আড়িপাতা-কাণ্ড: ১৬ মে-র আগেই তদন্তে বিচারপতি নিয়োগ, মরিয়া কেন্দ্র
অমিত শাহ যখন গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (২০০৩-২০১০) ছিলেন, তখন পুলিশ জনৈকা তরুণীর ওপর নজরদারি চালিয়েছিল। বিরোধীদের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশেই এই নজরদারি চালানো হয়। যদিও অমিত শাহ দাবি করেন, ওই তরুণীর প্রাণ সংশয় হওয়ার আশঙ্কা থাকায় তার পরিবারের অনুরোধেই নজরদারি চালানো হয়েছিল। আড়িপাতা হয়েছিল ফোনে। সংক্ষেপে এটাই আড়িপাতা-কাণ্ড হিসাবে পরিচিত। এর তদন্তে গুজরাত সরকার কমিশন গঠন করলেও সন্তুষ্ট হয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাই তারা এবার একজন কর্মরত বিচারপতিকে এর তদন্তভার দিতে চায়।
এদিন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিবাল বলেন, "১৬ মে-র আগে আড়িপাতা-কাণ্ডের তদন্ত একজন বিচারপতিকে নিয়োগ করা হবে? বিজেপি এত ভয় পাচ্ছে কেন? কেন-ই বা বলছে কোনও বিচারপতির এই তদন্তভার নেওয়া উচিত নয়? ওরা ভয় পাচ্ছে কারণ, নরেন্দ্র মোদী যা করেছেন, তার সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে। একজন তরুণীর ওপর কীভাবে উনি নজরদারি চালিয়েছিলেন, সেটাও তদন্তে জানা যাবে। তদন্ত কমিশন গঠন হবে এবং ওঁর (নরেন্দ্র মোদী) বিরুদ্ধে মামলা রুজু হবে।" কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি মেয়েদের ওপর নজরদারি চালান, তা হলে উনি প্রধানমন্ত্রী হলে এ দেশের নারীদের নিরাপত্তার কী হবে?"
প্রশ্ন উঠেছে, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তো নিছক অভিযোগ উঠেছে এবং তার সারবত্তাও নড়বড়ে। তা হলে তদন্ত শুরুর আগেই কপিল সিবাল কী করে বলছেন যে, নরেন্দ্র মোদী কীভাবে নজরদারি চালিয়েছিলেন সেটা জানা যাবে এবং মামলা রুজু হবে? তা হলে কি আগে থেকেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি ঠিক করে ফেলেছে কংগ্রেস? এটা কি প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়?
বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি তাই বলেছেন, "কে ইউপিএ-র কথায় ওঠাবসা করবে, সেই বিচারপতির নাম জানতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। যদি কেউ নিজের মানসম্মান জলাঞ্জলি দিয়ে এই মরিয়া কাজে অংশ নেয়, তা হলে আমি খুব অবাক হব। ইউপিএ-র এই কাজ রাজনীতিগতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসুস্থ পদক্ষেপ। যখন ভোট চলছে, পক্ষকাল পরেই ফলাফল ঘোষিত হয়ে যাবে, তখন এ ধরনের পদক্ষেপ প্রমাণ করে ওরা কী পরিমাণে হতাশ হয়ে পড়েছে।"
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ১৬ মে-র পর যদি বিজেপি সরকার গঠন করে, তা হলে ইউপিএ সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী ক্যাবিনেট অনায়াসে খারিজ করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কপিল সিবালদের 'স্বপ্ন' খানখান হয়ে যাবে। আবার এমনও হতে পারে, তদন্ত শেষে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই পাওয়া গেল না। তা হলে বিজেপি কংগ্রেসকে আক্রমণ করার পাল্টা সুযোগ পেয়ে যাবে।