ক্রমেই বাড়ছে চিন-ভারত যুদ্ধ সম্ভাবনা, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারী যুদ্ধাস্ত্র মজুত করছে দুই দেশ
ক্রমেই বাড়ছে চিন-ভারত যুদ্ধ সম্ভাবনা, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারী যুদ্ধাস্ত্র মজুত করছে দুই দেশ
গত ২৫ দিন ধরে চলা ভারত-চিন টানাপোড়নের পরিণতি দেখতে চলেছে দুই দেশ। এমতাবস্থায় ক্রমেই বাড়ছে চিন-ভারত যুদ্ধ সম্ভাবনা, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারী যুদ্ধাস্ত্র মজুত করছে দুই দেশ। সেনা সূত্রে খবর, বর্তমানে পূর্ব-লাদাখ সীমান্তে নিজ নিজ সেনা ছাউনিতে ভারী যন্ত্রপাতি, আর্টিলারি ও সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র জমা করছে দুই দেশ। বর্তমানে ২০১৭-র ডোকলাম পরবর্তী অবস্থার পর আবারও বড়সড় সংঘর্ষের সম্ভাবনায় মুখোমুখি দুই দেশ।
আলোচনাতেও গলেনি বরফ, জারি শক্তি প্রদর্শন
সেনা সূত্রে খবর, বর্তমানে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের কর্তাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হলেও, তা বারংবার ব্যর্থ হয়। এই সঙ্কটে চিন সেনা পূর্ব-লাদাখ সীমান্তে তাদের সেনা ছাউনিতে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য বিশালাকার বেশ কিছু যুদ্ধাস্ত্র মজুত করছে বলে জানা যাচ্ছে। থেমে নেই ভারতও। রণকৌশল তারি করতে সীমন্তে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের সঙ্গে ভারতীয় সেনাও তার নজরদারি জারি রেখেছে। এর ফলে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল(এলএসি) পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারত সেনার তরফে জানা গেছে, প্যাংগং ও গালওয়ান ভ্যালির মত জায়গা গুলিতে শান্তি ফিরে না আসা পর্যন্ত ভারতীয় সেনাও তার শক্তি প্রদর্শন জারি রাখবি।
সীমান্তে কড়া নজরদারি চলছে বায়ু সেনার তরফেও
বর্তমানে ভারতীয় বায়ু সেনা লাদাখের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলি সহ সমগ্র এলএসি-কেই কড়া নজরদারির আওতায় আনতে চাইছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ডেমচক ও দৌলতবাগ ওল্ডির মত জায়গায় প্রায় ২৫০০ সৈন্য মোতায়েন করে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে চিন। উপগ্রহের চিত্র থেকেও দেখা যাচ্ছে প্যাংগং টিএসও-র ১৮০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা সেনা ছাউনি গুলিতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মজুত করছে চিন। অন্যদিকে জমি ছাড়তে নারাজ ভারতীয় বায়ুসেনাও। চলছে কড়া নজরদারি। ইতিমধ্যে যুদ্ধাস্ত্র পরিবহন ও আরও উন্নত নজদারির জন্য বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন ভারতের চিনুক চাপরকেও সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।
ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে চিন
ভারতের এক উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, "চিনের শক্তি প্রদর্শনের বিষয়ে আমরা অবগত। ভারতের উপর চিন চাপ সৃষ্টি করতে চাইলেও আমরা চাই সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনতে।" শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, কূটনীতিক স্তরে চিনের সাথে সমস্ত আলাপ-আলোচনার পথ খোলা রাখছে ভারত। সূত্রের খবর, গালওয়ান ভ্যালিতে দার্বাক-শায়ক-দৌলতবেগ সংযোগকারী রাস্তার পাশের প্যাংগং লেক সংলগ্ন স্থানে অন্য একটি রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে চিন সরকারের আপত্তিই এই দ্বৈরথের মূলে রয়েছে। পাশাপাশি গত ৫ই মে পূর্ব লাদাখে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা চিনা ও ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। এরপর ১০ মে সিকিমে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়াতে দেখা যায় ভারত-চিন সেনাকে। নাকু লা-য় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির জওয়ানদের সঙ্গে হাতাহাতিও হয় ভারতীয় সেনার।
প্যাংগং টিএসও লেক সংলগ্ন স্থানে রাস্তা তৈরি নিয়েও জারি বিরোধ
পুরনো ক্ষতের বদলা নিতেই বর্তমানে গালওয়ান ও প্যাংগং উপত্যকায় শক্তি বৃদ্ধি করছে চিনা সেনা, এমনটাই মনে করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। ১৯৬২ সালের চিন-ভারত যুদ্ধের সময় থেকেই গালওয়ান উপত্যকাটিকে নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বিগত বছর গুলিতে এই উপত্যকার বিভিন্ন অংশকে নিজেদের এলাকা বলে তিনবার দাবি করতে দেখা গেছে চিনকে। পাশাপাশি গত বছর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বারবর গালওয়ান নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রাস্তার তৈরির সময় দ্বন্দ্বে জড়াতে দেখা যায় নয়াদিল্লী ও বেজিংকে। প্রথমে একটি ছোট অঞ্চল দিয়ে সমস্যার সূত্রপাত হয়। এখন, বেজিং বলেছে পুরো গালওয়ান উপত্যকাটি চিনের অন্তর্গত। বর্তমানে এই দুই স্পর্শকাতর এলাকায় দার্বাক-শায়ক-দৌলতবেগ সংযোগকারী রাস্তার পাশে প্যাংগং লেক সংলগ্ন স্থানে অন্য একটি রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে বিরোধে জড়াতে দেখা যায় দুই দেশকে।
তৃণমূলে ঠোকাঠুকি মৃত্যুর বিনিময়ে সমাধান হয়! 'রাজা'দের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই, ভাঙড় নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ