বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করতে হবে, দিল্লিতে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত কেজরিওয়ালের
বায়ু দূষণের জেরে দিল্লিতে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের
বায়ু দূষণ বর্তমানে সর্বভারতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বায়ু দূষণের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। পর পর দুই দিন দিল্লিতে বায়ু দূষণের পরিমাণ অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের দায়বদ্ধতা রয়েছে আপ সরকারের।
দিল্লিতে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত
বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিল্লির অভিভাবকরা স্কুল বন্ধের জন্য আবেদন করতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও ভগবন্ত মান সাংবাদিক বৈঠ করেন। সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, দিল্লির স্কুলগুলো বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি তিনি দিল্লির রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে জোড়-বিজোড় নীতি চালু করবেন কি না, সেই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন বলে জানিয়েছেন।
উত্তর ভারত জুড়ে বায়ু দূষণ
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, বায়ু দূষণ সমগ্র উত্তর ভারতের একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পঞ্জাবে আপ সরকার মাত্র ছয় মাস সময় পেয়েছে। তারমধ্যেই বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী বছরগুলোতে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আপ সুপ্রিমো আশা প্রকাশ করেছেন। কেজরিওয়াল বলেন, শুধুমাত্র আপ সরকার বায়ুদূষণের জন্য দায়ী নয়। তিনি বলেন, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থানে বায়ু দূষণ গুরতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, বায়ু দূষণ নিয়ে দোষারোপের পালা বন্ধ করা হোক। সারা ভারত বায়ু দূষণ থেকে কীভাবে মুক্তি পাবে, সেই বিষয়ে সমাধান সূত্র বের করা প্রয়োজন।
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে পঞ্জাব সরকার
উত্তর ভারতে বায়ু দূষণে খড় পোড়ানোর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, চলতি বছরে কৃষিজ ফসল রেকর্ড পরিমাণে উৎপাদন হয়েছে। যার জেরে খড় পোড়ানোর হার বেড়েছে। পঞ্জাবে দূষণের পরিমাণ বাড়ার জন্য অনেকটা খড় পোড়ানো দায়ী বলেও তিনি মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তিনি জানান, পঞ্জাবে আগামী বছর থেকে শুধু ধান নয় বৈচিত্র হিসেবে বাজরা, পাপলার শাক সবজির মতো বিকল্প চাষের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কৃষকরা যতক্ষণ পর্যন্ত নূন্যতম সহায়ক মূল্য পাচ্ছে, বিকল্প চাষের দিকে এগোন ঠিক হবে।
বায়ু দূষণে খড় পোড়ানোর ভূমিকা
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দিল্লিতে বায়ু দূষণের জন্য খড় পোড়ানো ৩৪ শতাংশ দায়ী। গত বছরের থেকে চলতি বছরে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অনুসারে, পজ্ঞাবে দূষণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের বছরের তুলনায় চলতি বছর বায়ু দূষণ উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানাতে ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধোঁয়াশা দেখতে পাওয়া যায়। চোখ জ্বালা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো একাধিক সমস্যায় দিল্লির বাসিন্দাদের পড়তে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।