প্রার্থীদের ছিনিয়ে নিয়ে আসার পিছনে পিকে-র মস্তিষ্ক রয়েছে বলে মত জেডিইউর। এবং পুরোনো দল থেকে চিরাগ শিবিরে এই নেতাদের আনার পিছনে প্রশান্তের হাত রয়েছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যদিও এই বিষয়ে প্রশান্ত নিজে চুপ।