'প্রেস্টিজ ফাইটে' মোদী-শাহের সামনে সিএএ কাঁটা, পরীক্ষায় পাশ করতে কোন ফর্মুলা প্রয়োগ বিজেপির?
হিংসা মুক্ত, অনুপ্রবেশকারী মুক্ত ও বন্যা মুক্ত অসমের ডাক দিয়েই ব্রহ্মপুত্রের তীরে জয়লাভ করতে চান অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীরা। বিজেপি শিবিরের দাবি, বোড়োল্যান্ডের সাফল্যই অসম নির্বাচনের ট্রেলার। ২০১৬ সালে প্রথমবার অসমে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। সেই ক্ষেত্রে বাংলায় ক্ষমতা দখলের থেকে অসমে ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ের উপর বেশি জোর দিতেই পারেন মোদী-শাহরা। যদিও অসমে এবারে বিজেপির জয়রথ থামবে বলে মনে করার কোনও কারণ নেই।
লাগাতার অসম সফরে বিজেপির হেভিওয়েটরা
চারদিন আগেই অসমে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। তার একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কলকাতা সফরের আগে অসমে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি জেপি নাড্ডাও গিয়েছিলেন অসমে। বাংলা দখলের বিষয়ে যেভাবে বিজেপি ঝাঁপিয়েছে, সেই একই শক্তি নিয়ে অসম ধরে রাখতে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। এরই মাঝে গত ডিসেম্বরে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেলের হাত ধরে বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলে জয় পেয়েছিল বিজেপি।
বিজেপির পাখির চোখ এখন একুশের বিধানসভা নির্বাচনের উপর
বিজেপির পাখির চোখ এখন একুশের বিধানসভা নির্বাচনের উপর। একদিকে যেখানে বাংলায় মতুয়া ভোট, অসমে বাঙালি হিন্দুদের ভোট ব্যাঙ্ককে হাতে রাখার তাগিদ। অপর দিকে সংখ্যালঘু এবং বিরোধীদের সিএএ বিরোধিতা। এই দুইয়ের মাঝেই বাংলা এবং অসমে নির্বাচনে জেতার রূপরেখা তৈরি করছে বিজেপি। একদিকে যেখানে সাধারণ মানুষদের বোঝানোর বিষয় রয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে ধীরে চলা নীতি।
সিএএ লাগুর বিরোধিতায় আগুন জ্বলে অসমে
একদিকে সিএএ এখনও লাগু না হওয়ায় মতুয়ারা ক্ষিপ্ত। আগামীদিনে মতুয়ারা কোন পথে যাবে তা তারাই ঠিক করবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। সিএএ কার্যকর না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ বারংবার উগরে দেন বনগাঁর সাংসদ। তাঁকে শান্ত করতে ময়দানে নামতে হচ্ছে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়দের। অন্যদিকে সিএএ লাগুর বিরোধিতা করে এক বছর আগেই আগুন জ্বলেছিল অসমে।
সিএএ অস্বস্তি কাটাতে সাম্প্রদায়িকতকার কার্ড
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সিএএ অস্বস্তি কাটাতে তাই বিজেপি সাম্প্রদায়িকতা, অনুপ্রবেশকারী তাস খেলছে ভোটের রাজনীতিতে। অসমে এভাবেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি। তা বিজেপির জন্যে আরও সহজ হয়ে গিয়েছে, কারণ খুব সম্ভবত, এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে জোট বাঁধতে চলেছে কংগ্রেস। এআইইউডিএফ সংখ্যালঘুদের দল হিসেবে চিহ্নিত।
অসমে এনআরসি ইস্যুও বড় হয়ে দেখা দেবে
এদিকে অসমে এনআরসি ইস্যুও বড় হয়ে দেখা দেবে। উল্লেখ্য, অসমেই সিএএ নিয়ে প্রথম আগুন লেগেছিল। তবে সেই অসমেই সম্প্রতি বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনস্ট্রেশনের নির্বাচনে ভালো ফল করে বোর্ড গঠন করে বিজেপি। তাই সিএএ নিয়ে এখনই হয়ত অসমে কোনও পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক হবে না বিজেপি। এবং সিএএ, এনআরসি কাঁটা পার করেই ফের অসমের মসনদে বসতে পারে পদ্ম শিবিরই।