হোয়াটস্অ্যাপ-এ রমরমিয়ে 'চাইল্ড পর্নোগ্রাফি'-র ব্যবসা! পর্দা ফাঁস সিবিআই-এর
২২ ফেব্রুয়ারি সিবিআই উত্তর প্রদেশের কনৌজ থেকে নিখিল ভার্মা নামে এক তরুণকে গ্রেফতার করে। এরপরেই সিবিআই হোয়াটস্অ্যাপে চলা এই চাইল্ড পর্নোগ্রাফি চক্রের কথা প্রকাশ্যে নিয়ে আসে।
তথ্য-প্রযুক্তির অগ্রগতিতে লোকের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে যৌনতা উপভোগ করার রসদ। ফেসবুক, টুইটারে- তো হুহু করে বেড়ে চলেছে যৌন ব্যবসা। এর থাবা থেকে যে হোয়াটসঅ্যাপ-এর মতো জনপ্রিয় চ্যাটগ্রুপও যে বাদ যাচ্ছে না তার প্রমাণ এবার সামনে এল।
২২ ফেব্রুয়ারি সিবিআই উত্তর প্রদেশের কনৌজ থেকে নিখিল ভার্মা নামে এক তরুণকে গ্রেফতার করে। এরপরেই সিবিআই হোয়াটস্অ্যাপে চলা এই চাইল্ড পর্নোগ্রাফি চক্রের কথা প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। জানা গিয়েছে বছর কুড়ির নিখিল বাণিজ্য শাখায় স্নাতক। বেকার নিখিল-এর নেতৃত্বেই হোয়াটস্অ্যাপ-এ খোলা হয়েছিল চাইল্ড পর্নোগ্রাফির এই গ্রুপ।
'কিডস XXX'নামে এই গ্রুপটিতে ১১৯ জন সদস্য রয়েছে। এই গ্রুপের সদস্যরা বিশ্বের নানা প্রান্তেও ছড়িয়ে আছে। সিবিআই জানিয়েছে এই চাইল্ড পর্নোগ্রাফি গ্রুপের চক্র ভারতের সঙ্গে সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, মেক্সিকো ও নিউজিল্যান্ডেও বিস্তার লাভ করেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে এই দেশগুলির সাহায্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে সিবিআই। নিখিলের সঙ্গে গ্রুপের আরও ৫ অ্যাডমিনকে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এরা হল সত্যেন্দ্র চৌহান, নাফিস রাজা, জাহিদ এবং আদর্শ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইটি অ্যাক্টের ৬৭-বি ধারা এবং পসকো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও, নিখিল সিবিআই জালে এলেও, বাকি অভিযুক্তরা পলাতক।
প্রায় মাস তিনেক ধরে হোয়াটস্অ্যাপ-এ চাইল্ড পর্নোগ্রাফি নিয়ে তদন্ত করছিল সিবিআই। বিভিন্ন মোবাইল ডেটা, তাদের লোকেশন এবং হোয়াটস্অ্যাপে আপলোড হওয়া চাইল্ড পর্নোগ্রাফি-র আইপি অ্যাড্রেস দেখে তদন্ত চলছিল। এর জন্য গত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটতেও হয় সিবিআই অফিসারদের। শেষপর্যন্ত তাঁদের হাতে ধরা পড়ে নিখিল।
এই গ্রুপে কী ভাবে চাইল্ড পর্ন আপলোড করা হত তা তদন্তে খতিয়ে দেখছে সিবিআই। বাজার থেকে কেনা কোনও ভিডিও আপলোড করা হত না এই গ্রুপের জন্য আলাদাভাবে শিশু যৌনতার ছবি শ্যুট করে তা পোস্ট করা হত- সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই গ্রুপের সঙ্গে কোনও চক্রও জড়িত আছে কি না সেটাও তদন্তের ফোকাসে রাখা হয়েছে।
চাইল্ড পর্নোগ্রাফি দেখা বা তৈরি করা অথবা রেকর্ড করা এবং তা আপলোড করে ছড়িয়ে দেওয়া আইটি অ্যাক্টে দণ্ডনীয় অপরাধ। এর জন্য ৭ থেকে ১০ বছরের জেল হতে পারে। সেইসঙ্গে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।