'মাওবাদী' তকমায় ১৭ জন 'নিরীহ' গ্রামবাসীর এনকাউন্টার! ছত্তিশগড়ে নয়া তদন্ত রিপোর্টে চাঞ্চল্য
ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে সরকেগুড়া গ্রাম। সেখানে গত ২০১২ সালের ২৮ জুন আচমকাই গ্রামে ঢুকতে থাকে পুলিশ বাহিনী। আর গ্রামে মুহূর্তে শুরু হয়ে যায় 'এনকাউন্টার'। মৃত্যু হয় বহু জনের। পুলিশ দাবি করে মৃতরা মাওবাদী। সেই ঘটনার ৯ বছর পর একটি বিচারবিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট বলছে, সেদিনের এনকাউন্টারে যাঁদের মৃত্যু হয়েছিল তাঁরা কেউই 'মাওবাদী' নন।
বিচারবিভাগীয় তদন্ত কী বলছে?
বিজাপুরের সকেরগুড়া গ্রামে সেদিন যাঁদের 'মাওবাদী ' তকমা দিয়ে এনকাউন্টারের বন্দুকের সামনে গুলিতে ঝাঁঝরা করা হয়েছিল , তাঁরা কেউই মাওবাদী নন বলে দাবি করেছে সাম্প্রতিক রিপোর্ট। এনকাউন্টার নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এরপর তৎকালীন বিজেপি সরকারের অধীনে তৈরি হয় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন। গত মাসেই সেই কমিটি রিপোর্ট পেশ করে। যাতে বলা হয়েছে, এনকাউন্টারে মৃত ১৭ জনের কেউই মাওবাদী নন।
নিরাপত্তা বাহিনী প্রমাণ দিতে ব্যর্থ
বিচারবিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট যখন বলছে , ২০১২ সালে ২৮ জুনের এনকাউন্টারে মৃতরা কেউই মাওবাদী নন। এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনও রকমের সদুত্তর দিতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী। ওই ১৭ জন গ্রামবাসী যে মাওবাদী ছিলেন, এমন কোনও তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী।
পুলিশি তদন্তে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে!
তদন্ত কমিশনর রিপোর্ট গত মাসে সরকারের কাছে জমা দেন জাস্টিস আগারওয়াল। সেই রিপোর্ট বলছে, ২০১২ সালের এই এনকাউন্টার নিয়ে যে তদন্ত পুলিশ করেছিল, সেখানে তদন্তে অনেক তথ্য কাটাছেঁড়া করা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে পুলিশ দাবি করেছিল, গ্রাম থেকে অনেক বন্দুক ও পেলেট পাওয়া গিয়েছে। যা কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে জাস্টিস আগরওয়ালের নয়া বিচারবিভাগীয় রিপোর্ট।
কড়া শাস্তির নির্দেশ
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া রিপোর্ট অবলম্বনে কড়া শাস্তি দেওয়াা হবে দোষীদের। এই বিষয়ে দোষীদের শাস্তি দিতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে , তা নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবে ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
কেন ঝাড়খণ্ড নির্বাচনের মুখে রিপোর্ট পেশ! উঠছে প্রশ্ন
বিচারবিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারের কাছে জমা পড়েছে গত মাসে। তারপর কেন ঠিক ঝাড়খণ্ড নির্বাচন চালকালীন এই রিপোর্ট প্রকাশ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গেরুয়া শিবির। প্রশ্ন তুলেছে সমাজসেবী সংস্থাগুলিও। প্রসঙ্গত, ছত্তিগশগড়ের মতো ঝাড়খণ্ডও মাওবাদী সমস্যায় জর্জরিত। এদিকে, গোটা ঘটনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এনকাউন্টারে মৃতদের পক্ষের সমর্থকরা। গ্রামবাসীদের পক্ষের সমর্থকদের দাবি, শেষমেশ 'ন্যায় বিচার' পেলেন মৃত ওই ১৭ জন।