চেন্নাই বিস্ফোরণ : এবার মায়ের হাতের রসম খাওয়া আর হল না, বাড়ি ঢুকল স্বাতীর নিথর দেহ
চেন্নাই, ২ মে : চার মাস পরে বাড়িতে গিয়ে মায়ের হাতের রান্না খাবে ভেবেই মুখে আর হাসি ধরছিল না ২৪ বছরের তরুণীর। আর যেন তর সইছে না। বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেনে ওঠার আগে নিজের মোবাইল থেকে তাই বাড়ির নম্বরটা লাগিয়েই ফেলেছিল স্বাতী। মাকে ফোনে বলেও দিয়েছিল খাবারের পাতে কাল তার কী কী চাই। মেয়ের আবদার কী আর ফেলা যায়। পরের দিন মেয়ের আসার কথা থাকলেও সেদিন থেকেই স্বাতীর মনপসন্দ খাবার বানানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন মাও।
এর কিছুক্ষণ পরে আরও একটা ফোন এল পারাচুরি পরিবারে। মূহুর্তের মধ্যে পাল্টে গেল পারাচুরি বাড়ির দৃশ্যটাই। ফোনে ভেসে এল সেই দুঃসংবাদ। ২৪ বছরের স্বাতী পারাচুরির বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে যে জোড়া বিস্ফোরণ হয় তাতেই মৃত্যু হয়েছে স্বাতীর। ২টি বোমার মধ্যে একটি স্বাতীর আসনের ঠিক নিচেই রাখা হয়েছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্বাতীর।
গত বছর নামি সংস্থা টিসিএস সংস্থায় অ্যাসিস্টেন্ট সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেন স্বাতী। দুমাসের মধ্যেই তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এবার বাড়িতে এসে নিজের প্রথম উপার্জিত টাকায় পরিবারের জন্য উপহার কিনবে বলে ঠিক করেছিলেন স্বাতী। হঠাৎ করেই বাড়ি আসার কথা ঠিক করেন স্বাতী। আর সেই কারণেই শেষ মুহূর্তে ব্যাঙ্গালোর-গুয়াহাটি ট্রেনর জন্য তৎকালে তিনি টিকিট কেটেছিলেন বলে ঘণিষ্ঠ সূত্রের খবর। বিজয়ওয়াড়া অবধি ওই ট্রেনে সফর করার কথা ছিল স্বাতীর। সেখান থেকে বাসে চেপে গুন্টুরে বাড়িতে পৌছনোর কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার স্বাতী পৌছলেনও গুন্টুরে। কিন্তু বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকে স্ট্রেচারে করে নামানো হল স্বাতীর নিথর দেহ। স্বাতীর বাবা রামা রাও ও মা কামাক্ষী চেন্নাইয়ে এসেছিলেন মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য।
স্বাতীর ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু জানিয়েছেন, ওই ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল না স্বাতীর। ব্যাঙ্গালোর-গুন্টুরের সরাসরি ট্রেনেরই টিকিট কাটার কথা প্রথমে ভেবেছিল স্বাতী। কিন্তু পরে ব্যাঙ্গালোর-গুয়াহাটি ট্রেনটির টিকিট কাটে সে।
যে অফিসে স্বাতী কাজ করতেন, সেখানে নম্র-সভ্য বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। খুব সহজেই সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলতে পারতেন। ফটোগ্রাফি নিয়ে স্বাতী খুবই উৎসাহী ছিলেন বলেই তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন। নিজের শেষ ফেসবুক আপডেটে স্বাতী লিখেছিলেন, 'হোল্ড অন পেইন এন্ডস'।
বিস্ফোরণ
এই আসনেই বসেছিলেন স্বাতী। বিস্ফোরণের পর ফরেন্সিক দল জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখছে।
স্বাতী...
ট্রেনে ওঠার আগে মাকে ফোন করে বলেছিলেন স্বাতী বাড়ি পৌছে তিনি কী কী খেতে চান। এবার বাড়িতে এসে নিজের প্রথম উপার্জিত টাকায় পরিবারের জন্য উপহার কিনবে বলে ঠিক করেছিলেন স্বাতী।
নিথর দেহ
বৃহস্পতিবার চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে যে জোড়া বিস্ফোরণ হয় তাতেই মৃত্যু হয়েছে স্বাতীর। ২টি বোমার মধ্যে একটি স্বাতীর আসনের ঠিক নিচেই রাখা হয়েছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্বাতীর।
শেষ বিদায়..
বৃহস্পতিবার স্বাতী পৌছলেনও গুন্টুরে। কিন্তু বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকে স্ট্রেচারে করে নামানো হল স্বাতীর নিথর দেহ। স্বাতীর বাবা রামা রাও ও মা কামাক্ষী চেন্নাইয়ে এসেছিলেন মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য।
শোকের ছায়া
চেন্নাইয়ে স্বাতীর বাবা রামা রাও এবং মা কামাক্ষী।
শেষ বিদায়
স্বাতীর ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু জানিয়েছেন, ওই ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল না স্বাতীর। ব্যাঙ্গালোর-গুন্টুরের সরাসরি ট্রেনেরই টিকিট কাটার কথা প্রথমে ভেবেছিল স্বাতী। কিন্তু পরে ব্যাঙ্গালোর-গুয়াহাটি ট্রেনটির টিকিট কাটে সে।