সামরিক বাহিনীতে তরুণদের নিয়োগ বাড়াতেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প, বিক্ষোভের মধ্যে বার্তা কেন্দ্রের
সামরিক বাহিনীতে তরুণদের নিয়োগ বাড়াতেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প, বিক্ষোভের মধ্যে বার্তা কেন্দ্রের
কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্রমেই সেই বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে সেনাবাহিনীতে অগ্নিপথের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। জানানো হয়, ঠিক কী কারণে অগ্নিপথ প্রকল্পের সূচনা করা হয়। পাশাপাশি বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী তরুণদের সতর্ক করে কেন্দ্র।
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের একটি কমিটির প্রতিবেদন উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরি বলেন, প্রচুর সংখ্যক সেনার বয়স ৩০-এর কোটায় ছিল। যা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল। তিনি বলেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ো বিক্ষোভ হয়। ট্রেনে বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়।
এত তীব্র বিক্ষোভের পরেও কেন্দ্র অগ্নিপথ প্রকল্প থেকে সরে আসেনি কারণ অগ্নিপথ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত অনেক পরিকল্পনা করেই নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভের জন্য পিছু হটার কোনও প্রশ্ন নেই বলে তিনি মনে করছেন। তবে সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভকারীদের সেনাবাহিনীতে কোনও জায়গা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পুরি বলেন, করোনা মহামারী, লকডাউনের জন্য সরকারকে অগ্নিপথের মতো প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে হচ্ছে। অগ্নিপথ প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য এর থেকে ভালো সময় আর কিছু হতে পারে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সামরিক বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল পুরি বলেন, 'আমরা সেনবাহিনীতে তরুণদের নিয়োগ করতে চাইছিলাম। এই বিষয়ে আমরা অনেক গবেষণা করি। সেনাবাহিনীতে কী করে একসঙ্গে অনেক তরুণকে নিয়োগ করা যায়, তার জন্য একাধিকবার আলোচনায় বসি। বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনী নিয়োগ নিয়ে পড়াশোনা করা হয়।
তরুণদের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা, আবেগ, বিচারবুদ্ধি অনেক বেশি থাকে। দেশের সেনাবাহিনীতে বেশি করে তরুণ নিয়োগ করতে অগ্নিপথ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।' লেফটেন্যান্ট জেনারেল সি বংশী পোনপ্পা বলেন, অগ্নিপথের অধীনে সেনা নিয়োগ আগস্টের প্রথম দিকেই শুরু হবে। অগ্নিবীরদের প্রশিক্ষণ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। সেনাবাহিনীর আধিকারিক বলেন, অগ্নিবীর নিয়োগের জন্য ৮৩টি ক্যাম্প করা হবে। দেশের প্রতিটি গ্রামের কথা মাথায় রেখেই নিয়োগের ক্যাম্পের স্থান নির্ধারণ করা হবে।
২১ নভেম্বর থেকে অগ্নিবীরদের নৌবাহিনীর প্রথমপর্বের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে বায়ুসেনা বিভাগে অগ্নিবীরদের প্রথম প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পুরি সাংবাদিকদের বলেন, কোনও তরুণের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ থাকলে, তিনি অগ্নিবীরের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
অগ্নিপথের বিরুদ্ধে কোনরকম হিংসাত্মক বিক্ষোভে অংশ নেয়নি, এরকমই লিখিত দিতে হবে আবেদনকারীদের
রবিবারও দেশের কয়েকটি জায়গায় অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও বিহারে বিক্ষোভ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। এই বিক্ষোভের মধ্যেই কেন্দ্র সরকার বেশ কয়েকটি ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশবাহিনী ও অসম রাইফেলসে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে।