প্যাংগংয়ে বিরাজমান অবিশ্বাসের মেঘ! ভারত-চিন সেনার বৈঠকের আগে ঘুঁটি সাজাচ্ছে দিল্লি
লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ, সংঘাতের আবহে চিনা সীমান্তের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছে ভারতীয় সেনা। এই আবহেই ষষ্ঠ দফায় কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের জন্যে তোড়জোড় শুরু করে দিল দিল্লি। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে কমান্ডার-পর্যায়ের আরেক দফা বৈঠক করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই বৈঠকের আগেই ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত ভারত।
এলএসি বরাবর সেনা বৃদ্ধি চিনের
অরুণাচল প্রদেশ সীমান্ত বরাবর চিনা সেনার গতিবিধি নজরে পড়েছে। সেই কারণেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক সেনা আধিকারিক। তাছাড়া আকসাই চিনে বিশাল বাহিনী মোতায়েন রেখেছে চিন। লাদাখ সীমান্তে প্রায় ৫২ হাজার চিনে সেনা রয়েছে। শুধু প্যাংগংয়েই রয়েছে ১৬ হাজারের কাছাকাছি চিনা সেনা।
ভারতের পক্ষ থেকে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি
ক্রমে সেনা বৃদ্ধির জেরে এই সমস্ত এলাকায় চিনা সেনার ওপর করা নজরদারি চালানো হচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে। সূত্রের খবর, দুই দেশের মধ্যে কমান্ডার স্তরে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও দিন স্থির হয়নি। উল্লেখ্য, লাদাখ সীমান্ত নিয়ে এপ্রিল মে মাস থেকে দুই দেশের মধ্যে অচলাবস্থা চলছেই।
প্যাংগংয়ে ৫০ জন সেনা রাখতে চায় পিএলএ
এই অবস্থায় ভারত-চিন দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক হয় মস্কোতে। সেখানেই সেনা কমিয়ে উত্তেজনায় জল ঢালার কথা আলোচনা হলেও তা বস্তবায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চিন চাইছে প্যাংগং থেকে ভারত তাদের সেনা প্রত্যাহার করুক। বিশেষ করে ফিঙ্গার ২ এবং ৩-এর যেসব চূড়ায় ভারতীয় সেনা রয়েছে, তা খালি করার দাবি জানিয়েছে বেজিং। তবে চিনের দাবি, তারা নিজেদের ৫০ জন সেনা প্যাংগংয়ে রেখে দিতে চায়। যা নিয়ে ঘোর আপত্তি ভারতের।
শান্তিবার্তার অলিন্দে চিনের নয়া ফন্দি
শান্তিবার্তার অলিন্দে চিন কোনও নয়া ফন্দি আঁটছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। লাদাখে বারবার চিনের অুপ্রবেশের চেষ্টা এবং চোখ রাঙানি সত্ত্বেও একবারও পিছপা হয়নি ভারতীয় সেনা। বরং চিনের সেনা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতও লাদাখ সীমান্তে তাদের শক্তিবৃদ্ধি করেছে। যার জেরে চিন বোকা বনে গিয়েছে চিন। বেজিং কোনওদিন ভাবেনি যে ভারত এভাবে চিনকে রুখে দিতে পারবে।
আসল রঙ দেখিয়ে প্যাংগং এলাকায় আরও চিনা সেনা
শান্তির বার্তা দিলেও নিজেদের আসল রঙ দেখিয়ে প্যাংগং এলাকায় আরও সেনা মোতায়েন করে চিনের ওয়েস্টার্ন কমান্ড। বর্তমানে প্যাংগং লেক এলাকায় খুব কাছেই অবস্থান করছে দুই দেশের সেনা। গোগরা ও কোংকা লা-তে প্রচুর স্থানে একে অপরেক ঘাড়ের উপর নিশ্বাস ফেলছে ভারত ও চিনের সেনা। এরই মধ্যে চিন তাদের সেনাবল বাড়িয়েছে লাদাখের প্যাংগংয়ে।
এলএসি থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরেই চিনা আর্টিলারি গান
এলএসি থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরেই দাঁড়িয়ে চিনা আর্টিলারি গান। তাছাড়া লাদাখের প্যাংগং সংলগ্ন চুশুল সেক্টরে ১৬ হাজার পদাতিক সৈন্য মোতায়েন করে চিন। প্যাংগং এলাকায় চিনের পক্ষ থেকে ট্যাঙ্কও আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চিনের এই ট্যাঙ্ক বাহিনী মোলডোর খুব কাছেই অবস্থান করছে। এই পরিস্থিতিতে বেজিংকে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে অনেক ভেবে চিন্তে পা ফেলবে দিল্লি।
চিনকে কোনও ভাবেই ছুট দিতে রাজি নয় দিল্লি
চিন জানিয়েছে এই সেনা প্রত্যাহার করতে তারা প্রস্তুত তবে ফিঙ্গার ৪-এ অবস্থিত অস্থায়ী কাঠামোগুলিকেই তারা এলএসি বলে চিহ্নিত করছে। যা নিয়ে অসন্তুষ্ট ভারত। ভারতের দাবি, ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত তাদের টহলদারির অধিকার রয়েছে। যদিও চিন এই বিষয়ে সমঝোতা করতে একেবারেই রাজি নয়। পাল্টা প্যাংগংয়ে চিনের তরফে ৫জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে এবং নির্মাণ কাজও চালানো হচ্ছে। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে ভারত। যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী বৈঠকেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে না। ভারতের স্পষ্ট মনোভাব, যেটাই হয়ে যাক, দেশের সূচাগ্র মেদিনীও যেন চিনের দখলে না যায়।
দিল্লিতে পুলিশের জালে দুই চিনা গুপ্তচর, লাদাখ ছাড়িয়ে সংঘাত এখন খোদ রাজধানীতে