লাদাখ ইস্যুতে ভারতকে শান্ত করতে নয়া চাল চিনের! সেনা না সরিয়েই প্রত্যাহারের দাবি বেজিংয়ের
মিথ্যে কথা বলা ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেন চিনের অভ্যাস। লাদাখে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে ভারতে কড়া বার্তার পর ফের সেনা প্রত্যাহার নিয়ে সদার্থক বাণী শুনিয়ে বেজিংয়ের তরফে বলা হয়, বেশির ভাগ জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে চিন। পরবর্তী আলোচনার পর বাকি বিবাদমূলক স্থান থেকেও সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে
হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
লাদাখে মোতায়েন ভারত-চিন সেনা
তবে এরই মধ্যে আকসাই চিন এলাকায় পিএলএ-র তরফে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আর সেই হুমকি রুখতেই ভীষ্ম টি৯০ ট্যাঙ্কের এর একটি স্কোড্রন, অর্থাৎ ১২টি ট্যাঙ্ক সেখানকার সীমান্ত রক্ষার লক্ষ্যে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় সেনা। এছাড়া ৪০০০ জন সৈনিকের একটি আস্ত ব্রিগেডও সেখানে ডিবিওতে মোতায়েন করেছে ভারত।
সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছিল লাদাখে
উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছিল লাদাখে। চিনের তিন দফায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত। কোনও ভাবে যদি চিন সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ভারতও থমকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘন না করা হয় সেদিকে নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এর জন্য দিনের পাশাপাশি রাতেও বায়ুসেনার বিমান এবং চিনুক ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছে লাদাখের সীমান্ত জুড়ে।
ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে চিন
যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
ভারত-চিন বিবাদের মূল কারণ
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বরাবরই ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। ভারত বিশ্বাস করে 'ফিঙ্গার ১' থেকে 'ফিঙ্গার ৮' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদের এবং চিন মনে করে যে 'ফিঙ্গার ৮' থেকে 'ফিঙ্গার ৪' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই। ১৫ জুন, এই 'ফিঙ্গার ৪' এলাকাতেই উভয় পক্ষের সেনার মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বাঁধে। পরে উভয় পক্ষের সীমানা যেখানে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যকে কাঁটাতারের সাথে জড়িত লাঠির মতো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। 'ফিঙ্গার ৪'-এ এই জন্যেই উল্লেখযোগ্য হারে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছিল চিন যাতে ভারতীয় সেনারা আর 'ফিঙ্গার ৮' এর দিক দিয়ে টহল দেওয়ার সুযোগ না পায়।
সামীন্ত বিবাদ নিয়ে দিল্লি-বেজিং বৈঠক
এদিকে জানা গিয়েছে গত সপ্তাহের শুক্রবার দুই পক্ষের কূটনৈতিকরা এই বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। জানা গিয়েছে সেই বৈঠকে ভারত-চিন সীমান্ত বরাবর, লাদাখ সেক্টরে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে দু'পক্ষের মধ্যে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। যত দ্রুত সম্ভব সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া দরকার বলে উভয় দেশই মত প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি উভয়পক্ষই সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বাড়তি সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও সহমত পোষণ করে। তবে চিনের তরফে এই প্রতিশ্রুতি এর আগেও দেওয়া হয়েছিল। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।