হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কারণে শিশুদের চোখের সমস্যা বাড়ছে, দাবি নতুন সমীক্ষার
হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কারণে শিশুদের চোখের সমস্যা বাড়ছে, দাবি নতুন সমীক্ষার
গত বছর চিন থেকে যখন মারণ করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু জানিয়েছিল যে এই রোগ থেকে বাঁচতে বারবার হাত ধোওয়া খুবই জরুরি। এছাড়াও হাত স্যানিটাইজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে যেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রত্যেকের জীবনের অঙ্গ স্বরূপ হয়ে গিয়েছে। এখন তো হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্কুল, কলেজ, হোটলে, শপিং মল, রেস্তোরাঁ সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। যদিও সম্প্রতিকতম সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে করোনা ভাইরাস মহামারির সময় থেকে শিশুদের চক্ষু–সংক্রান্ত আঘাতের কারণ এই হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
২১ জানুয়ারি জামা ওপথালমোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় গবেষকরা দেখেছেন যে যে সব শিশুরা দুর্ঘটনাবশত চোখের মধ্যে স্যানিটাইজার দিয়ে ফেলেছে, তাদের চোখে রাসায়নিক আঘাতের সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রেঞ্চ পয়জন কন্ট্রোল সেন্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাতগুণ বেশি ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৪ অগাস্টের মধ্যে স্যানিটাইজারের বিপজ্জনক রাসায়নিকের সংস্পর্শ চোখে যাওয়ার কারণে শিশুরা চোখে আঘাত পেয়েছ।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, '২০১৯ সালে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কারণে চোখে রাসায়নিক আঘাত হয়েছে মাত্র ১.৩ শতাংশ শিশুদের মধ্যে। কিন্তু ২০২০ সালের শেষে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে চোখে স্যানিটাইজার চলে যাওয়ার কারণে ফ্রান্সের মাত্র একটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে স্যানিটাইজারের ফলে চোখে রাসায়ানিক বিষক্রিয়ার জন্য ১৬ জন শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।’ এর আগে ওয়ার্ল্ড জার্নাল অফ কারেন্ট মেডিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চে বলা হয়েছিল যে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ওই সমীক্ষায় বলা হয়, 'মাইক্রোবায়াল ফ্লোরা মানবদেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত স্যানিটাইজারের ব্যবহার হজম পদ্ধতির ভালো ও মন্দ জীবাণুর মধ্যে ভারসাম্যহানতা তৈরি করে, যার কারণে পেটের ব্যাথাজনিত রোগ, স্তুলতা, অর্টিজমের মতো রোগ বৃদ্ধি পায়।’
কোভিড রোগ থেকে দূরে থাকতে এই স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ সব চিকিৎসকরাই দিয়ে থাকেন। কিন্তু এর পর আস্তে আস্তে স্যানিটাইজারের ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে বলেও চিকিৎসকদের একাংশের মত। বাজারে যত স্যানিটাইজার পাওয়া যায়, তাদের গুণমানের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন অনেকে। শিশুদের ক্ষেত্রে স্যানিটাইজারের পরিবর্তে হাতে গ্লাভস পরিয়ে রাখা অনেক নিরাপদ বলেই মনে করছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা।