লাদাখ নিয়ে নাছোড়বান্দা চিনের কথার খেলাপ! প্যাংগংয়ে উত্তেজনার পারদ পৌঁছাচ্ছে চরমে
হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান মোতায়েন
এই আবহেই এবার ভারতীয় নৌসেনা উত্তেরের বেসগুলিতে মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করল। এছাড়া উত্তর লাদাখে ভারত পি৮আই এয়ারক্রাফ্ট মোতায়েন করেছে। এই যুদ্ধবিমানগুলি সাবমেরিন প্রতিহত করতে সমর্থ। আর তাই এই যুদ্ধবিমান মোতায়েনে প্রশ্ন উঠছে যে চিন কি তবে প্যাঙগং সোতে ফের নিজেদের কতৃত্ব বাড়িয়েছে!
লাদাখে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ভারতের
প্রসঙ্গত, সেই জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে ভারতীয় সেনার এক পদক্ষেপ। জানা গিয়েছে লাদাখে আরও অতিরিক্ত তিন ডিভিশন সেনা মোতায়েন করবে ভারত। যেখানে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছিল, ঠিক তখনই সেনার এই সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া ভারতীয় নৌসেনাও তাদের বেশ কয়েকটি মিগ ২৯ উত্তর ভারতের ফরোয়ার্ড বেসগুলিতে স্থানান্তর করেছে বলে খবর মিলছে। এরই মধ্যে জানা গিয়েছে যে লাদাখের খুব কাছেই চিন আরও ৪০০০০ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।
শান্তি প্রক্রিয়া কি ভেস্তে গেল লাদাখে?
গালওয়ান সংঘর্ষের পর কেটে গেছে এগারো সপ্তাহ। সাম্প্রতিক ঘটনা অনুযায়ী, লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে দু'দেশের তরফে। গালওয়ান থেকে সেনা সরাচ্ছে চিন। এই পরিস্থিতিতে গালওয়ান সংঘর্ষের ঠিক এক মাস পর লাদাখ সফরে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। আর সেখানে গিয়ে রাজনাথ জানিয়েছিলেন যে লাদাখের পরিস্থিতির কোনও গ্যারান্টি নেই, তাই ভারত সর্বদা তৈরি। এই ইঙ্গিতেই অনেকে ভাবতে শুরু করেছিল যে তবে কি চিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে!
তীক্ষ্ণ নজর ভারতের
চিনের তিন দফায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত। কোনও ভাবে যদি চিন সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ভারতও থমকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘন না করা হয় সেদিকে নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এর জন্য দিনের পাশাপাশি রাতেও বায়ুসেনার বিমান ও হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছে লাদাখের সীমান্ত জুড়ে।
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বিবাদ
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বরাবরই ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। ভারত বিশ্বাস করে 'ফিঙ্গার ১' থেকে 'ফিঙ্গার ৮' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদের এবং চিন মনে করে যে 'ফিঙ্গার ৮' থেকে 'ফিঙ্গার ৪' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই। ১৫ জুন, এই 'ফিঙ্গার ৪' এলাকাতেই উভয় পক্ষের সেনার মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বাঁধে। পরে উভয় পক্ষের সীমানা যেখানে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যকে কাঁটাতারের সাথে জড়িত লাঠির মতো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। 'ফিঙ্গার ৪'-এ এই জন্যেই উল্লেখযোগ্য হারে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছিল চিন যাতে ভারতীয় সেনারা আর 'ফিঙ্গার ৮' এর দিক দিয়ে টহল দেওয়ার সুযোগ না পায়।