মমতার 'অনুপস্থিতি'তে বিরোধী জোট নিয়ে তৎপরতা! দিল্লিতে দৌত্য একদা মোদী ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রীর
লক্ষ্য ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোট। তা নিয়ে দিল্লিতে সারাদিন তৎপরতা চালালেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। গ্রহণযোগ্য বিকল্পের খোঁজে তিনি ফেসিলিটেটর-এর ভূমিকা পালন করতে চান বলে জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু। দেশের সার্থে আর রাজনৈতিক বাধ্য বাধকতার কারণেই তিনি এই চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লিতে জোট বৈঠক
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জানিয়েছেন, বিজেপির বিরোধী রাজনৈতিকদলগুলি একসঙ্গে আসবে। এরমধ্যে কেউ আসবে নির্বাচনের আগে। কেউ আসবে নির্বাচনের পরে। এক্ষেত্রে বিজেপির চাপের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কেউ কেউ ভয়ে এখনই এই জোটে যোগ দিতে ভয় পাচ্ছেন। গণতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতার কারণে তিনি আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে মিলিত হতে পারেন বলেও জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু।
তিনি বলেছেন, বিকল্প জোট গড়তে কাউকে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে হবে। ঠিক যেমনটি করছেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
জোটে সহযোগীর কাজ
কেউ করবেন, তিনি তা অনুসরণ করবেন। একসঙ্গে কাজ করতে চিনি সাহায্য করতে চান বলে জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। ঐক্যমত্য তৈরি হলে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন। তিনি তাঁর মতো করে চেষ্টা করছেন। এই কাজে তিনি ফেসিলিটেটর-এর ভূমিকা পালন করেছেন। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চান না বলেও জানিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, টিডিপি আঞ্চলিক দল। আর রাজ্যে লোকসভার আসন সংখ্যা ২৫। ফলে তার কাজও সীমিত বলে মত প্রকাশ করেছেন তিনি।
চন্দ্রবাবু নাইডু বিজেপির প্রাক্তন সহযোগী। এবছরের শুরুর দিকে রাজ্যকে দেওয়া কেন্দ্রের সাহায্য নিয়ে মতানৈক্যের জেরে এনডিএ ত্যাগ করেছিলেন। শনিবার তিনি দিল্লিতে কথা বলেন, বিএসপি নেত্রী মায়াবতী, জম্মু ও কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রেসিডেন্ট ফারুক আবদুল্লা, প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে।
জোট সরকার প্রসঙ্গে টিডিপি প্রধান বলেন, নেতা যদি ভাল ও কুশলী হন, তাহলে জোট সরকারের অধীনেও উন্নয়নমূলক কাজ চলতে পারে। এর আগে জোট সরকারের অধীনেও উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বলে দাবি করেছেন নাইডু।
বর্তমানে কোনও ঐক্যমত্য না থাকার কারণে কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক ভুল করে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাইডু।
মোদীকে আক্রমণ
চন্দ্রবাবু নাইডুর অভিযোগ, যাঁরাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করছেন, তাঁদেরকেই টার্গেট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজ্যে আয়কর হানার ঘটনা ঘটছে।
প্রতিষ্ঠান ধসে যাওয়ায় গণতন্ত্র বিপন্ন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। চন্দ্রবাবু নাইডু বলেন, তিনি রাফালে এবং সিবিআই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না। ইডি এবং আয়কর বিভাগকে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আগামীদিনে এরা তাঁর ওপরেও হামলা চালাতে পারে বলে কটাক্ষ করেছেন নাইডু।
অন্ধ্রপ্রদেশকে অমর্যাদার অভিযোগ
চন্দ্রবাবু নাইডুর অভিযোগ, টিডিপি এনডিএ ছাড়ার কারণে কেন্দ্র অন্ধ্রপ্রদেশকে অমর্যাদা করছে। অন্ধ্রপ্রদেশ রিঅর্গানাইজেশন আইনের অধীনে যে টাকা রাজ্যকে বরাদ্দ করার কথা ছিল, তা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন নাইডু। এমন কী সম্প্রতি ঘুর্ণীঝড় তিতলির জন্যও কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
চন্দ্রবাবু নাইডুর দাবি, মোদীর উচিত, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশকে নিয়ে বৈঠক ডাকা। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলির মধ্যে সমস্যা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নাইডু।