পারবেন বিহার নির্বাচনে তেজস্বীকে হারাতে? নীতীশ তো চিরাগের আক্রমণেই কাবু
বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণার পর থেকেই এলজেপি নেতা চিরাগ পাসোয়ান এবং নীতীশ কুমারের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে জেলে পাঠানোর কথা যেমন বলেছেন, তেমনই বিজেপিতে তুষ্ট করতে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হনুমান আখ্যা দিয়েছেন। এরই মধ্যে এবার চিরাগের এক ভাইরাল ভিডিও ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কী রয়েছে
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, চিরাগ পাসোয়ান তাঁর প্রয়াত বাবা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মহড়া দিচ্ছেন। প্রথম দফার নির্বাচনের আগে এহেন ভিডিও নিয়ে জোর তরজা শুরু হয়। ভিডিওতে এলজেপি নেতাকে তাঁর প্রয়াত বাবার ছবির সামনে শ্রদ্ধা নিবেদনের ভঙ্গিতে দাঁড়াতে এবং আশেপাশের ক্যামেরাম্যান ও অন্যান্যদের নির্দেশ দিতে দেখা গিয়েছে।
নির্বাচনের সকালেই প্রচারের আলোয় চিরাগ
আর এই ভিডিও ভাইরাল হতেই অস্বস্তিতে পড়েন চিরাগ পাসোয়ান। তবে তরুণ এই নেতা তাঁর অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলে নীতীশ কুমারকে পাল্টা তোপ গেদে পাশা পাল্টে দিয়েছেন। এই ভিডিও ভাইরাল করার পিছনে সরাসরি নীতীশকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'এহেন নিম্ন মানের রাজনীতি কখনই আশা করা যায় না।' এর ফলে নির্বাচনের সকালেই যেন প্রচারের আলোয় চিরাগ।
নীতীশকে আক্রমণ চিরাগের
ভাইরাল এই ভিডিও সম্পর্কে চিরাগ বলেছেন, আমি বুঝতে পারছি না যে, এই ভিডিও কোন উদ্দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া হয়েছে। বাবার মৃত্যুতে আমি কতটা শোকগ্রস্ত, তার প্রমাণ কী আমার দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। প্রশ্ন তুলতে হলে তো আমার নীতি ও কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলুন। মুখ্যমন্ত্রী এমন নিম্নস্তরের রাজনীতি করবেন বলে আশা করতে পারিনি। তিনি ভয় পেয়েছেন যে, আমার সরকার হলে জেলে যাবেন।
দুর্নীতি প্রসঙ্গে নীতীশ কুমারকে আক্রমণ
এছাড়া এদিন দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আক্রমণ করলেন এলজেপি নেতা চিরাগ পাসোয়ান। সাত নিশ্চয় স্কিমের দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করেন তিনি। চিরাগ বলেন, 'সাত নিশ্চয় সবথেকে বড় দুর্নীতি। অনেকেই বলেছেন এই স্কিম থেকে ৪০ শতাংশ লাভবান হয়েছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু আমি এর উলটো ছবিটা দেখেছি। এই যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে এর তদন্ত কেন হবে না? যদি মুখ্যমন্ত্রী কোনও ভুল না করে থাকেন তাহলে তিনি ভয় পাচ্ছেন কেন?'
লালুপ্রসাদের প্রসঙ্গ টেনে নীতীশকে আক্রমণ
লালুপ্রসাদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'যদি আপনি দুর্নীতিগ্রস্ত হন তাহলে আপনাকে জেলে যেতে হবে।' পাশাপাশি তিনি বলেন, 'বিহারে মদ বিক্রি বন্ধের বিষয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।' তাঁর দাবি, 'রাজ্যের ঘরে ঘরে মদ পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে মদ বিক্রি থেকে সরকারের কোষাগারে রাজস্ব আসত। আর এখন বেআইনিভাবে মদ বিক্রি হচ্ছে। কারা পাচারকারীদের আড়াল করছেন। আর কারা এর থেকে লাভ করছেন। রাজস্ব কোথায় যাচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী আপনার পকেটের যাচ্ছে কি?'
প্রশান্ত কিশোর যোগ
সম্প্রতি চিরাগের উদ্দেশে জেডিইউ-র সঞ্জয় ঝা বলেছিলেন, 'অন্যের কথায় নাচেন চিরাগ।' জেডিইউ নেতার ইঙ্গিত ছিল প্রশান্ত কিশোরের দিকে। সেই প্রসঙ্গে এলজেপি প্রধান বলেন, তাঁকে এই ধরনের মন্তব্য করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করা। কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছেন।
তেজস্বীর 'ভোট ব্যাঙ্ক সমীকরণ'-এর তেজে ম্লান নীতীশ, বিহারে পালাবদল সময়ের অপেক্ষা?