সর্বাধিক বৃষ্টিপাত নভেম্বরে, একশো বছর পর নতুন রেকর্ড গড়তে পারে চেন্নাই, লাল সতর্কতা আইএমডির
একশো বছর পর নতুন রেকর্ড গড়তে পারে চেন্নাই
গোটা নভেম্বর জুড়ে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে সিক্ত নভেম্বরের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে চেন্নাই এবং হয়ত নতুন রেকর্ডও গড়তে পারে। প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের দরুণ দক্ষিণ ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
চেন্নাইতে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ
গত ২৭ নভেম্বর সকালে চেন্নাই শহরে ১০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ মাসে চেন্নাইতে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৯৮ সিএম। আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, ১৯১৮ সালের নভেম্বরে চেন্নইতে ১০৮.৮ সিএম রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আইএমডি ইতিমধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছে যে ২৮ নভেম্বর চেন্নাইয়ের উত্তর উপকূসবর্তী জেলাগুলিতে ও পুদুচেরিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নভেম্বর শেষ হতে আর মাত্র তিনদিন বাকি আর এরই মধ্যে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস। আইএমডি মনে করছে এ বছরের নভেম্বরের বৃষ্টিপাত হয়ত ২০১৫ সালের ১০৫ সিএম বৃষ্টিপাতের রেকর্ডকে ভাঙতে পারে।
চেন্নাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত
নভেম্বরে চেন্নাইয়ে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪০ সিএম। জানা গিয়েছে, ২৬ নভেম্বরের রাতে উত্তর উপকূলের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। কাঞ্চিপুরম জেলার একাধিক এলাকায় ২৭ নভেম্বর সকালে ১০ সিএমের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার জন্য চেম্বারমবাক্কাম জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে তিন হাজার কিউসেক করা হয়েছিল। ২৭ নভেম্বর সকালে অভাদি বোরে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রায় ১৫টি এলাকা সহ মহাবল্লিপুরমে ১৮ সেন্টিমিটার ও কুড্ডালোর জেলার পরাঙ্গিপেট্টাইতে ১৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়াও চেন্নাইয়ের অম্বাত্তুর (১২ সিএম), পেরাম্বুর ও আন্না বিশ্ববিদ্যালয় (১০ সেন্টিমিটার) ও মিনামবক্কমে (৯ সিএম)-এও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার খবর রয়েছে।
লাল সতর্কতা জারি
আইএমডি ২৮ নভেম্বরের জন্য উত্তর উপকূলীয় জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করেছে। ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৯ জেলরও বেশি জায়গায়। এরমধ্যে রয়েছে সালেম, আরিয়ালুর ও নীলগিরি অন্যতম। আইএমডি জানিয়েছে, কমোরিন এলাকা এবং শ্রীলঙ্কা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় সঞ্চালনের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত। চেন্নাইয়ের আবহাওয়া অফিসের শীর্ অধিকর্তা এস. বালাচন্দ্রন বলেছেন, 'ধীর গতির প্রক্রিয়াটি ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত উত্তর উপকূলীয় অঞ্চলকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ২৯ নভেম্বর থেকে বৃষ্টি কমতে পারে কারণ এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এও বলেন, '২৭ নভেম্বর সকালের পর থেকে বৃষ্টির গতি কমে গিয়েছিল এবং রাতভর বর্ষণে বিপর্যস্ত বেশ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত এক বা দুই সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালে দিনের বেলা বৃষ্টিতে এত দীর্ঘ বিরতি সম্ভব। এই ধরনের দুর্বল আবহাওয়া ব্যবস্থার উপর দৈনিক পরিবর্তনের প্রভাব বেশি হতে পারে। গভীর রাত থেকে সকালের মধ্যে বৃষ্টি চলতে পারে, যা উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর বৈশিষ্ট্য।'
তামিলনাড়ুতে ৬০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত
তামিলনাড়ুতে ৬০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত তার মরশুমি বৃষ্টির গড় থেকে ৭৪ শতাংশ বেশি। বালচন্দ্রন এও জানিয়েছেন যে, এই বর্ষার বিশেষত্ব হল কম তীব্র আবহাওয়া ব্যবস্থা নিম্নচাপ এলাকা বা উচ্চ বায়ু সঞ্চালনের কারণে বেশির ভাগ বৃষ্টিপাত হয়। আবহাওয়া ব্লগার প্রদীপ জন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'একটি বিরল বছর যেখানে নভেম্বরে বৃষ্টিপাত ১০০ সিএম অতিক্রম করেছে এবং ১৯১৮ সালের পর এটটা তৃতীয় বার। বছরের যে কোনো মাসে এটি ছিল চতুর্থবারের মতো। ২০০৫ সালের অক্টোবরে, চেন্নাই ১০৭.৮ সেন্টিমিটার রেকর্ড করেছিল।'
প্রতীকী ছবি