ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচাতে হবে শিশু শ্রমিকদের, মোদীকে খোলা চিঠি কৈলাশ সত্যার্থীর
ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচাতে হবে শিশু শ্রমিকদের, মোদীকে খোলা চিঠি কৈলাশ সত্যার্থীর
নোবেল শান্তি জয়ী কৈলাশ সতীর্থ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছেন যে করোনা সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে শিশু শ্রমিকদের সমস্ত নিয়োগকারীকে তিন মাসের জন্য মামলা–মোকদ্দমা বা অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে অব্যাহতি দেওয়া দরকার কারণ তারা এই লকডাউনের সময় কারখানায়, কর্মশালা, পাথর ভাঙা, ইটের ভাটা বা অন্যান্য কর্মস্থলে আবদ্ধ শিশুদের মুক্তি দেয়। সতীর্থ এই মর্মে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে বলেছেন মোদীকে।
শিশুদের ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচাতে হবে
সতীর্থ শিশু শ্রমিক বিরোধী আন্দোলনের সূচনাকারী এবং ভারত এবং বিশ্বব্যাপী শিশু-শ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক আইনের প্রচার চালিয়েছেন। কৈলাশ সতীর্থ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ধরনের অদ্ভুত পরিস্থিতিতে এটি একটি মতাদর্শগত ও মানসিক উভয়সঙ্কট। আমি যেটা অনুভব করি সেটাই বলি। তারা প্রত্যেকে আমাদের শিশু এবং আমাদের শিশুদের এভাবে মরতে দিতে পারি না। আমরা আমাদের শিশুদের শিশু শ্রমিক ও শোষণের হাত থেকে বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি, তাদের অবশ্যই ক্ষুধা ও হতাশার হাত থেকে বাঁচানো উচিত। সবকিছুর চেয়ে ওপর প্রতিটি শিশুর জীবন।'
১২ বছরের শিশু শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকাহত সতীর্থ
এই বিবৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্প্রতি ১২ বছরের এক শিশু শ্রমিক জামলো মকদামের মৃত্যুর কথাও, যা সতীর্থকে গভীরভাবে যন্ত্রণা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মরিয়া এই মেয়েটি, তেলেঙ্গানার লাল লঙ্কার বাগান থেকে, যেখানে সে শিশু শ্রমিকের কাজ করত, ১৫০ কিমি হেঁটে ছত্তিশগড়ে তার বাড়ি ফিরছিল, বাড়ি পৌঁছানোর মাত্র এক ঘণ্টা আগেই ক্ষুধার তাড়নায় মারা গেল।' সতীর্থ বলেছেন, ‘শিশু শ্রমিকদের নিয়োগকর্তাদের তিনমাসের জন্য অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হোক এই বিজ্ঞপ্তিতে, আমার জীবনে ভাবা এটা শেষ বিষয়। অস্বাভাবিক এই পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং আমি দৃঢ় ভাবে অনুভব করি যে দেশজুড়ে দাসত্ব ও শিশুশ্রমের জালে আটকা পড়া লক্ষ লক্ষ শিশুদের জীবন বাঁচাতে এই পদক্ষেপটি এখন একমাত্র বাকি বিকল্প হিসাবে।'
শিশুদের উদ্ধারে বাধা লকডাউন
কৈলাশ সতীর্থ তাঁর লেখা চিঠিতে বলেছেন, ‘এর আগে শিশুদের পুরো শ্রমের টাকা দেয়নি আর এখন তাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে না। লকডাউনের পর নিয়োগকর্তারা সুরক্ষার জন্য নিজের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছেন। আর এই শিশুরা জয়পুর, হায়দরাবাদ, মুম্বই, দিল্লি ও অন্যান্য শহরের কারখানায় কাজ করে, এদের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাচার করে নিয়ে আসা হয়েছে এবং বলপূর্বক শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে। আর এখন আমাদের কর্মীরাও এই লকডাউনের নিয়ম-নীতির ফাঁদে পড়ে সেইসব শিশুদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।'
শিশুদের খাদ্য–সুরক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারকে আবেদন
লকডাউন চলাকালীন মুক্তিপ্রাপ্ত শিশুদের খাবার, সুরক্ষা, আশ্রয় এবং চিকিৎসা করার উপযুক্ত ব্যবস্থা করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন সতীর্থ। যদি দরকার পড়ে তবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এ বিষয়ে সহায়তা করতে পারে। এর পাশাপাশি তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকেও সব ধরনের সম্ভাব্য সহায়তা করা হবে।
করোনা পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের