চিনের প্যাংগং প্ল্যান : উত্তরে জারি গোপন নির্মাণ কাজ, দক্ষিণে মোতায়েন সেনা ও ট্যাঙ্ক
গত কয়েক মাস ধরে উত্তপ্ত লাদাখ সীমান্ত। ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন একাধিক ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকে আরও আঁটোসাঁটো হয়েছে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা। আরও কড়া হয়েছে নজরদারি। এইসব কিছুর মাঝেই প্যাংগং হ্রদের উত্তর তীরে ফিঙ্গার ৫-এর সামনে গোপনে নির্মাণ কাজ জারি রেখেছে চিনা সেনা।
ফিঙ্গার এলাকায় চরম উত্তেজনা
লাদাখের প্যাংগং হ্রদের কাছে গ্রিন টপের উপর থেকে চিনা সেনা দখলদারি সরাতে না চাওয়াতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হচ্ছে চিনের। প্যাংগং সোতে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
থাকুং পোস্টের কাছে গোপন নির্মাণ কাজ
প্যাংগংয়ের দক্ষিণপ্রান্তে থাকুং পোস্টের কাছে গোপন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে চিনা বাহিনী। লাদাখে স্প্যানগারের কাছে চিনের নতুন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনা স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে। স্প্যানগারের দক্ষিণাংশ বরাবর চিন রাস্তা নির্মাণ করতে শুরু করেছে। এছাড়াও হটস্প্রিং গোগরা , ডেপসাং এলাকাকেও ক্রমাগত দাপট বাড়িয়ে নিজের অধিকারের জায়গা ছাড়িয়ে এগিয়ে আসছে চিন।
সীমান্তের প্রতিটি কোণে নজরদারি
এদিকে তুষারঝড়, প্রাকৃতিক বিপর্যয় সবকিছুর মাঝেই লাদাখে ৮২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার প্রতিটি কোণে নজর রাখতে প্রয়োজন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা আর চুল চেরা বিশ্লেষণ করার মতো দক্ষ লেন্স। আর ঠিক সেই পথেই এগোচ্ছে ভারত-চিন। সীমান্ত যুদ্ধ কোথাও যেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধও হয়ে উঠেছে।
হেলমেট ও ব্ল্যাক টপ অধিকার করেছে ভারত
২৯-৩০ অগাস্ট রাতে স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স চিন সেনাকে হারিয়ে হেলমেট ও ব্ল্যাক টপ অধিকার করেছে। সূত্রে খবর, এই স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের লক্ষ্য ছিল, পিএলএ ওই দুর্গম এলাকায় ভারতীয় সেনার গতিবিধি জানার জন্য যে শক্তিশালী ক্যামেরা বসিয়েছিল, তা ধ্বংস করা। এই ক্যামেরার গুরুত্বপূর্ণ নজরদারি নিয়ে সেনাসূত্রে খবর, এই হেলমেট ও ব্ল্যাকটপ প্যাংগং লেকের দক্ষিণ তীরের বাম দিকে অবস্থিত।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নাইট ভিশন ক্যামেরা লাগিয়েছে চিন
এর ঠিক ডান দিকে রেজাং লা ও রিনচেন লা রয়েছে, যেখান থেকে কৈলাস রেঞ্জ শুরু হয়। এই সমস্ত এলাকায় চিনের সেনার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এইচ ডি ক্ষমতা সম্পন্ন নাইট ভিশন ক্যামেরা রয়েছে। যা দিনের বেলায় ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ও রাতে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নজরদারি চালাতে পারে। মুহূর্তে রেকর্ড করতে পারে শত্রুপক্ষের গতিবিধিকে।
ভারতকে রুখতে চিনের চাল
এই সমস্ত এলাকায় এই অত্যাধুনিক ক্যামেরাগুলিকে এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যা সূক্ষ্ম থেকে অতি সূক্ষ্ম গতিবিধিও রেকর্ড করতে পারে। সেনা সূত্রে একটি তথ্য উঠে আসে। যেখানে বলা হয়, চিনের সেনারা খুব একটা বেশি হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। সাধারণত তাঁরা গাড়ির ব্যবহারই বেশি করে থাকে। অনেক সময়ই ভারতীয় সেনাদের টহল দিতে তাঁরা ক্যমেরার মাধ্যমেই দেখে এবং গাড়ি নিয়ে তা আটকাতে আসে।
সেনা মোতায়েন চিনের
এদিকে ৭ সেপ্টেম্বর প্যাংগং লেকের দক্ষিণে দুই পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াইয়ের পরেই সেনা মোতায়েন করতে শুরু করে চিনা সেনা। সরকারি সূত্র বলছে , এই মুহূর্তে উভয় পক্ষের সেনা একে অপরের থেকে অল্প দূরত্বে রয়েছে৷ ভারতীয় সেনা তাদের কর্মকাণ্ডে গভীর নজর রাখছে৷ জানা গিয়েছে চিনের তরফে অন্তত ২০ থেকে ৩০টি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে প্যাংগং এলাকায়।
যুদ্ধের জন্যে তৈরি হচ্ছে পিএলএ
জানা গিয়েছে চিন প্যাংগং এলাকায় নিজেদের ৫ থেকে ৬ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। ভারতীয় সেনার অধীনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলি দখলের উদ্দেশ্যেই সেখানে সৈন্য বহর বাড়াচ্ছে পিএলএ। তাছাড়া ট্যাঙ্ক স্কোয়াড্রনও মোতায়েন করেছে চিন। পুরদস্তুর যুদ্ধের জন্যে তৈরি হচ্ছে তারা।
ভারতীয় বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত রাফাল! আম্বালার আকাশ কাঁপিয়ে যেন চিন-পাকিস্তানকে হুঙ্কার